• বৃহস্পতিবার , ৯ মে ২০২৪

ইয়াবা বানিজ্যে পুলিশ সিন্ডিকেটে টাকার পাহাড়-রিমান্ডে তথ্য ফাঁস এসবি’র দারোগা মাহফুজের


প্রকাশিত: ৮:৩২ পিএম, ২২ জুন ১৫ , সোমবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৫৪ বার

ASI_MAHFUJ-www.jatirkhantha.com.bdএস আজিজ.ঢাকা: ইয়াবা বানিজ্যে পুলিশ সিন্ডিকেটে টাকার পাহাড়-রিমান্ডে তথ্য ফাঁস এসবি’র দারোগা মাহফুজের । কোটিপতি হওয়ার লোভে সিন্ডিকেট গড়ে তুলে ইয়াবা ব্যবসায় নেমেছেন কতিপয় পুলিশ সদস্য। রোববার ভোররাতে ফেনীর লাপোল এলাকায় ২৭ কোটি টাকা মুল্যের ইয়াবাসহ পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) এএসআই মাহফুজকে গ্রেপ্তারের পর ইয়াবা ব্যবসায় পুলিশি সিন্ডিকেটের সন্ধান পায় র‌্যাব। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার কেন্দ্রিক অন্তত ১২ জন পুলিশ সদস্য এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছেন।

শুধুমাত্র বড় বড় ইয়াবার চালান নির্বিঘেœ পাচার করে সিন্ডিকেটের পুলিশ সদস্যরা প্রতিমাসে এক কোটি টাকা পর্যন্ত আয় করছেন বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার মাহফুজ যেসব পুলিশ কর্মকর্তাদের নাম বলেছেন তাদের বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়া শুরু হয়েছে।

এদিকে এএসআই মাহফুজ ও তার গাড়ি চালক জাবেদকে ফেনী মডেল থানায় সোপর্দ করেছে র‌্যাব। রোববার রাত ১১টায় তাদের ফেনী মডেল থানায় সোপর্দ করা হয়৷ র‌্যাব-৭ ফেনী ক্যাম্পের উপসহকারী পরিচালক মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। গতকাল তাকে ৫ দিরে রিমান্ড আবেদন জানিয়ে আদালতে নেয়া হলে আদালত ৩ দিরে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহিনুজ্জমান বলেন, মাহফুজকে রিমান্ডে হেফাজতে আনা হয়েছে। তাকে এখনো জিজ্ঞাসাবাদের সুযোগ হয়নি। তবে জিজ্ঞাসাবাদে এই সিন্ডিকেট সম্পর্কে আরো তথ্য পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি। মাহফুজকে বরখাস্ত করা হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়।

র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল মিফতাহ উদ্দিন জানান, এই সিন্ডিকেটের একজন প্রভাবশালী সদস্য পুলিশের বিশেষ শাখার এএসআই মাহফুজুর রহমান। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এএসআই মাহফুজুর রহমান জানিয়েছেন, ২০১১ এবং ২০১৩ সালে কক্সবাজার ও টেকনাফ উপজেলায় কর্মরত থাকার সময় থেকেই তিনি ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। টেকনাফ ও কক্সবাজারের ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সখ্যতার সুযোগে কোটি টাকা আয়ের হাতছানিতে ইয়াবা ব্যবসায় নিজেই সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন এএসআই মাহফুজ। নিজেরা পুলিশ সদস্য হওয়ায় তারা ছিলেন সন্দেহের বাইরে এবং তাদের ব্যবসা চলছিল নিরবিচ্ছিন্ন। গত দুই বছরে ইয়াবা ব্যবসার মাধ্যমে পুলিশি সিন্ডিকেটের প্রতিটি সদস্য প্রতিমাসে এক কোটি টাকা পর্যন্ত আয় করতো বলে জানা গেছে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে ইয়াবা ব্যবসায় পুলিশি সিন্ডিকেটের সদস্যদের প্রতিমাসে কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পেয়েছে র‌্যাব।

আটকের পর এএসআই মাহফুজ র‌্যাবকে জানিয়েছেন, গত শনিবার ৬ লাখ ৮০ হাজার পিস ইয়াবা তিনি কক্সবাজারের বাহারছড়ায় সার্কিট হাউজ রোডে ১৫২ নম্বর হাজী আমির ম্যানশনে অবস্থিত পুলিশের এস আই বেলালের বাসা থেকে গাড়িতে তুলেছেন। প্রতিবারই তিনি বেলালের বাসা থেকেই ইয়াবাগুলো সংগ্রহ করতেন। পুলিশ কর্মকর্তার বাসা হওয়ায় তাদের কেউই সন্দেহ করত না। ইয়াবার চালানটি কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এস আই মো. বেলাল এবং কুমিরা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই মো. আশিক তাকে ঢাকায় পৌঁছে দিতে বলেন। ঢাকায় মাহফুজের কাছ থেকে হাইকোর্টের এক আইনজীবীর মুহুরি মো. মোতালেব, অ্যাডভোকেট জাকির, কনস্টেবল শাহীন, কাসেম ও গিয়াসের এগুলো বুঝে নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঢাকা যাওয়ার পথে ফেনীর লালপোল নামক এলাকায় এসে র‌্যাবের হাতে ধরা পড়ে যান এএসআই মাহফুজ।