• রোববার , ১৯ মে ২০২৪

যৌনমিলনে প্রেমিকার শ্বাসরোধ:খুন না’কি!


প্রকাশিত: ৬:২৮ পিএম, ৪ জুলাই ১৮ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৪৭ বার

ডেস্ক রিপোর্টার  : যৌনমিলনে প্রেমিকার শ্বাসরোধ নিয়ে হৈচৈ অবস্থার সৃষ্ঠি হয়েছে। ঘটনার দেড় বছর পর এনিয়ে হত্যা মামলা 11দায়ের করায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মুম্বাইয়ে।পুলিশ জানায়, যৌন মিলনের সময় গলায় প্রেমিকের চাপ পড়েছিল। তাতে শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয় প্রেমিকার।

মুম্বইয়ের কোলাবার হোটেলে বছরখানেক আগের এই ঘটনায় অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করল পুলিশ।যে সময় ঘটনাটি ঘটে, তখন দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু ফরেন্সিক রিপোর্টে শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু নিশ্চিত হতেই ইজরায়েলের ওই যুবকের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করে নতুন করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইজরায়েলের বাসিন্দা বছর বাইশের যুবক ওরিরন ইয়াকভ তাঁর প্রেমিকাকে নিয়ে ভারতে বেড়াতে আসেন গত বছর। দক্ষিণ মুম্বইয়ের কোলাবার একটি হোটেলে ওঠেন তাঁরা। হোটেলের ঘরেই যৌন মিলনের সময় উত্তেজনার বশেবছর উনিশের প্রেমিকার গলায় চাপ পড়ে যায়। কিছুক্ষণ পরেই ইয়াকভ টের পান, তাঁর প্রেমিকা নড়াচড়া করছেন না। তখনই হোটেলকর্মীদের খবর দেন। তাঁরাই খবর দেন পুলিশে।

পুলিশ গিয়ে তরুণীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ফরেন্সিক তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা নমুনা সংগ্রহের পর তরুণীর মৃতদেহ নিয়ে তাঁর দেশ ইজরায়েলে গিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন পরিবারের লোকজন। ওই যুবকও ফিরে যান স্বদেশে।সম্প্রতি সেই মৃত্যুর ফরেনসিক রিপোর্ট হাতে আসার পরেই সরাসরি খুন না হলেও অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের হয়েছে। আর এই নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে আইনজ্ঞ মহলে।

আইনে অনিচ্ছাকৃত খুন বলতে কী বলা হয়েছে?
ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৯ নম্বর ধারা অনুযায়ী, মৃত্যুর উদ্দেশ্য নিয়ে কোনও ঘটনা ঘটালে তা অনিচ্ছাকৃত খুনের আওতায় পড়ে। মৃত্যু হতে পারে জেনেও এমন কোনও গুরুতর আঘাত এবং তার ফলে মৃত্যু হলেও এই ধারায় অভিযুক্ত করা যেতে পারে।ভারতীয় দণ্ডবিধির২৯৯ ধারায় একটি উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি বোঝানো হয়েছে।

ধরা যাক কোনও জঙ্গলে ‘ক’ লুকিয়ে আছে। ‘খ’ সেটা জানলেও ‘গ’ জানে না। এবার ‘খ’ ‘ক’-এর লুকিয়ে থাকার বিষয়টি না জানিয়ে ‘গ’-কে ওই জঙ্গলে আগুন লাগিয়ে দিতে বলল। আগুনে মৃত্যু হল ‘ক’-এর। এ ক্ষেত্রে ‘গ’-এর কোনও অপরাধ না হলেও ‘খ’-এর অপরাধ অনিচ্ছাকৃত খুনের সমান।যদিও কানাডায় এই ধরনের মৃত্যু অপরাধের মধ্যেই পড়ে না।

বিশ্বের অন্যান্য দেশেও এই অনিচ্ছাকৃত খুনের ধারায় মতপার্থক্য রয়েছে। ইয়াকভের দেশ ইজরায়েলে যেমন পাঁচ রকমের খুনের মধ্যে অনিচ্ছাকৃত খুনের আওতায় পড়ে পথ দুর্ঘটনার মতো ঘটনা। বাকি চারটি খুনের মধ্যে রয়েছে উদ্দেশ্য নিয়ে ও পরিকল্পনা করে খুন, গণহত্যা, নরবলি, ও শিশুহত্যা।

কানাডায় আবার অনিচ্ছাকৃত খুন অপরাধ হিসাবেই ধরা হয় না। পাকিস্তানে আবার ইচ্ছাকৃত গুরুতর আঘাতে (খুনের উদ্দেশ্য নিয়ে নয়) অনিচ্ছাকৃত খুন ধরা হয়। আবার স্কটল্যান্ডে ষড়যন্ত্র বা পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়া কোনও আঘাতের ফলে মৃত্যু হলে অনিচ্ছাকৃত খুন হিসাবে ধরা হয়।

আইনজ্ঞ মহল মনে করছে, মুম্বইয়ের ঘটনায় ওই যুবক খুনের উদ্দেশ্য নিয়েই সেক্সের সময় প্রেমিকার গলা টিপে ধরতে পারেন। সেটা আদালতে প্রমাণ সাপেক্ষ। তাই আপাতত এই অনিচ্ছাকৃত খুনের ধারা দিয়েই মামলা শুরু করেছে পুলিশ।