• সোমবার , ৬ মে ২০২৪

আল কায়েদার নয়া ওস্তাদ-মাথার দাম ১০ লাখ ডলার


প্রকাশিত: ১০:০৮ পিএম, ১ মার্চ ১৯ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৪০ বার

 

ডেস্ক রিপোর্টার : জঙ্গি সংগঠন আল কায়েদার নয়া ওস্তাদের মাথার দাম ১০ লাখ ডলার।আল কায়েদার সাবেক নেতা ওসামা বিন লাদেনের ছেলে এই নয়া ওস্তাদকে ধরার জন্য দশ লক্ষ ডলার পুরষ্কার ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, হামজা বিন লাদেন নামে ওসামা বিন লাদেনের এই ছেলে আল কায়েদার নেতা হিসেবে আবির্ভূত হতে যাচ্ছেন।পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে তার অবস্থান রয়েছে বলে মনে করা হয়।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হামজা বিন লাদেন আল কায়েদার অনুসারীদের জন্য কিছু অডিও এবং ভিডিও প্রচার করেছেন।এসব অডিও এবং ভিডিও বার্তার মাধ্যমে ওসামা বিন লাদেনের হত্যার প্রতিশোধ নিতে আমেরিকা এবং তাদের পশ্চিমা বন্ধুদের উপর আক্রমণের আহবান জানিয়েছেন হামজা বিন লাদেন।২০১১ সালে মার্কিন বিশেষ বাহিনী পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে এক অভিযান চালিয়ে ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করে।

২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে টুইন টাওয়ারে হামলার অনুমোদন দিয়েছিলেন ওসামা বিন লাদেন। ওই হামলায় প্রায় ৩,০০০ মানুষ নিহত হয়েছিল।ধারণা করা হচ্ছে, হামজা বিন লাদেনের বয়স ৩০ বছর। দুই বছর আগে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আমেরিকা যে ডকুমেন্ট তৈরি করেছে, সেখানে হামজা বিন লাদেনের নাম উল্লেখ রয়েছে।মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে, হামজা বিন লাদেন যাকে বিয়ে করেছেন, তিনি মোহাম্মদ আত্তার মেয়ে। ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে হামলার সময় যে চারটি বিমান ছিনতাই করা হয়েছিল, সেগুলোর একটি ছিনতাই করেছিলেন এই মোহাম্মদ আত্তা।

মোহাম্মদ আত্তার ছিনতাই করা বিমানটি নিউইয়র্কে অবস্থিত টুইন টাওয়ারের একটি ভবনে আঘাত করেছিল।ওসামা বিন লাদেনকে হত্যার পর অ্যাবোটাবাদ কম্পাউন্ড থেকে তার যেসব চিঠিপত্র উদ্ধার করা হয়েছিল, সেগুলো থেকে ধারণা পাওয়া যাচ্ছিল যে হামজা বিন লাদেনকে তার পিতা ওসামা বিন লাদেন উত্তরসূরি হিসেব তৈরি করছিলেন।এই সন্তান ওসামা বিন লাদেনের খুব প্রিয় ছিল এবং ওসামা বিন লাদেনের পর আল কায়েদার নেতা হিসেবে তাকেই ভাবা হচ্ছিল।

ধারণা করা হয়, হামজা বিন লাদেন তার মায়ের সঙ্গে ইরানে অনেক বছর কাটিয়েছেন এবং সেখানেই তার বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছে।কিন্তু অন্যান্য রিপোর্টে বলা হচ্ছে, তিনি পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং সিরিয়ায় বসবাস করেছেন।আমরা বিশ্বাস করি তিনি সম্ভবত পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে রয়েছেন এবং সীমান্ত পেরিয়ে ইরানে প্রবেশ করবেন। কিন্তু তিনি মধ্য এশিয়ার যে কোন জায়গায়ও থাকতে পারেন, বলছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক নিরাপত্তা বিভাগের সরকারী মন্ত্রী মাইকেল ইভানফ।

৮০’র দশকে আফগানিস্তানে আল কায়েদার আবির্ভাব ঘটে। তখন আরব স্বেচ্ছাসেবীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় গঠিত আফগান মুজাহিদীনদের সাথে যোগ দেয়। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল আফগানিস্তান থেকে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সেনাদের বিতাড়িত করা।স্বেচ্ছাসেবীদের সহায়তা করার জন্য ওসামা বিন লাদেন একটি সংস্থা গড়ে তোলেন, যেটি আল-কায়েদা নামে পরিচিত হয়ে উঠে – এর অর্থ হলো ঘাঁটি।ওসামা বিন লাদেন ১৯৮৯ সালে আফগানিস্তান ত্যাগ করেন এবং ১৯৯৬ সালে আবারো সেখানে ফিরে আসেন। তখন হাজার-হাজার বিদেশী মুসলমানের জন্য তিনি সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিচালনা করেন।

আমেরিকা, ইহুদি এবং তাদের বন্ধুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে আল-কায়েদা।২০০১ সালে আফগানিস্তানে মার্কিন সামরিক অভিযানের মাধ্যমে তালেবানরা ক্ষমতাচ্যুত হয়। এ সময় তালেবানরা ওসামা বিন লাদেন এবং তার সংগঠনকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য জায়গা করে দেয়।সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট-এর আবির্ভাবের পর আল-কায়েদা অনেকটা ম্রিয়মাণ হয়ে যায়। ইসলামিক স্টেট বিশ্বজুড়ে নজর কাড়ে এবং বিভিন্ন স্থানে বেশ কিছু হামলা চালায়।

সন্ত্রাসবাদ বিরোধী মার্কিন সমন্বয়ক নেথান সেলস বলেন, এ সময়ের মধ্যে আল-কায়েদা তুলনামূলকভাবে নীরব হয়ে যায়। কিন্তু এটা তাদের কৌশলগত বিরতি, তারা আত্মসমর্পন করেনি।বর্তমানে আল-কায়েদা স্থির নয়। এরা পুনরায় সংগঠিত হচ্ছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে হুমকি হিসেবে রয়েছে। আমাদেরকে আঘাত করার মতো সামর্থ্য এবং ইচ্ছা – দু’টোই রয়েছে আল-কায়েদার।