• শনিবার , ২৭ এপ্রিল ২০২৪

বিএনপির পক্ষে হাসের ওকালতি


প্রকাশিত: ৩:৩২ এএম, ২৩ অক্টোবর ২৩ , সোমবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩৫ বার


বিশেষ প্রতিনিধি : আগামী ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশের সময় সরকার রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেবে কি না তা জানতে চেয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।রোববার দুপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়ে মার্কিন দূত এ বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ তথ্য জানান।

ওই সাক্ষাৎ শেষে পিটার হাস সাংবাদিকদের বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজার সকল কর্মকাণ্ড শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে প্রত্যাশা করছি। একই সঙ্গে পূজার পরে আগামী ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মহাসমাবেশসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের কর্মসুচিও শান্তিপূর্ণভাবে পালন হবে বলে আশা প্রকাশ করছি।

পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পিটার হাস জানতে চেয়েছিলেন পূজা শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে কি না? স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেখাশুনা করছে কি না? তাকে (পিটার হাস) জানানো হয়েছে বাংলাদেশে পূজামণ্ডপের সংখ্যা বাড়ছে, পশ্চিমবঙ্গের তুলনায় বেশি বাড়ছে। সরকারের পক্ষ থেকে সারাদেশের পূজামণ্ডপে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পিটার হাস বলেছেন, ২৮ অক্টোবর বিএনপি রাজধানীতে অনেক লোক জড়ো করবে। এ সময় সরকার রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেবে কি না? এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, শান্তিপূর্ণভাবে কোনো রাজনৈতিক দল সমাবেশ শেষ করলে তাদেরকে কোন কিছু বলার নেই।

মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনার বিষয়বস্তু প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যদি ১০ লাখ লোক বা আরও বেশি ঢাকা শহরে ঢোকে, যেটা তারা (বিএনপি) বলছেন, তাহলে তো মিসম্যাচ হয়ে যাবে কমিউনিকেশন, এটা-ওটা। এগুলো যাতে তারা না করে সেটার জন্য আমরা অনুরোধ করব।

মন্ত্রী বলেন, পিটার হাস বলেছেন, তোমরা আসা-যাওয়া বন্ধ করে দেবে না কি? আমরা বলেছি, আসা-যাওয়া বন্ধ কেন করব? ঢাকায় তো সবারই প্রয়োজন। রোগীর প্রয়োজন, বিদেশে যাওয়ার হলে সব কিছু তো ঢাকাকেন্দ্রিক। কাজেই আসা-যাওয়া বন্ধ করার প্রশ্নই আসে না।

তারা আসবে, তারা যাবে, সেখানে আমরা বাধা দেবো না। আমরা কোনো চিন্তাও করছি না। আমরা শুধু এটুকু বলবো, তারা যেন কোনো ভায়োলেন্সে লিপ্ত না হয়। রাস্তায় চলাচল তারা যেন সচল রাখে। এটুকুই আমাদের রিকোয়েস্ট, আমরা তাকে জানিয়ে দিয়েছি।

একজন রাষ্ট্রদূত একটি রাজনৈতিক দলের নির্দিষ্ট কর্মসূচির বিষয়ে জানতে এসেছেন। এটি কূটনৈতিক শিষ্টাচারের ভেতরে পড়ে কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই প্রশ্ন আমি আপনাদের কাছে করতে চাই। আমার কথা হচ্ছে, তিনি এসেছেন। তিনি একটি রাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত, তিনি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছেন, আমরা তাকে উত্তর দিয়েছি। এটা করতে পারে কি পারে না সেটা আমার দেখার বিষয় না। সেটা আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, ২৮ অক্টোবর রাজপথ আওয়ামী লীগের দখলে থাকবে। বিএনপিও কর্মসূচি দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোনো সহিংসতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এগুলো রাজনৈতিক বক্তব্য। আমাদের কর্মীদের উজ্জীবিত রাখার জন্য আমাদের রাজনৈতিক নেতারা বলবেনই এগুলো। কেউ বলবে আমরা দখলে রাখবো, কেউ বলতে তারা দখলে রাখবে; স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আমার কথা হলো, যে কর্মসূচি দিক, রাস্তা-ঘাট বন্ধ না করে জনচলাচলের বিঘ্নতা না ঘটিয়ে, সাধারণ মানুষের যাতে কোনো ভোগান্তি না হয় সেই অনুরোধ রাখব।

পিটার হাস কেবল ২৮ অক্টোবরের প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলতে এসেছিলেন কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অনেক কিছু নিয়ে আলাপ করেছেন। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলাপ হয়েছে। তারা কিছু রোহিঙ্গাকে বিভিন্ন দেশে নিতে চান, আমাদের এসবি ক্লিয়ারেন্স দেরি হয়। আমরা তাদের আশ্বস্ত করেছি, এটা আমাদেরও মাথাব্যথা। অন্য দেশে যদি নিয়ে যায়, আমরা স্বাগত জানাই। এ জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা সে ব্যবস্থাটা করবো।

বিএনপির কর্মসূচি প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সব সময় সচেষ্ট থাকবে রাস্তা-ঘাট যাতে অচল না হয়। এমনিতেই যানজটের শহর আমাদের ঢাকা। সেখানে একটা তীব্র যানজট হতে পারে। এটা আমাদের পুলিশ বাহিনী ধৈর্যের সঙ্গে দেখবে। যেখানে যা করা দরকার রাস্তা-ঘাট পরিষ্কার করার জন্য তা তারা করবেন।