রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করলে মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই পাবেন কামারুজ্জামান
স্টাফ রিপোর্টার.ঢাকা: জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যরা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে গেছেন। আজ সোমবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে তাঁরা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করেন।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, স্ত্রী নুরুন নাহারসহ পরিবারের সদস্যরা কামারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করতে একটি মাইক্রোবাসে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে কারাগারের সামনে পৌঁছান। এর ১৫ মিনিট পরে সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে তাঁদের বহনকারী মাইক্রোবাসটি কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করে।
এর আগে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার ফরমান আলী বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সাংবাদিকদের জানান, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখা সংক্রান্ত রায়ের কপি তাদের কাছে পৌঁছায়নি।
আজ সকালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন। সকাল নয়টা পাঁচ মিনিটে এজলাসে আসেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ আপিল বিভাগের চার বিচারপতি।
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চে গতকাল রোববার কামারুজ্জামানের পুনর্বিবেচনার আবেদনের শুনানি হয়। এই বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী।
আদেশের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, এখন মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই পেতে হলে তাঁকে একমাত্র রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করতে হবে। রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করলে তবেই মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই পাবেন তিনি।
মিরপুর ১১ এর কালশির চার নম্বর রোডের ১০৫ নম্বর বাড়িটি কামারুজ্জামানের। ছয়তলা বাড়িটির দোতলা ও তিন তলায় পরিবার নিয়ে থাকতেন তিনি।আজ সোমবার সকালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কামারুজ্জামানের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন। রায় ঘোষণার পর বিকেলে কামারুজ্জামানের বাসায় গিয়ে দেখা যায় বাসার আশপাশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক। আশপাশে কোথাও জামাতের নেতা-কর্মীদের কোনো অবস্থান নেই।
পরিবারের সদস্যরা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে দেখা করতে যাওয়ায় বাসায় কাউকে দেখা যায়নি।একাত্তরে সোহাগপুর গ্রামে নির্বিচার হত্যাযজ্ঞের দায়ে ২০১৩ সালের ৯ মে কামারুজ্জামানকে ফাঁসির আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-২। এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে আসামিপক্ষ।
গত বছরের ৩ নভেম্বর আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে ফাঁসির ওই আদেশ বহাল রাখেন। এরপর গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। পরদিন ট্রাইব্যুনাল-২ মৃত্যু পরোয়ানায় সই করে কারাগারে পাঠালে সেখানে বন্দী কামারুজ্জামানকে তা পড়ে শোনানো হয়। পরে ৫ মার্চ ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করে আসামিপক্ষ। আজ সেই আবেদন খারিজ করেন আপিল বিভাগ।