• মঙ্গলবার , ৭ মে ২০২৪

রিজার্ভ চোর কসাইয়ের ছেলে পাকরাও-বাংলাদেশ ব্যাংক দুষছে আরসিবিসিকে


প্রকাশিত: ৩:০৫ পিএম, ১২ এপ্রিল ১৬ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৮৯ বার

বিশেষ প্রতিনিধি :   এবার বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি ঘটনায় এক কসাইয়ের ছেলে পাকরাও 1হয়েছে।ওদিকে রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় ফিলিপাইনের  ওদিকে রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনকে (আরসিবিসি) জরিমানা করেই চুরি হওয়া অর্থের পুরোটাই পাওয়া যাবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, রিজার্ভ চোর ধরতে যখন দেশ বিদেশের বাঘা বাঘা কর্মকর্তারা হিমশিম খাচ্ছে তখন যশোর গোয়েন্দা পুলিশ পাকরাও করেছে এক বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীকে।
যশোর (বেনাপোল) প্রতিনিধি  জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে সাইদুর রহমান নামে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে আটক করেছে যশোর ডিবি পুলিশ।

আটককৃত সাইদুর বেনাপোল থানার তালাশারি গ্রামের শান্তি কসাইয়ের ছেলে। ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে বলে জানা গেছে।মঙ্গলবার দুপুরে যশোর ডিবি পুলিশ বেনাপোল থেকে তাকে আটক করে।

ওদিকে রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনকে (আরসিবিসি) জরিমানা করেই চুরি হওয়া অর্থের পুরোটাই পাওয়া যাবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য ওই রিজাল ব্যাংককে সরাসরি দায়ী করে ব্যবস্থা নিতে ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আমান্দো তেতাঙ্কোকে অনুরোধ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। এ নিয়ে দুই গভর্নরের সঙ্গে টেলিফোনে কথাও হয়েছে।

রিজাল ব্যাংকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ফিলিপাইনের অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিলকে (এএমএলসি)। পাশাপাশি এ নিয়ে প্রকাশ্যে শুনানি করছে দেশটির সিনেট। শুনানিতে ইতিমধ্যে রিজাল ব্যাংকের সম্পৃক্ততার বিষয়টি উঠে এসেছে। আজ মঙ্গলবার ফিলিপাইনে আবারও শুনানি হয়েছে বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরি নিয়ে।

আরসিবিসি সম্পৃক্ততার বিষয়টি বিবেচনায় এনে ব্যাংকটিকে দায়ী করতে ফিলিপাইনের গভর্নরকে অনুরোধ জানানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা বলেন, ‘আমরা চুরি হয়ে যাওয়া পুরো টাকা ফেরত আনতে পারব বলে আশাবাদী। শুরু থেকেই বিষয়টি অনেক গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে আমরা এগোচ্ছি। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংকও সহায়তা করছে।’

অর্থ চুরির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম এসেছে, তাদের সন্দেহজনক ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ বা জব্দ করার জন্য ১৫১টি দেশকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া, অর্থ উদ্ধারের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বব্যাংকের সহায়তাও চেয়েছে বাংলাদেশ। দাতা সংস্থাটি বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে এই সহায়তা দেবে বলে জানিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ১৬ এপ্রিল চার দিনের জন্য ঢাকায় আসছেন বিশ্বব্যাংকের আর্থিক খাতের জ্যেষ্ঠ বিশেষজ্ঞ কেভিন স্টিফেনসন।

এদিকে অর্থ চুরি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে নতুন একটি তথ্য জানা গেছে। সরকারের বিভিন্ন সংস্থাকে দেওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ১৯২ কোটি ৬০ লাখ ডলার চুরির চেষ্টা হয়েছিল। এর মধ্যে শেষ পর্যন্ত চুরি হয় ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার। এ জন্য ৭০টি ভুয়া লেনদেনের আদেশ দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে একটি আদেশের বিপরীতে শ্রীলঙ্কায় ২ কোটি ডলার এবং চারটির বিপরীতে ৮ কোটি ১০ কোটি ডলার পাঠানো হয়। এর মধ্যে অর্থ হস্তান্তর না হওয়ায় শ্রীলঙ্কা থেকে ২ কোটি ডলার ফেরত পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) বর্তমানে এগমন্ট গ্রুপের সদস্য। ১৫১টি দেশের আর্থিক গোয়েন্দা বা ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (এফআইইউ) আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক এই এগমন্ট গ্রুপ। এই গ্রুপের কাছে সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা পাঠানো হয়েছে। এর পাশাপাশি সতর্কবার্তা পাঠানোর জন্য একই তালিকা সিআইডি ইন্টারপোলকে পাঠিয়েছে।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অতিরিক্ত ডিআইজি শাহ আলম বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও পুলিশের মাধ্যমে—এ দুইভাবে ইন্টারপোলের কাছে তথ্য পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এ মুহূর্তে সিআইডির দুটি দল শ্রীলঙ্কায় ও ফিলিপাইনে কাজ করছে। অন্য দেশগুলো থেকেও তথ্য নিচ্ছি। এ ছাড়া ইন্টারপোলের একটি দলও সার্বক্ষণিক সহায়তা করছে সিআইডিকে। যেহেতু ঘটনার ৪০তম দিনে আমরা কাজটি শুরু করেছি, সেহেতু অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়ে এগোতে হচ্ছে।’