• শনিবার , ২৭ এপ্রিল ২০২৪

ফিনিক্স ফাইন্যান্সে লুটপাট-এমডি ইন্তেখাব বরখাস্ত


প্রকাশিত: ১১:৩৬ পিএম, ২৮ ডিসেম্বর ২৩ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৯ বার

ঋণ জালিয়াতি করে প্রতিষ্ঠানটির বারোটা বাজিয়ে দিয়েছিল এর এমডি। সঞ্চিতি ঘাটতি ছিল ২১ কোটি। আর খেলাপি ছিল ৯৬৭ কোটি।

 

 

লাবণ্য চৌধুরী : এবার লুটপাটে ধরা ফিনিক্স ফাইন্যান্স। ঋণ জালিয়াতি করে প্রতিষ্ঠানটির বারোটা বাজিয়ে দিয়েছিল এর এমডি। সঞ্চিতি ঘাটতি ছিল ২১ কোটি। আর খেলাপি ছিল ৯৬৭ কোটি। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা না মেনে চালিয়ে যাচ্ছিল অবৈধ কর্মকান্ড।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বড় ধরনের ঋণ জালিয়াতি করে বহাল তবিয়তে ছিল এর এমডি ইন্তেখাব আলম। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ঋণ অনিয়ম ও আমানতকারীদের স্বার্থ বিরোধী কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় ফিনিক্স ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদ থেকে ইন্তেখাব আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৃহষ্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদকে একটি চিঠি দেয়।

চিঠিতে বলা হয়, ঋণ অনিয়মে সঙ্গে ইন্তেখাব আলমের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এটা আমানতকারীদের স্বার্থে বিরূপ প্রভাপ ফেলছে। তাই ইন্তেখাব আলমকে প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীর পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তাকে বরখাস্ত করার পর প্রতিষ্ঠানটির মানব সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়। ২০০৮ সাল থেকে টানা ১৬ বছর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইন্তেখাব আলম দায়িত্ব পালন করে এসেছিলেন।

প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনার করতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিধান অনুযায়ী নতুন একজন প্রধান নির্বাহী নিয়োগ করতে বলা হয়।জানা যায়, সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি এন্ড কাস্টোমার সার্ভিসেস ডিপার্টমেন্ট (এফআইসিএসডি) হতে ফিনিক্স ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ওপর বিশেষ পরিদর্শন চালানো হয়। পরিদর্শনে ইন্তেখাব আলমসহ বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের দ্বারা সংঘটিত নানা অনিয়মের তথ্য বেরিয়ে আসে। ঋণ অনিয়ম ও আমানতকারীদের অর্থ ফেরত না দেয়ার মতোও ঘটনা ঘটে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটির গত মার্চ শেষে ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৯৬৭ কোটি টাকা খেলাপি হয়ে পড়েছে, যা মোট ঋণের ৩৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ। একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্ঝিত ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২১ কোটি টাকার বেশি।

জানা যায়, ২০২০ সালের পর প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যেতে শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটি থেকে নামে-বেনামে ঋণ বের করে নেওয়ায় তা আর ফেরত আসছে না। গত দুই বছর টানা লোকসানে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, আর্থিক খাতের যত অনিয়ম কেন্দ্রীয় ব্যাংক পেয়েছে, তার বেশির ভাগের ক্ষেত্রে আইন লঙ্ঘন করে জামানতবিহীন কিংবা ভুয়া জামানতের বিপরীতে ঋণ দেওয়ার তথ্য মিলেছে। অনেক ক্ষেত্রে জামানত নিলেও তা অতি মূল্যায়ন করা হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভুয়া গ্যারান্টির বিপরীতে ঋণ দেওয়া হয়েছে। এসব কারণে ঋণ আদায়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না অনেক প্রতিষ্ঠান। এ তালিকার প্রথম দিকেই আছে ফিনিক্স ফাইন্যান্স।
প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি হওয়ায় সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বিশদ পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই পরিদর্শনেই এসব অনিয়মে এমডির সম্পৃক্ততা পায় বাংলাদেশ ব্যাংক।