• শুক্রবার , ৩ মে ২০২৪

দেশের বিরুদ্ধে ড.ইউনূস-বিচার চলবে-বিশ্বনেতাদের চিঠিতে সরকার বিব্রত নয়: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী


প্রকাশিত: ৮:২৮ পিএম, ২৯ আগস্ট ২৩ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২৩ বার

বিশেষ প্রতিনিধি : ড. ইউনূস বা তার লোকজন এখনও অর্থ বিনিয়োগ করে যাচ্ছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। এতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। কিন্তু মামলার সঙ্গে ওটার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দণ্ড দেওয়া হতে পারে— এমন আশঙ্কা থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিশ্বনেতাদের খোলা চিঠি নিয়েও সরকার বিচলিত নয়। আর এ ইস্যুতে সরকার চিন্তিত বা চাপে নেই বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। মঙ্গলবার ২৯ আগস্ট রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকায় কোরিয়ান দূতাবাসের এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, মুক্ত বাকের বিশ্বে যে অবস্থান থেকে যে কেউ কিছু বলতে পারে। যেভাবে বলি না কেন, এখানে সরকারের কোনো প্রভাব ছিল না। ভবিষ্যতেও থাকবে না। বাংলাদেশের বিচার বিভাগ স্বাধীন। স্বাধীন বিচার বিভাগ যেটা মনে করেন তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে তাই করেন। বিচার বিভাগ সিদ্ধান্ত নেবেন এবং বিচার চলবে।

একটি বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করার আহ্বান দুঃখজনক উল্লেখ করে শাহরিয়ার আলম বলেন, আমি মনে করি না, যারা এই আবেদনে শামিল হচ্ছেন তারা তাদের খ্যাতির প্রতি ন্যায়বিচার করেছেন। একটা বিচারকে তারা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। কিন্তু একজন ব্যক্তি যিনি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, যিনি শত শত হাজার মানুষকে নিয়োগ করেছেন; যার সম্পদ আছে তার তো একটা লিগ্যাল ইস্যু থাকতে পারে। তার মানে এই না সে অপরাধী হয়েই যাবে, আর সেটা অনুসন্ধান করা যাবে না।

বিশ্বের এমন কোনো মানুষ আছেন- যার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে তার তদন্ত করা যাবে না? প্রশ্ন রাখেন শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, পৃথিবীতে এমন কোনো ব্যক্তি কি আছেন যার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে সেটা তদন্ত করা যাবে না বা আদালতে নেওয়া যাবে না? এটা হতাশাজনক যে, একজনকে অব্যাহতভাবে প্রটোকল দেওয়ার জন্য…কিন্তু আমরা বুঝতে পারি। তিনি বলেন, অতীতেও কিছু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক মর্যাদা শুধু তার গুণের কারণে হয়েছে, তা নয়। এর পেছনে অনেক বিনিয়োগ আছে। আমি ওদিকে যেতে চাই না। আর এটা সরকারের বক্তব্য নয়, আমার নিজের বক্তব্য।

আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে ড. ইউনূসের দূরত্ব কোথায় প্রশ্ন রাখা হয় শাহরিয়ার আলমের কাছে। জবাবে তিনি জানান, আপনারা ১/১১ ঘটনা প্রবাহ জানেন। তারপরে গত ১৫ থেকে ১৭ বছরের আমাদের দিক থেকে কিছু নেই। কিন্তু আমরা যেটা দেখেছি, যেটার প্রতিফলন আপনারা আন্তর্জাতিক একটি গণমাধ্যমে দেখেছেন। যেখানে দুই পাতা ভাড়া করতে অন্ততপক্ষে মিলিয়ন ডলার লাগে। সেই পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে একটা পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের মতো স্বাক্ষর নেওয়া হয়, যে স্বাক্ষরের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত।

ড. ইউনূস ইস্যুতে বিদেশি বন্ধুদের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে কি না জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সঠিক তথ্য সরবরাহ করব। অতীতেও আমরা করেছি। এখনও আমাদের দূতাবাসগুলো করে যাচ্ছে। আমরা তাদের কাছে এটার যতটুকু জানি তুলে ধরব।তিনি বলেন, একটা বিচারাধীন বিষয়ে সরকার বা আমাদের দূতাবাস বা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নতুন করে ব্যাখ্যা বা বলার কিছু নেই। কারণ আদালত সিদ্ধান্ত নেবেন তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে। আমরা তাদের এ অনুরোধটুকু করব, বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন। চিন্তার কোনো কারণ নেই।

সম্প্রতি শান্তিতে নোবেলজয়ী ইউনূসকে দণ্ড দেওয়া হতে পারে-এ আশঙ্কায় ১০০ জনেরও বেশি নোবেল পুরস্কারজয়ীসহ ১৭৫ জন বিশ্বনেতা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন। প্রথমে ১৬০ জন বিশ্বনেতা এই খোলা চিঠিতে সই করলেও পরবর্তীতে আরও ১৫ জন এতে সই করেন এবং ৮ জন সাধারণ নাগরিকসহ এই সংখ্যা বেড়ে মোট ১৮৩ জন হয়েছে।