• সোমবার , ২৯ এপ্রিল ২০২৪

৬৪ কোটি টাকার শেয়ার লুটপাট


প্রকাশিত: ৯:০৩ পিএম, ৩ সেপ্টেম্বর ১৮ , সোমবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩৮০ বার

 

বিশেষ প্রতিনিধি : পুঁজিবাজার কেলেঙ্কারিতে সাড়ে ৬৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) পাঁচ কর্মকর্তাসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে ১২টি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।ঢাকার রমনা মডেল থানায় দুদকের সহকারী পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে মামলাগুলো করেন বলে সোমবার দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন।

তিনি জাতিরকন্ঠকে বলেন, “এই ১২ মামলায় মোট আসামি ১৫ জন। প্রতিটি মামলায় আসামি হয়েছেন আইসিবির পাঁচ কর্মকর্তা।” প্রতিটি মামলার আসামিরা হলেন আইসিবির সাবেক উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) টিপু সুলতান ফারাজি, তিন সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মো. এহিয়া মণ্ডল, মো. সামছুল আলম আকন্দ ও শরিকুল আনাম এবং সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার ধনঞ্জয় কুমার মজুমদার।

অন্য আসামিরা হলেন- আইএফআইসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মো. আব্দুস সামাদ ও তার স্ত্রী নাসিমা আক্তার; তেজগাঁও স্টাফ কোয়ার্টারের এ কে এম রেজাউল হক ও তার স্ত্রী পাপিয়া সুলতানা; মোহাম্মদপুর খিলজী রোডের লাইলা নুর; তেজগাঁও মনিপুরিপাড়ার এ কে এম আতিকুজ্জামান; গ্রিন রোডের কাজী মাহমুদুল হাসান; গুলশানের শেখ মেজবাহ উদ্দিন ও তার মেয়ে শিমা আক্তার এবং শ্যামলীবাগের বুলবুল আক্তার।

মামলাগুলোর এজাহারে বলা হয়, ২০০৮ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে পুঁজিবাজারে উল্লম্ফনের সময় কারসাজির ঘটনাগুলো ঘটে। আইসিবির সহযোগী প্রতিষ্ঠান আইসিবি সিকিউরিটিজ ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেডের (আইএসটিসিএল) কিছু কর্মকর্তা গ্রাহককে অনিয়মের মাধ্যমে লেনদেনের সুযোগ করে দিয়ে এই অর্থ আত্মসাৎ করেন।দুদক সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গত বছরের শেষ দিকে এ সংক্রান্ত অনুসন্ধান শুরু করে বলে জানান প্রনব।

তিনি বলেন, দীর্ঘ অনুসন্ধানে আইসিবির বেশ কিছু কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ৬৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকা আত্মসাতের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ মিলেছে।এজাহারে বলা হয়, বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাবের মালিকদের মার্জিন ঋণের সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করে শেয়ার কেনার পাশাপাশি ক্ষমতার অপব্যবহার করে ডেবিট স্থিতির ওপর টাকা তুলে নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়।

এজাহারে আরও বলা হয়, ২০০৯ সালের শেষের দিকে শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকলে অতি মুনাফার লোভে গ্রাহক ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় নেগেটিভ পারচেজ থাকা সত্ত্বেও বিও হিসাবধারী তার অ্যাকাউন্টের সীমার বাইরে অনিয়ম ঘটিয়ে সরকারি অর্থে অস্বাভাবিক ঋণ নিয়ে শেয়ার কেনেন। পরে শেয়ারের দর পড়ে যাওয়ায় সরকারের বড় অঙ্কের আর্থিক ক্ষতি হয়।

বিও হিসাব এবং আইসিবি তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করার কথা বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়, বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্ট হিসাবে মার্জিন ঋণের সীমা অতিক্রম করে সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগ হিসাবধারীকে আইএসটিসিএলের কর্মকর্তারা সুবিধা দিয়েছেন। এসব কর্মকর্তারা প্রতিদিন লেনদেন শেষে গ্রাহক হিসাবের শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় আদেশ অনুযায়ী যথাযথ আছে কি না, তা নিশ্চিত না করে জেনেশুনে অসৎ উদ্দেশ্যে নিজেরা লাভবান হয়ে অনৈতিক সুবিধা দিয়েছেন।

এর আগে গত ৩০ অগাস্ট ২০০৯, ২০১০ ও ২০১১ সালের পুঁজিবাজার কেলেঙ্কারির ঘটনায় ৩ কোটি ৭ লাখ ৫৮ হাজার ৯০৭ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আইসিবির সাবেক উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) টিপু সুলতান ফারাজি, সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. এহিয়া মণ্ডল, মোহাম্মদ সামছুল আলম, সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার ধনঞ্জয় কুমার মজুমদার, আইএফআইসি ব্যাংকের পল্লবী শাখার ব্যবস্থাপক মো. আবদুস সামাদ ও ব্যবসায়ী মো. শরিকুল আনামসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।ওই মামলা করার দিনই টিপু সুলতান, এহিয়া মণ্ডল ও সামাদকে গ্রেপ্তার করে দুদক। তারা এখন কারাগারে রয়েছেন।