• বৃহস্পতিবার , ৭ নভেম্বর ২০২৪

অর্ধ শত কোটি টাকার ঘুষের ফান্ড।। মহাতদবিরে ওমরা হজ পাচারকারী সিন্ডিকেট ।।পালানোর চেষ্ঠা


প্রকাশিত: ৫:২৪ পিএম, ২৮ আগস্ট ১৫ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৬৯ বার

Manobpacher Saudi Complain-www.jatirkhantha.com.bdএস রহমান:  মোটা অংকের টাকা ঘুষ দিয়ে পার পাবার চেষ্ঠা করছে মানবপাচারকারী ওমরা হজ এজেন্সিগুলো। এনিয়ে অর্ধ শত কোটি টাকার ক্রাইসিস ফান্ড গঠন করে মাঠে নেমেছে মানবপাচারকারী অভিযুক্ত ওমরা হজ এজেন্সিগুলো।এদিকে মানবপাচারের সাজা থেকে বাঁচতে অভিযুক্ত ওমরা হজ এজেন্সিগুলো দেশ থেকে পালিয়ে যাবারও চেষ্ঠা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

গোয়েন্দা সূত্র গুলোর মতে, অভিযুক্ত হজ এজেন্সিগুলোর প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা যাাতে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য তারা বিমান নৌ ও স্থল বন্দরে আগাম সতর্কতা জারি করেছে।এদিকে এবার ওমরাহ ভিসায় সৌদি আরবে মানব পাচারের অভিযোগ ওঠা ওমরা এজেন্সিগুলোর বিষয়ে উন্মুক্ত তদন্ত হবে বলে জাতিরকন্ঠকে জানিয়েছেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব  চৌধুরী মো. বাবুল হাসান।

মন্ত্রণালয় হজ শাখা সূত্র জানায়, তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হওয়া এজেন্সিগুলোকে কালো তালিকাভুক্ত ও এগুলোর লাইসেন্স বাতিল করা হবে।এ অভিযোগ তদন্তের জন্য ইতিমধ্যে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।সৌদি আরব অভিযোগ করেছে ১০৪টি এজেন্সির বিরুদ্ধেhab। তাদের দেয়া তথ্য উপাত্ত অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হয়েছে আগামী ১ ও ৩ সেপ্টেম্বর বায়তুল মোকাররম মসজিদের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে এসব এজেন্সির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করা হবে। তদন্তে অভিযুক্ত সব এজেন্সির প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়ে গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার চিঠি দেয়া হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, এবারের ওমরাহ হজ মৌসুমে ওমরাহ ভিসা নিয়ে সৌদি আরবে যাওয়া বাংলাদেশিদের মধ্যে ১১ হাজার ৪৮৫ জন ওই ভিসার মেয়াদ শেষে দেশে ফেরেননি। ওমরাহ ভিসায় গিয়ে ফিরে না আসার সংখ্যা এটিই এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
বিষয়টি সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ চিঠি দিয়ে বাংলাদেশকে জানিয়েছে এবং যেসব এজেন্সির মাধ্যমে এ মানব পাচার হয়েছে, সেগুলোর তালিকাও পাঠিয়েছে। এ কারণেManobpacher agency name1 .www.jatirkhantha.com.bd গত ২২ মার্চ থেকে সৌদি আরব বাংলাদেশিদের ওমরাহ ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

সৌদি কর্তৃপক্ষ বলেছে, ওমরাহ ভিসায় গিয়ে সে দেশে থেকে যাওয়া বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে না নিলে এবং অভিযুক্ত এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে বাংলাদেশিদের ওমরাহ ভিসা দেওয়া পুনরায় চালু করা হবে না।এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই তালিকা অনুযায়ী এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে মন্ত্রণালয়।সূত্র মতে, অভিযুক্ত এজেন্সিগুলোর কয়েকটির বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে শুনানিও হয়েছে। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা অভিযুক্তদের বাঁচিয়ে দেয়ার পাঁয়তারা করে।এনিয়ে মোটা অংকের লেনদেন হয়।

