• শনিবার , ৪ মে ২০২৪

এমপি বেলালকে অপহরণ-ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধ স্ত্রীর মামলা


প্রকাশিত: ২:২৮ এএম, ২৬ আগস্ট ২৩ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২৮ বার

বিশেষ প্রতিনিধি/নেত্রকোনা প্রতিনিধি : এমপি বেলাল কে ব্লাকমেইল, অপহরণ, উদ্ধার ও মামলা ও তালাক নিয়ে চলছে নানা কাহিনী। ঘটনার জের ধরে নেত্রকোনা-৫ (পূর্বধলা) আসনের সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত হোসেন বেলালকে (৭৫) অপহরণের পর বিয়ে, তাঁর স্বাক্ষর জাল করে ২ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। গত বুধবার রাতে তাঁর স্ত্রী রওশন হোসেন বাদী হয়ে কলেজছাত্রীসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে পূর্বধলা থানায় মামলাটি করেন।

মামলার প্রধান আসামি নাদিয়া আক্তার (২৬) নামের এক কলেজছাত্রী। অন্য আসামিরা হলেন নাদিয়ার ছোট ভাই পূর্বধলা সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তাইফ (২০), পূর্বধলা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোলায়মান হোসেন, সংসদ সদস্যের পিএস ফেরদৌস আলম (৪২), কামারুজ্জামান উজ্জ্বল (৪২), দুই কলেজশিক্ষক নাদেরুজ্জামান স্বপন (৪২), রতন পাল (৩২), ছাত্রলীগ কর্মী শাহ আলীম (৩২) ও সংসদ সদস্যের গাড়িচালক শফিকুল ইসলাম (৪৫)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আসামিরা বিভিন্ন সময় এমপি ওয়ারেসাত হোসেনের কাজকর্ম দেখাশোনা করতেন। সেই সুবাদে তাঁর আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন। তাঁরা নানাভাবে ওয়ারেসাতকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিতে থাকেন।

মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও অফিস-আদালতে তাঁর কাজ দেখভালের মৌখিক দায়িত্ব দেওয়ার পর ফেরদৌস আলম ও কামারুজ্জামান উজ্জ্বল সংসদ সদস্যের নাম ভাঙিয়ে প্রচুর টাকা আত্মসাৎ করেন। অন্য আসামিরা গত ৭ ফেব্রুয়ারি ওয়ারেসাতকে ভুল বুঝিয়ে তাঁর গ্রামের বাড়ি কাজলা থেকে গাড়িতে করে ঢাকায় নিয়ে যান। সেখানে সংসদ সদস্যের নিজের বাসা উত্তরায় না নিয়ে ধানমন্ডি এলাকায় একটি বাসায় তাঁকে আটকে রাখা হয়। পরে গাড়িচালক সংসদ সদস্যের পরিবারকে জানান, ওয়ারেসাত হোসেন বিদেশে চলে গেছেন।

মামলায় বাদী আরও উল্লেখ করেন, তাঁর স্বামী ওয়ারেসাতকে জিম্মি করে স্বাক্ষর জাল করে নাদিয়া আক্তারের সঙ্গে বিয়ের একটি ভুয়া কাবিননামা তৈরি করা হয়। এরপর স্বাক্ষর জাল করে স্ত্রী রওশন হোসেনকে তালাক দেওয়া হয়। তেমন একটি কাগজ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। গত ২৭ মার্চ বিকেলে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করে ঢাকার একটি বাসা থেকে সংসদ সদস্যকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করেন।
পরদিন চিকিৎসার জন্য ওয়ারেসাতকে মালয়েশিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মেয়ের বাসায় রেখে চিকিৎসা শেষে ১১ আগস্ট দেশে আনা হয়। এরপর এ ঘটনায় বুধবার রাতে মামলা করেন ওয়ারেসাতের স্ত্রী রওশন। মামলায় ওয়ারেসাতসহ আটজনকে সাক্ষী করা হয়।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ওয়ারেসাত হোসেন বেলালের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে মামলার প্রধান আসামি নাদিয়া আক্তার বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। অপহরণ, স্বাক্ষর জালের বিষয়টি আমি মামলা হওয়ার পর সাংবাদিকসহ অন্য মানুষের কাছ থেকে জানলাম।

মামলার বিষয়ে অপর আসামি ফেরদৌস আলম বলেন, আমাদের নামে করা মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। একজন সংসদ সদস্যকে অপহরণ করলে দেশজুড়ে আন্দোলন হয়ে যেত। কেন যে এমন ঘটনা সাজিয়ে মামলা করা হলো, তা বুঝতে পারছি না।

বেলালের স্ত্রী জানান, সংসদ সদস্য ও সাক্ষীদের মাধ্যমে জানা যায়, আসামিরা এমপিকে ব্লাকমেইল করে আটক করে সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত ফোনের মাধ্যমে চাকরি দিবে বলে বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে দুই কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। যা তিনি মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন।

ওদিকে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোলাইমান হোসেন হাসিব বলেন, এজাহারে যে সময়টুকু উল্লেখ করা হয়েছে সেই সময়ে তিনি উপজেলার বিভিন্ন প্রোগ্রামে এটেন্ড করেছেন এবং রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। এমপি স্যারের অপহরণ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন মিথ্যা ঘটনা। এমপি স্যারকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করা জন্য ঘৃণ্য এই মিথ্যা মামলাটি করা হয়েছে।

পূর্বধলা থানার ওসি মো. সাইফুল ইসলাম মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মামলা তদন্তাধীন। তদন্তে বেরিয়ে আসবে আসল রহস্য।