• শনিবার , ৪ মে ২০২৪

ভোট নিয়ে সংশয়ে জাপা


প্রকাশিত: ৬:০৬ পিএম, ২৪ অক্টোবর ২৩ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২০ বার

বিশেষ প্রতিনিধি : দেশে যথাসময়ে নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। মেগা প্রকল্পের নামে বর্তমান সরকারের লুটপাট করে ১৬ কোটি মানুষকে বিপদে ফেলেছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। আর দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত হবার ওপরই নির্ভর করছে তারা ভোটে অংশ নেবেন কিনা।

জাতীয় সংসদে বিরোধী দল হলেও মাঠের রাজনীতিতে অনেকটাই নিরব জাতীয় পার্টি। দলের দুই একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠানেই সীমাবদ্ধ তাদের কর্মসূচি। সোমবার দুপুরে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘উপজেলা ব্যবস্থা প্রবর্তন দিবস’ উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় দলটির মহাসচিব চুন্নু বলেন, জাতীয় পার্টি সরকার পতনের আন্দোলন করে বিএনপিকে ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ দিতে চায় না। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশের ওপরই নির্ভর করবে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে যাবে, কি যাবে না।

অনুষ্ঠানে দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদের অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করেছে। লুটপাট ও দুর্নীতির কারণে আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনেও নাম লিখিয়েছে বাংলাদেশ। ঠিক সময়ে নির্বাচন হবে কি হবে না তা নিয়ে মানুষ উৎকণ্ঠায় আছে বলেও মনে করেন তিনি।

গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জিএম কাদের) বলেন, নির্বাচন সঠিক সময়ে সঠিক পদ্ধতিতে হবে কিনা তা নিয়ে আশঙ্কা আছে। নির্বাচন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে কিনা তা নিয়ে সাধারণ মানুষ চিন্তিত। মানুষের কাছে অগ্রাধিকার হচ্ছে সামনের নির্বাচন। ভবিষ্যতে আমাদের কি হবে এ নিয়ে মানুষ অতঙ্কিত।

তিনি বলেন, কিছুদিন আগে আমেরিকা গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ করেনি। সম্প্রতি জার্মানির এক প্রতিষ্ঠান ১২৯ দেশের মধ্যে জরিপ করে ২০২৩ সালের রিপোর্টে বলেছে, ৪৮ দেশে স্বৈরশাসন চলছে। তারা বলেছে বাংলাদেশ, লেবানন, মোজাম্বিক, নিকারাগুয়া ও উগান্ডায় নতুন করে তা চালু হয়েছে। জাপা চেয়ারম্যান বলেন, দেশে ভোগ বৈষম্য বেড়েছে। প্রান্তিক মানুষ আরও দরিদ্র হচ্ছে। গেলো ৩ মাসে ৪ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান কমেছে। ১ কোটি মানুষ ইউরোপের মতো জীবন যাপন করছে। ফলে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। লুটপাটের জন্য মেগা প্রকল্প তৈরি করা হচ্ছে।

জিএম কাদের বলেন, ১০৮ বিলিয়ন ডলার বিদেশি এবং দেশি ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ ১০৯ বিলিয়ন ডলার ঋণ নেয়া হয়েছে। প্রতিটি মানুষের মাথাপিছু ঋণ ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। প্রবাসী আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি। তাই রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। প্রতি মাসে ১ বিলিয়ন ডলার কমছে।এক লাখ কোটি টাকা প্রতি বছর পাচার হচ্ছে জানিয়ে জাপার শীর্ষ নেতা বলেন, সরকার টাকা ছাপাচ্ছে। এতে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে। সেই সঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্রব্যমূল্য।

দেশের ব্যবসায় সিন্ডিকেট আছে। তারাই দেশ চালাচ্ছে। ওরাই টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িত। মালামালের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বলা হয়, করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধের কথা। সারা বিশ্বে এখন মালামালের দাম কমছে।

জিএম কাদের বলেন, বিশ্ববাজারে গমের দাম কমেছে ৩৫ ভাগ। অথচ আমাদের দেশে আটার দাম বেড়েছে ২৫ ভাগ। বিশ্ব বাজারে পেঁয়াজের দর কমেছে ৬৩ ভাগ। কিন্তু আমাদের দেশে ৯৩ ভাগ বেড়েছে। চিনির মূল্য বৈশ্বিক বাজারে ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে ৩৩ ভাগ। আর আমাদের ঊর্ধ্বগামী হয়েছে ৫৮ ভাগ।

বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার বলছে; ক্ষমতার বাইরে গেলে তাদেরকে পিটিয়ে মারবে বিএনপি-জামায়াত। আমি বলছি, দল দুটিকে লাগবে না। ১৬ কোটি মানুষকে যেখানে নিয়ে গেছেন, তারা একটি করে ঢিল ছুড়লেই আপনারা শেষ হয়ে যাবেন।