• শনিবার , ২৭ এপ্রিল ২০২৪

গণমাধ্যমকর্মী বিল ঝুলে গেল!


প্রকাশিত: ১১:০৫ পিএম, ২৩ অক্টোবর ২৩ , সোমবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১০৬ বার


সংসদ রিপোর্টার : অবশেষে গণমাধ্যমকর্মী বিল ঝুলে গেল! বহুল আলোচিত গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলি) বিল-২০২২ পরীক্ষা করে জাতীয় সংসদে প্রতিবেদন জমা দিতে পঞ্চম বারের মতো আরো ৯০ দিন সময় নিয়েছে জাতীয় সংসদের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। সোমবার(২৩ অক্টোবর) নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিবেদন দিতে না পারায় সংসদে আরও ৯০ দিন সময় চান সংসদীয় কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু। এ সময় বাড়ানোর প্রস্তাবটি স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ভোটে দিলে সংসদ সদস্যদের কণ্ঠ ভোটে তা অনুমোদন হয়। এর মধ্য দিয়ে এই বিলটি আবার স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হলে চলতি সংসদে আর পাস না হওয়া নিশ্চিত হয়ে যায়। কারণ সংসদেও চলতি অধিবেশনটিই একাদশ জাতীয় সংসদের শেষ অধিবেশন। এই অধিবেশন চলবে আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত। এর পর নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে দ্বাদশ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে বলে জানা গেছে।

এই বিলটি গত বছরের ২৮ মার্চ সংসদে উপস্থাপন করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তখন বিলটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ৬০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিবেদন দিতে না পেরে গত ৬ জুন ৬০ দিন সময় বাড়িয়ে নিয়েছিল সংসদীয় কমিটি। এরপর আগস্টে আবার দ্বিতীয় দফায় ৬০ দিন সময় বাড়িয়ে নেয় সংসদীয় কমিটি। এরপর এ বছর ৮ জানুয়ারি আবারও বিলটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দিতে ৯০ (তিন মাস) দিন সময় নেওয়া হয়। দীর্ঘ ৬ মাস পর গত ৫ জুন এ বিলটির জন্য আবারো ৯০ দিন সময় নেয় সংসদীয় কমিটি। সোমবার(২৩ অক্টোবর) আবারও ৯০ দিন অর্থাৎ তিন মাস সময় দেওয়া হলো। আর এই সময় যখন বাড়ানো হলো তখন সাত দিন পর নতুন সংসদ নির্বাচনের ৯০ দিনের কাউন্টডাউন শুরু হবে।

এদিকে প্রস্তাবিত আইনটি নিয়ে সাংবাদিক, সম্পাদক ও মালিকপক্ষের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ আছে। গত বছর আইনের খসড়া সংসদে তোলার পর থেকে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন ও সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন আইনের বেশ কিছু ধারা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছে। প্রস্তাবিত আইনে গণমাধ্যমকর্মী ও মালিকপক্ষের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে গণমাধ্যম আদালত স্থাপন করার কথা বলা হয়েছে। প্রস্তাবিত ‘গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলি) আইন ২০২২’ পাস হলে এটি স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং সংবাদপত্রের বিকাশ সংকুচিত করবে বলে মনে করছে সম্পাদক পরিষদ।

গত বছর এপ্রিলে এক বিবৃতিতে সম্পাদক পরিষদ বলেছিল, প্রস্তাবিত এই আইনের ৫৪টি ধারার মধ্যে ৩৭টি ধারাই সাংবাদিকবান্ধব নয়। সার্বিকভাবে এই আইন গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীদের স্বার্থের বিরুদ্ধে। এ ধরনের আইন চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন।
অন্যদিকে প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন প্রচলিত বিচারব্যবস্থা, শিল্প আইন ও বাংলাদেশ শ্রম আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করে দৈনিক সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)। সংগঠনটির বক্তব্য অনুযায়ি প্রস্তাবিত ওই আইনটি পাস হলে স্বাধীন সাংবাদিকতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্তসহ সংবাদপত্রের বিকাশ সংকুচিত হবে।