মন্ত্রণালয়ের একজন উর্ধ্বতণ কর্মকর্তার ভাই’ও অবৈধ লেনদেনে জড়িত।বিষয়টি ওপেনসিক্রেট হলেও ওই ভাইয়ের বিরুদ্ধে কেউ ব্যবস্থা নেয়ার সাহস পাননি। এ অবস্থায় মন্ত্রণালয় কারো বিরুদ্ধে  কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে পুরো বিষয়টি চেপে যায়। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের চাপে তদন্ত কমিটি আবার নড়েচড়ে বসে এবং করে উন্মুক্ত তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়।

Manobpacher list-2-www.jatirkhantha.com.bdএজেন্সিগুলোতে পাঠানো মন্ত্রণালয়ের হজ শাখার ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, তদন্তের সময় ওমরাহ এজেন্সির প্যাকেজ, ওমরাহ যাত্রীদের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তিপত্র ও অন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, অভিযুক্ত এজেন্সির বক্তব্যের সমর্থনে কাগজপত্র আনতে হবে। এ ছাড়া যেকোনো তথ্য-প্রমাণের জন্য ‘ইউজার নেম’ ও ‘পাসওয়ার্ড’ আনতে হবে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জানায়, সৌদি আরব থেকে প্রথমে এমন অভিযোগ থাকা ৫৯টি এবং সর্বশেষ ১০৪টি হজ এজেন্সির নাম পাঠানো হয়েছে। এদিকে ওমরার নামে মানবপাচারকারী হজ এজেন্সিগুলোর লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।কমিটির এক বৈঠকে  অভিযোগ ওঠা এজেন্সিগুলোর লাইসেন্স বাতিল করে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থার সুপারিশ করা হয়েছে।

ওদিকে সৌদি আরবের জেদ্দায় অবস্থিত বাংলাদেশ হজ অফিস থেকে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের যেসব এজেন্সি মানব পাচার করেছে, সেসব এজেন্সির বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা না নিলে আগামী ওমরাহ মৌসুমেও ওমরাহ পালনে আগ্রহী বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হবে না। ওমরাহ ভিসায় পাচার করা ব্যক্তিদের ফেরত আনার দায়িত্ব বাংলাদেশের অভিযুক্ত হজ এজেন্সিগুলোর। এসব এজেন্সির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং তারা যাঁদের পাচার করেছে, তাঁদের ফিরিয়ে আনতে চাপ প্রয়োগের জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

Manobpacher list-3-www.jatirkhantha.com.bdএ প্রসঙ্গে ধর্মসচিব চৌধুরী মো. বাবুল হাসান জাতিরকন্ঠকে জানান, পবিত্র ওমরাহ হজ পালন করতে যেতে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কোনো অনুমতি নিতে হয় না। এ বিষয়টি সরাসরি ওমরাহ এজেন্সি ও সৌদি দূতাবাসের সঙ্গে সম্পর্কিত। পুলিশ ভেরিফিকেশনও লাগে না। এ কারণে কেউ কেউ এ সুযোগ নেয়।

সূত্র জানায়, সৌদি আরবে কর্মরত হজ এজেন্সিগুলোর বোর্ডের চেয়ারম্যান ধর্ম মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে বলেছেন, শর্ত রয়েছে, ওমরাহ ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ওমরাহ পালনকারীদের ফেরত যেতে হবে। এজেন্সিগুলো শর্ত মেনেই লোক পাঠায়।

কিন্তু কিছু এজেন্সি এ শর্ত ভঙ্গ করে অনেক টাকা নিয়ে সৌদি আরবে অবৈধভাবে থাকার জন্য ভিসা বিক্রি করেছে। এ কারণে সৌদি কর্তৃপক্ষ কয়েকটি এজেন্সির কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। এতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হয়েছে।অভিযোগ রয়েছে, যেসব এজেন্সির কারণে এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে, সেগুলোর সঙ্গে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) নির্বাহী কমিটির কিছু সদস্যের যোগসাজশ রয়েছে।

এ বিষয়ে হাবের সভাপতি মোহাম্মদ ইব্রাহিম বাহার বলেন, ‘যেসব এজেন্সির কারণে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, তাদের তালিকা বের করে সদস্যপদ বাতিলসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা ধর্ম মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলেছি। আশা করি, দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।’