• রোববার , ২৮ এপ্রিল ২০২৪

ভোটের মাঠে নেতারা-প্রতীক পেয়েই গণসংযোগ


প্রকাশিত: ১১:৫৭ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর ২৩ , সোমবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২১ বার


বিশেষ প্রতিনিধি : প্রতীক বরাদ্দের পর দেশজুড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারে নেমে পড়েছেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীরা। রাজধানীর পাশপাশি জেলা-উপজেলাতে গণসংযোগের পাশাপাশি শুরু হয়েছে ব্যানার-পোস্টার টাঙ্গানোর পালা। এরিমধ্যে বিভিন্ন জনপদে দেখা মিলছে নানা ধরনের নির্বাচনী প্রচারের পোস্টার।

সোমবার বিকেলে, কর্মী সমর্থকদের নিয়ে প্রচার চালান ঢাকা-১৭ আসনের প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাত ও ঢাকা-১০ আসনের প্রার্থী চিত্রনায়ক ফেরদৌস। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে নৌকায় ভোট চান তারা। তবে ভোটারদের কেন্দ্রে আনাটাই মূল চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন প্রার্থীরা।

তফসিল অনুযায়ী দুপুরে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ শেষ হবার পর, বিকেল থেকে শুরু হয় ভোটের আনুষ্ঠানিক প্রচার। ঢাকা-১৭ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাত কড়াইলের এরশাদ নগর থেকে প্রচার শুরু করেন। জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে জিতে এই আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আরাফাত।

প্রচারে নেমে মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচন, গণতন্ত্র ও ভোটের পক্ষে। কোনো চক্রান্তকারী যেন নির্বাচনী পরিবেশ বিনষ্ট করতে না পারে, সেজন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। তারা যত ভোটের বিপক্ষে থাকবে, আমরা ততটাই ভোট বিপ্লব ঘটাব।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করতে হবে আমাদের নিজেদের প্রয়োজনে। একটি প্রগতিশীল, স্মার্ট ও আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করে শেখ হাসিনাকে পুনরায় ক্ষমতায় আনতে হবে। আবারও স্বাধীনতার মার্কা নৌকা মার্কায় ভোট দিতে হবে।

তবে, প্রথম দিনেই আচরণ বিধি লংঘনের কিছু ঘটনাও ঘটেছে। শোডাউন, যানবাহন ব্যবহার করে মিছিল ও রাস্তা বন্ধ করে প্রচার নিষিদ্ধ হলেও, কড়াইলের নির্বাচনী প্রচারে সেসবের ব্যত্যয় হয়েছে। আর, প্রতীক নিয়ে প্রথমদিনই প্রচারের মাঠে ব্যস্ত সময় পার করেছেন ঢাকা-১০ আসনে নৌকার প্রার্থী চিত্রনায়ক ফেরদৌস।

রাজনীতির মাঠে নতুন মুখ ফেরদৌস বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তিনি আমার মাধ্যমে দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের সবাইকে সম্মানিত করেছেন। এই ভালোবাসার প্রতিদান আমি দুই গুণ, তিন গুণ বাড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ফেরত দিতে চাই। আর এটি একমাত্র সম্ভব নৌকার বিরাট জয়ের মাধ্যমে।

রাজধানীর অন্যান্য আসনেও ভোটের প্রচারে নেমেছেন প্রার্থীরা। অন্যদিকে, প্রতীক বরাদ্দ পেয়েই দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রচারে নেমেছেন প্রার্থীরা। এরই মধ্যে শ্লোগানে মুখর হয়ে উঠেছে জেলা শহরগুলো। যদিও বেশিরভাগ এলাকায় প্রচার না করার পরামর্শ দিয়েছিলেন রিটার্নিং কর্মকর্তরা।

প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পরই ময়মনসিংহ-৪ সদর আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহিত-উর রহমান শান্ত ও তার দলীয় নেতা কর্মীরা প্রচারে নামেন। নগরীর শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন উদ্যানের কাছে পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদে বের করেন নৌ-শোভাযাত্রা।

গাজীপুর-১, ২ ও ৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম রাসেল, বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলিম উদ্দিন ও আখতারউজ্জামান এক সাথে শোডাউন করেছেন রাজবাড়ী মাঠে। তারা সবাই পেয়েছেন ট্রাক প্রতীক। সমাবেশে গাজীপুরের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এই তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে ভোট চান।

সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পররাষ্টমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের পক্ষে প্রতীক নেন তার স্ত্রী। একই আসনে সম্মিলিত মুক্তিজোটের প্রার্থী আব্দুল বাসিত পেয়েছেন ছড়ি, এনপিপির প্রার্থী ইউসুফ আহমদ পেয়েছেন আম। সব মিলিয়ে সিলেটের ছয় আসনে ৩৩ প্রার্থীকে প্রতীক দেয়া হয়।

দুপুরে প্রতীক পাওয়ার পর শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা থেকে প্রচারে নামেন মৌলভীবাজার-৩ আসনের আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের নতুন মুখ জিল্লুর রহমান। অন্যদিকে, প্রতীক পাওয়ার পর প্রার্থী সমর্থকদের শ্লোগানে মুখর হয় রিটানিং কর্মকর্তার কার্যালয়।

রংপুর-১ ও ৩ আসন ছাড়া বাকী ৪টি আসনে নৌকা প্রতীক বরাদ্দ হয়। সদর-৩ আসনের তৃতীয় লিঙ্গের স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ারা ইসলাম রানীর শোডাউন সবার দৃষ্টি কাড়ে। প্রতীক পেয়ে মাগুরা-১ আসনের নৌকার প্রার্থী ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে যান।

দুপুরে মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যান তিনি। সেখানে বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর সেখানে বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টে নিহত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া-মোনাজাত করেন।

এরপর বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিনের বাসায় যান সাকিব। সেখান থেকে বেলা তিনটার দিকে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মাগুরার উদ্দেশে রওনা হন তিনি। সাকিব জানিয়েছেন, নির্বাচনে কেন্দ্রে বেশিসংখ্যক ভোটার উপস্থিত করাকেই মূল চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন তিনি।

৭ জানুয়ারি ভোটের আগে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত চলবে এই প্রচার পর্ব। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাইবেন প্রার্থীরা। নির্বাচনি সভা-সমাবেশ-মিছিলে সরগরম হয়ে উঠবে দেশ। এবার দলীয় ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে মোট প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী আছেন ১ হাজার ৮৯৬ জন।
তাদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন প্রায় সাড়ে তিনশ জন, বাকিরা দলীয় প্রার্থী। নিবন্ধিত ৪৪ দলের মধ্যে ভোটে আছে ২৮টি। অন্যদিকে বিএনপিসহ ১৫টি দল ভোট বর্জন করেছে।