• রোববার , ২৮ এপ্রিল ২০২৪

বোমা সদৃশ বস্তু-প্রধান বিচারপতির বাড়িতে


প্রকাশিত: ৩:১৯ পিএম, ২৯ ফেব্রুয়ারি ১৬ , সোমবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৬১ বার

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) সংবাদদাতা :   মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার তিলকপুরে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বাড়ির পাশে জমিতে বোমা সদৃস বস্তু পাওয়া গেছে। সোমবার সকালে বাড়ির কাজের লোক surendro kumar-www.jatirkhantha.com.bdএটি দেখতে পেয়ে স্থানীয়দের জানান।

সরেজমিনে জানা যায়, প্রধান বিচারপতির পাশের বাড়ির অস্বীনি কুমার সিংহ কাজের লোক পবন শব্দকরের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারেন। বিচারপতির ঘরের পেছনে প্রায় ২০০ ফুট দূরে জমিতে ফেলে রাখা গ্যাস সিলিন্ডারের মতো ওই বস্তুটি দেখা যায়।

অস্বীনি কুমার জানান, তিনি বিষয়টি দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। সংবাদ পেয়ে মৌলভীবাজারের এএসপি (সার্কেল) মোল্লা মো. শাহীন, কমলগঞ্জ থানার ওসি এনামুল হক, মৌলভীবাজারের এসপি মো. শাহজালাল ও কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে আসেন।

ঘটনাস্থলের পাশে একটি ম্যাপ, আলফালাহ যুবসংঘের একটি তালিকা উদ্ধার করা হয়েছে। বোমা সদৃশ বস্তুর পাশে কাউকে যেতে দেয়নি পুলিশ। এ ব্যাপারে মৌলভীবাজারের এএসপি (সার্কেল) মোল্লা মো. শাহীন এর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘আসলে বিষয়টি এখনো পুরোপুরি বুঝা যাচ্ছে না। সিলেট থেকে বিশেষ দল আসছে, তারপর নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে এই ঘটনাটি কাউকে ফাঁসানোর জন্যই হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।’

 

 

রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম চ্যালেঞ্জের মামলা আজ

এস রহমান:  দীর্ঘ ২৮ বছর শুনানিতে এলো রাষ্ট্র ধর্ম ইসলামকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আনীত রিট মামলাটি। এই মামলার চূড়ান্ত শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করে দিয়েছেন। বিচারপতি নাঈমা হায়দারের নেতৃত্বাধীন বৃহত্তর বেঞ্চে আজ সোমবার মামলাটির শুনানির জন্য রয়েছে।

রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৮৮ সালে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করা হয়। এরপর থেকেই আবেদনটি হাইকোর্টে বিচারাধীন ছিল। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের ব্যাপক সংশোধনীর আনা হয়। কিন্তু রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের বিষয়টি বহাল থাকে। এর  পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিক ফয়েজ আহমেদ রিটটি শুনানির জন্য হাইকোর্টে একটি সম্পূরক আবেদন করেন।

ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ জুনে রুল জারি করেন। রুলে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে অন্তর্ভুক্তির বিধান কেন অসাংবিধানিক ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। একই সঙ্গে সিনিয়র ১২ আইনজীবীকে অ্যামিকাসকিউরি হিসেবে নিয়োগ দেয়। রুল জারি এবং রিট দায়েরের দীর্ঘদিন পর মামলাটি চূড়ান্ত শুনানির জন্য হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে উঠল।

সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদের শাসনামলে ১৯৮৮ সালের ৫ জুন চতুর্থ জাতীয় সংসদে অষ্টম সংশোধনী পাস করা হয়। ওই সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে অনুচ্ছেদ ২-এর পর ২(ক) যুক্ত হয়। ২(ক)-তে বলা হয়, ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম হবে ইসলাম, তবে অন্যান্য ধর্মও প্রজাতন্ত্রে শান্তিতে পালন করা যাইবে।’ তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ৯ জুন এতে অনুমোদন দেন।

এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের আগস্টে  ‘স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ কমিটির’ পক্ষে সাবেক প্রধান বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেন, কবি সুফিয়া কামাল, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীসহ ১৫ জন বিশিষ্ট নাগরিক হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। ওই আবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে নানা ধর্ম বিশ্বাসের মানুষ বাস করে। এটি সংবিধানের মূল স্তম্ভে বলা হয়েছে। এখানে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করে অন্যান্য ধর্মকে বাদ দেয়া হয়েছে। এটি বাংলাদেশের অভিন্ন জাতীয় চরিত্রের প্রতি ধ্বংসাত্মক।রিটকারীদের অনেকেই ইতিমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন।

এদিকে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসে সংবিধান সংশোধনে সংসদীয় বিশেষ কমিটি গঠন করে। ওই কমিটি ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে বহাল রাখার সুপারিশ করে। পরবর্তীকালে ওই সুপারিশ অনুযায়ী সংবিধানে আনা হয় পঞ্চদশ সংশোধনী।

এই সংশোধনীতে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে বহাল রাখার বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি সম্পূরক আবেদন দাখিল করে রিটকারী পক্ষ। আবেদনে বলা হয়, সংবিধানের পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম (আংশিক) ও ত্রয়োদশ সংশোধনী সংসদে অনুমোদিত (পাস) হলেও সুপ্রিম কোর্ট এসব সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করেছে।

রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে স্বীকৃতির বিধান সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর পরিপন্থি। পঞ্চম সংশোধনী মামলার রায়ের আলোকে ১৯৭২ সালের সংবিধানের চার মূলনীতি জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্র সংবিধানে ফিরে এসেছে। আদি সংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ পূনর্বহাল হয়েছে। এটির সঙ্গে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম অব্যাহত রাখা হলে তা হবে সাংঘর্ষিক ও পঞ্চম সংশোধনীর মামলার রায়ের পরিপন্থি।

রিট আবেদনের ওপর জারিকৃত রুল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় গত বছর রিটকারী পক্ষ থেকে বৃহত্তর বেঞ্চ গঠনের জন্য আবেদন জানানো হয়। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রিটের রুলের চূড়ান্ত শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতি বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করে দেন। বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল।

এ প্রসঙ্গে রিটকারী পক্ষের আইনজীবী জগলুল হায়দার বলেন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের বিষয়ে দুটি রুল শুনানির জন্য বৃহত্তর বেঞ্চ গঠিত হয়েছে। আজ ওই বেঞ্চে রুলের চূড়ান্ত শুনানির জন্য আবেদনটি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।