• শুক্রবার , ১৭ মে ২০২৪

অবৈধভাবে ব্রডব্যান্ড ব্যবসা-গ্রামীন ফোনকে দিতে হবে ৩০ কোটি টাকা!


প্রকাশিত: ২:০৯ পিএম, ৩১ অক্টোবর ১৬ , সোমবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৬৯ বার

 

প্রিয়া রহমান : অবৈধভাবে ব্রডব্যান্ড ব্যবসা করায় গ্রামীন ফোনকে এবার জরিমানা দিতে হবে ৩০ কোটি টাকা! তবে গ্রামীণফোনকে ঠিক কত টাকা জ1রিমানা করা হবে, তা নিয়ে আজ সোমবার বৈঠক চলছে বিটিআরসিতে। বিটিআরসির একজন কর্মকর্তা জাতিরকন্ঠকে জানান, ২০১৪ সালে ‘গো ব্রডব্যান্ড’ সেবা চালুর পর দুই বছরে গ্রামীণফোন ৩০ কোটি টাকা আয় করে। ওই আয়ের পুরো অর্থই তাদের জরিমানা করা করা হতে পারে।

বিটিআরসি জানায়, চুক্তির শর্ত ভেঙে অপটিক্যাল ফাইবারের (তার) মাধ্যমে গ্রাহকদের ‘গো ব্রডব্যান্ড’ ইন্টারনেট সেবা দেওয়ায় দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোনকে জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা- বিটিআরসি।

এ বিষয়ে নোটিসের জবাবে গ্রামীণফোন যে ব‌্যাখ‌্যা দিয়েছে, তা ‘সন্তোষজনক না হওয়ায়’ বুধবার বিটিআরসির বৈঠকে জরিমানার এই সিদ্ধান্ত হয়।বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, গ্রামীণফোনের কাজটি আইন বিরুদ্ধ ছিল। এর জন‌্য তাদের অবশ‌্যই শাস্তি পেতে হবে।

বিটিআরসি সচিব সরওয়ার আলম বলেন, জরিমানার বিষয়টি জানিয়ে গ্রামীণফোনকে শিগগিরই চিঠি দেওয়া হবে। সেখানে সময় বেঁধে দেওয়া হবে। গ্রামীণফোনের এক্সটার্নাল কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান সৈয়দ তালাত কামাল বলেন, বিটিআরসি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রামীণফোনকে কিছু জানায়নি।তবে গ্রামীণফোন ‘যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়েই’ এ সেবা দিয়ে আসছে বলে তালাত কামালের দাবি।

‘গো ব্রডব্যান্ড’ সেবায় গ্রামীণ ফোনের সঙ্গে থাকা ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান (আইএসপি) অগ্নি ও এডিএনকেও জরিমানার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে বিটিআরসি কর্মকর্তারা জানান। আইন অনুযায়ী কোনো মোবাইল ফোন অপারেটর অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে সরাসরি সর্বশেষ পর্যায়ের গ্রাহককে (লাস্ট মাইল কানেকটিভিটি) সেবা দিতে পারে না। আইএসপিগুলো এই সেবা দিতে পারে।

আর টুজি ও থ্রিজি লাইসেন্স নীতিমালা অনুযায়ী, মোবাইল অপারেটরগুলো কেবল মোবাইল ডিভাইস এবং মডেমের মাধ‌্যমে ইন্টারনেট সেবা দিতে পারে।কিন্তু গ্রামীণ ফোন ‘গো ব্রডব্যান্ড’ সেবার নামে সোনালী ব্যাংককে সরাসরি ব্রডব‌্যান্ড ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছে অভিযোগ করে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিটিআরসির কাছে লিখিত অভিযোগ করে।

এরপর মার্চের শেষদিকে গ্রামীণফোনকে কারণ দর্শাও নোটিস দেয় বিটিআরসি। টেলিযোগাযোগ আইন ভঙ্গ করে কেন সোনালী ব্যাংককে ‘গো ব্রডব্যান্ড’ সেবা দেওয়া হয়েছে, চিঠিতে তা জানতে চাওয়া হয়।
বিটিআরসির একজন কর্মকর্তা জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর তারা দুই দফা গ্রামীণফোনকে চিঠি দিয়েছিলেন। তাতে সন্তোষজনক উত্তর না পাওয়ায় কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়।

সোনালী ব্যাংকের ৫৫১টি শাখায় অনলাইন নেটওয়ার্ক পরিচালনার জন‌্য গো ব্রডব্যান্ড সেবা দিতে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে চুক্তি করে গ্রামীণফোন।এর আগে ২০১২ সালের জুন মাসে অগ্নি ও এডিএনের সঙ্গে যৌথভাবে গো ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবার অনুমতি পায় এই মোবাইল অপারেটর।

বিটিআরসির অনুমতির শর্ত ছিল, কেবল এডিএন ও অগ্নির সঙ্গে মিলে গ্রামীণফোন তাদের গ্রাহক সেবাকেন্দ্র ব্যবহার করে ‘ইনফ্রাস্ট্রাকচার শেয়ারিং’ নীতিমালা অনুযায়ী এই ইন্টারনেট সেবা দেওয়া যাবে। কিন্তু গ্রামীণফোন তা না মেনে ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্কের মাধ‌্যমে সোনালী ব্যাংকে ট্রান্সমিশন সংযোগ দিয়ে নিয়ম ভেঙেছে বলে বিটিআরসির ভাষ‌্য।

বিটিআরসি কর্মকর্তারা জানান, মোবাইল অপারেটর হয়েও ‘ওয়্যার কানেকটিভিটি’ দিয়ে, ‘অনুমতি ছাড়া’ অবকাঠামো ভাড়া দিয়ে এবং ‘অনুমোদন না নিয়ে’ সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করেও গ্রামীণফোন নিয়ম ভেঙেছে।