• রোববার , ৫ মে ২০২৪

সেই সম্পাদককে ১ হাত নিলেন প্রধানমন্ত্রী-


প্রকাশিত: ১০:১৩ পিএম, ৯ জুন ১৯ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩৭৮ বার

বিশেষ প্রতিনিধি : সেই সম্পাদককে ১ হাত নিলেন প্রধানমন্ত্রী-! জার্মানভিত্তিক একটি গণমাধ্যমে বাংলাদেশের একটি ইংরেজি দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকের দেয়া সাক্ষাৎকারের বক্তব্য প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বললেন, উনি ফরমায়েশি লেখা পাচ্ছেন না বলে লিখতে পারছেন না। রোববার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সদ্য সমাপ্ত ত্রিদেশীয় সফর নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিকের এ-সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, যেই সম্পাদক এই কথা বলছেন, যদি সত্যিই এ রকম অবস্থা হতো উনি কী এই কথাটুকুও বলার সাহস পেতেন যে উনি লিখতে পারছেন না? যদি তার ওপর সত্যিই কোনো চাপ থাকত তাহলে এই কথাটাই বলার সাহস পেত কিনা আমার প্রশ্ন সেখানে।তিনি বলেন, কেউ তো চাপ দেয়নি। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থাকলে তাদের ভালো লাগে না। তাদের ভালো লাগে যদি কোনো অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থাকে। যেমন ইমার্জেন্সি সরকার হোক বা মিলিটারি সরকার হোক-এ রকম কিছু হলে তখন তারা ফরমায়েশি লেখা লিখতে পারে।

ওই সম্পাদকের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার এই কথা থেকে আমার মনে হয়, একবার টেলিভিশনের কোনো একটা টকশোতে তিনি বলেছিলেন; কয়েকটা মিথ্যা নিউজ দেয়া হয়েছিল বলে তাকে ধরেছিল কেউ। তখন উনি বলেছিলেন, আমি কী করব, আমাকে ডিজিএফআই (প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদফতর) যেটা সাপ্লাই দিয়েছে আমি সেটাই ছাপিয়ে দিয়েছি। লিখে দিয়েছি।

তিনি বলেন, এখন ডিজিএফআই তাকে কোনো লেখা দিচ্ছে না। কাজেই উনি লিখতে পারছেন না। আমি তো এটাই বুঝব। উনি তো বলছেন, উনি ফরমায়েশিটা লিখতে পারেন। আমরা তো ডিজিএফআই দিয়ে কোনো তথ্য দেওয়াচ্ছি না।তিনি আরও বলেন, ওই সমস্ত সমস্যা নাই যে কাকে কী লিখতে হবে, কাকে কী বলতে হবে, করবে না। এখন উনি নিজেই লিখতে পারছেন না। তার মানে কোনো ফরমায়েশি লেখা না হলে উনি নিজে লিখতে পারেন না। এটাই তো দাঁড়াচ্ছে। উনি লিখুন না, ওনার যা খুশি তাই লিখে যান। লিখে তো যাচ্ছেনই।

পত্রিকায় লেখালেখিতে কিছু আসে যায় না বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। তিনি বলেন, আমি কি বলতো পারব কোনো দিন আমি এই সব পত্রিকার সহযোগিতা পেয়েছি? জীবনেও না। আর বাংলাদেশে আসার পর থেকে কয়টা পত্রিকা ছিল আমাদের পক্ষে? পারলে সবাই আমার বিরুদ্ধেই লিখেছে। আমি ওটায় অভ্যস্ত। ওতে আমার কিছু আসে যায় না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সব সময় মনে করি, আমার বিবেক যদি ঠিক থাকে, আমি সঠিক আছি, সঠিক বলছি, সঠিক করছি-সেটাই আমার কাছে বড়। কাজেই কে কী লিখল তাতে আমার কিছু আসে যায় না। আমি আমার দেশকে ভালোবাসি। দেশের মানুষকে ভালোবাসি। আমি যা কাজ করি দেশের জনগণের কল্যাণে কাজ করি। এই বিশ্বাসটা যদি আমার থাকে তাহলে কে কোনটা ভালো বলল, কোনটা মন্দ বলল-এটা নিয়ে আমার মাথাব্যথার কিছু নেই।’

তিনি বলেন, ‘আমি এখানে বসে যেটা দেখতে পাব সেটা তো তারা দেখতে পাবে না। তাহলে তো আমার জায়গায় তারা থাকতো, আমি তাদের জায়গায় থাকতাম। বাংলাদেশ কি এগিয়ে যাচ্ছে না? এর সুফলটা কি সবাই পাচ্ছে না? বাংলাদেশের মর্যাদা কি বিশ্বে একটু উন্নত হচ্ছে না? হচ্ছে তো। আজকে সারাবিশ্ব যে বাংলাদেশের দিকে তাকায়, একটু প্রশংসা করে-এটা কি সকলের ভালো লাগে না?’

সমালোচনাকারীদের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভালো লাগবে না তাদের যারা স্বাধীন বাংলাদেশ চায়নি। যারা ওই স্বাধীনতাবিরোধীদের পদলেহন করার অভ্যাস ছিল তাদের ভালো লাগবে না। আজকের বাংলাদেশ সকলের কাছেই একটা দৃষ্টান্ত। সবাই এটাই জিজ্ঞেস করে এত মানুষ নিয়ে এভাবে আপনারা কীভাবে এগুচ্ছেন?’

তিনি বলেন, ‘ওনার লেখায় তো আমরা বাধা দেইনি। উনি লেখুক না। যত খুশি লিখবে। লিখছে তো। কিন্তু হঠাৎ বলে ফেললেন যে উনি লিখতে পারছেন না। আমি তো মনে করি ওইটাই যে উনি ফরমায়েশি লেখা পাচ্ছেন না। উনি যদি চান ডিজিএফআই ওনাকে সাপ্লাই দিক, তাহলে উনি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুক। তাহলে সাপ্লাই দেবে। এর বাইরে আমি কী করব?’

সদ্যসমাপ্ত ত্রিদেশীয় সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার বিকেল ৫টার পর প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়। সংবাদ সম্মেলনে জাপান, সৌদি আরব এবং ফিনল্যান্ড সফরসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী গত ২৮ মে ত্রিদেশীয় সফরের প্রথম গন্তব্য জাপানের রাজধানী টোকিও যান। জাপানে চারদিন অবস্থানকালে শেখ হাসিনা ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে আড়াই বিলিয়ন ডলারের দ্বিপক্ষীয় চুক্তিসহ ৪০টি ওডিএ চুক্তি স্বাক্ষর করেন।জাপান সফর শেষে তিনদিনের সফরে সৌদি, এরপর গত ৩ জুন ফিনল্যান্ড সফর করেন প্রধানমন্ত্রী। হেলসিংকি থেকে গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি।