• রোববার , ৫ মে ২০২৪

জম্নদিনে ইয়াকুব মেমনের অভূতপূর্ব ফাঁসি-কেক পড়ে আছে সেলে..


প্রকাশিত: ১০:৫৮ এএম, ৩০ জুলাই ১৫ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৭৭ বার

 444444444444444এস রহমান: আজ সকালে জম্নদিনের কেট কাঁটার পরিবর্তে অভূতপূর্ব ফাঁসি  হয়ে গেছে জঙ্গি ইয়াকুব মেননের, কেক পড়ে আছে সেলে..।না কোন অনুকম্পাই পেলেন না জঙ্গি ইয়াকুব মেনন।আজ বৃহস্পতিবার তার জন্মদিন ছিল।মেননের পরিবার রাতেই কেক পাঠিয়েছিল নাগপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে।ফাঁসি স্থগিতের জন্যে দিবাগত রাত ৩টায় সুপ্রীমকোর্টের ৩ সদস্যর বেঞ্চের অভূতপূর্ব শুনানী হয়।কিন্তু না অনুকম্পা পাননি মেনন।অবশেষে আজ সকালে তার ফাঁসি কার্যকর হয়ে গেছে।

Yakub Memon_mumbai blast-www.jatirkhantha.com.bdভারতের মুম্বাই শহরে বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ইয়াকুব মেমনের আজ বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল সাতটার কিছু আগে মহারাষ্ট্রের নাগপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে তাঁর ফাঁসি কার্যকর করা হয়। এনডিটিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে স্থানীয় সময় ভোর পাঁচটায় সুপ্রিম কোর্ট ফাঁসি স্থগিত করতে ইয়াকুবের শেষ মুহূর্তের আবেদন নাকচ করেন। নজিরবিহীনভাবে এ নিয়ে গভীর রাতে শুনানির পর ভোরে আদেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত। গতকাল বুধবার ইয়াকুবের ক্ষমা প্রার্থনা নামঞ্জুর করেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি। তার আগে তাঁর ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্ট।

১৯৯৩ সালে পরপর বিস্ফোরণে তৎকালীন বোম্বে (বর্তমান মুম্বাই) শহরে ২৫৭ জন নিহত ও ৭০০ জন আহত হয়েছিলেন। তদন্তে প্রমাণিত, বিস্ফোরণের ছক পুরোটাই ছিল মেমন পরিবারের। ঘটনার আগে পরিবারের অধিকাংশই দেশ ছেড়ে চলে যান। পরে পরবর্তী সময়ে ইয়াকুব আত্মসমর্পণ করেন। সেই আত্মসমর্পণ শর্তাধীন ছিল কি না (অর্থাৎ ইয়াকুবকে প্রাণদণ্ড দেওয়া হবে না), এ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের কাছে ইয়াকুব যে যুক্তিতে ফাঁসির স্থগিতাদেশের আবেদন জানিয়েছিলেন, দিনভর শুনানি শেষে সর্বোচ্চ আদালত গতকাল তা খারিজ করে দেন।

19মুম্বাইয়ের সন্ত্রাসবিরোধী টাডা আদালত ইয়াকুবকে ফাঁসির নির্দেশ দেন। প্রথমে বোম্বে হাইকোর্ট ও পরে সুপ্রিম কোর্ট সেই আদেশ বহাল রাখেন। ইয়াকুবের পক্ষে এরপর রায় পর্যালোচনার আবেদন জানানো হয়। সেই আবেদনও খারিজ হওয়ার পর পুনর্বিবেচনার আবেদন দাখিল করা হয়। গত মঙ্গলবার সেই শুনানিতে দুই বিচারপতির মধ্যে মতের অমিল দেখা দেয়। বিচারপতি কুরিয়েন যোসেফ ‘পদ্ধতিগত ত্রুটির’ উল্লেখ করে বলেন, ত্রুটি সারিয়ে বিচার চূড়ান্ত করা হোক। সেই অনুযায়ী গতকাল তিন বিচারপতির বেঞ্চ দীর্ঘ শুনানি শেষে জানান, ফাঁসির আদেশ বহাল রাখা নিয়ে পদ্ধতিগত কোনো ত্রুটি ছিল না। বিচারপতিরা দণ্ডাদেশ স্থগিত রাখার আবেদনও খারিজ করে দেন।

টাডা কোর্ট ইয়াকুবের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল। সেই খবর পরিবারকে জানানো হয় ১৩ জুলাই।
ইয়াকুবের আইনজীবীর বক্তব্য ছিল, তিন মাস সময় থাকলেও জেল কর্তৃপক্ষ একেবারে শেষ মুহূর্তে তা জানিয়েছে। তা ছাড়া পুনর্বিবেচনার আবেদন ফয়সালা হওয়ার আগেই ফাঁসির আদেশ কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই আবেদনের ফয়সালা ত্রুটিযুক্ত। অতএব ফাঁসি স্থগিত রাখা হোক। পাশাপাশি ইয়াকুবের পক্ষ থেকে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ও দেশের রাষ্ট্রপতির কাছে নতুন করে প্রাণভিক্ষার আবেদন জানানো হয়। রাজ্যপালের পর রাষ্ট্রপতি তা অগ্রাহ্য করেন।

ফাঁসি স্থগিত করতে সবশেষ গতকাল মধ্যরাতে সুপ্রিম কোর্টে জরুরি আবেদন করে আসামিপক্ষ। এরপর দিবাগত রাত তিনটার দিকে শুরু হয় এক অভূতপূর্ব শুনানি। এতে ইয়াকুবের আইনজীবীরা বলেন, আইন অনুসারে প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ার ১৪ দিনের মধ্যে আসামির ফাঁসি কার্যকর করা যায় না।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, ইয়াকুব তাঁর দণ্ড চ্যালেঞ্জে যথেষ্ট সুযোগ পেয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি গ্রহণ করে আসামিপক্ষের আবেদন নাকচ করেন। আজ ভোররাতে এ আদেশ হয়। সকালে ইয়াকুবের দণ্ড কার্যকর করা হয়।

গত ২০ বছর ধরে কারাগারে বন্দী ছিলেন ইয়াকুব। ১৯৯৬ সাল থেকে তিনি ‘সিজোফ্রেনিয়া’ রোগী ছিলেন। প্রাণভিক্ষার আবেদনে এর উল্লেখ করে তিনি বলেছিলেন, একই মানুষকে যাবজ্জীবন সাজা ও প্রাণদণ্ড দেওয়া যায় না।
নানা তর্ক-বিতর্ক ও নাটকীয়তার পর শেষমেশ জন্মদিনেই ফাঁসিকাষ্ঠে যেতে হলো ইয়াকুবকে। আজ ইয়াকুবের ৫৩ বছর পূর্ণ হয়। জন্মদিন উপলক্ষে গতকাল মধ্যরাতে নাগপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে ইয়াকুবের জন্য কেক পাঠিয়েছিল পরিবার।