• সোমবার , ৬ মে ২০২৪

মার্শাল আগ্রোভেটের বিটিআই জালিয়াতি


প্রকাশিত: ১:৩২ এএম, ২৪ আগস্ট ২৩ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২৪ বার

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : এডিস মশার লার্ভা নিধনের জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনকে (ডিএনসিসি) সরবরাহ করা জৈব কীটনাশক বিটিআই আমদানিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের লাইসেন্স জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস। এ ঘটনায় মাশার্ল অ্যাগ্রোভেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, নির্বাহী পরিচালক এবং জড়িত সিএন্ডএফ এজেন্ট টিভলির মালিকসহ সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

বুধবার (২৩ আগস্ট) চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সহকারী সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. বাকিবিল্লাহ বাদি হয়ে বন্দর থানায় মামলাটি করেন। এতে মার্শাল অ্যাগ্রোভেট বিটিআই আমদানিতে কাস্টেমসে যে কাগজপত্র দাখিল করেছে সেগুলো নকল করে তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার বদরুজ্জামান মুন্সি বলেন, লাইসেন্স জালিয়াতির অভিযোগে মার্শাল অ্যাগ্রোভেটসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জালিয়াতির বিষয়টি নিশ্চিত হয়েই আমরা মামলা করেছি।চট্টগ্রাম বন্দর থানার ওসি সঞ্জয় কুমার সিনহা বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে মামলা রুজু হয়েছে। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এজাহারে সূত্রে জানা গেছে, এ মামলায় মার্শাল অ্যাগ্রোভেটের নির্বাহী পরিচালক নাসিরউদ্দিন আহমদেকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিরা হলেন- প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আলাউদ্দিন, টিভোলি এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটার সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট বিশ্বনাথ কর্মকার, আরেক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও কাস্টমস সরকার মো. জাকির হোসেন এবং জাকির হোসেনের সহকারী শহিদুল ইসলাম এবং মার্শালের অজ্ঞাতনামা পরিচালকরা।

অভিযোগে বলা হয়, গত ২৬ জুলাই মার্শাল অ্যাগ্রোভেট কেমিক্যাল ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেড চীন থেকে ৫ টন বিটিআই আমদানি করে। যা স্থানীয় এজেন্টদের মাধ্যমে শুল্ক পরিশোধ করে খালাস করা হয়। কিন্তু তারা সে সময় লাইসেন্সসহ যে কাগজপত্র দাখিল করেছে তা তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করতে পারেনি।

এর কারণ হিসাবে বলা হয়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে যাচাইয়ের সেই সুযোগ ছিলো না। নথিগুলো প্রমাণের জন্য গত ২১ আগস্ট কাস্টমস হাউস থেকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে একটি চিঠি দেওয়া হয়। গত ২২ আগস্ট সেই চিঠির জবাব পেলে বেশকিছু গড়মিল পাওয়া যায়।

কীটনাশক নিবন্ধনের সনদে আমদানির লাইসেন্সে নম্বর ২৭ উল্লেখ করা হয়। কাস্টম হাউজ যাচাই করে দেখেছে লাইসেন্সটি দ্বিতীয় পাতায় Annexure-A এর ২৯ নং ক্রমিক এর বালাইনাশকটির ব্রান্ড নাম (বিটিআই) রেজিস্ট্রেশন নং- এপি-০৬৩৪, কীটনাশকের বর্ণানামূলক নাম: ব্যাসিলাস থুরিংয়েনসিস (সক্রিয় উপাদান)। অত্র দপ্তরের নথিপত্র ও বালাম বহি মোতাবেক আমদানি লাইসেন্স নম্বর ০২৭ এর ২৯ নম্বর ক্রমিকে বর্ণিত বালাইনাশকটির ব্রান্ড নাম Koradex 50 SP রেজিস্ট্রেশন নম্বর এপি ০৬৩৪ কীটনাশকের বর্ণনামূলক নাম: সাইরোমাজিন (সক্রিয় উপাদান)।

কীটনাশক নিবন্ধনের লাইসেন্স যাচাই করে দেখা যায়, অত্র দপ্তরে সংরক্ষিত নথিপত্র ও বালাম বহির সাথে প্রেরিত নিবন্ধন সনদের গড়মিল রয়েছে। কীটনাশক নিবন্ধনের লাইসেন্স ২০/১০/২০২২ সঠিক নয়। এতে স্বাক্ষরকারী কর্মকর্তা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আব্দুল মাজেদ গত ৩০ জুলাই থেকে অবসর পরবর্তী ছুটিতে রয়েছেন। যার ফলে ১০ অক্টোবর ২২ তারিখে লাইসেন্সে তার স্বাক্ষর করার কোনো সুযোগ নেই।

প্রকৃতপক্ষে ২০১৯ সালের ৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত বালাইনাশক কারিগরি উপদেষ্টা কমিটির (পিটাক) ৭৯তম সভায় অনুমোদিত বালাইনাশক ‘Koradex 50 SP (Cyromazine) AP-6034’ এর নিবন্ধন সনদে তৎকালিন পরিচালাক জেড এম সাব্বির ইবনে জাহান স্বাক্ষর করেছেন ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি। এমন অবস্থায় সরকারী দপ্তরে মিথ্যা ও জাল-দলিলাদি দাখিল করার দায়ে ওপরে উল্লেখিত আসামিদের বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ সালের ২৫ এর বি ধারা এবং পেনাল কোড ৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারা অনুযায়ী আসামিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে অনুরোধ করা হয়।