• মঙ্গলবার , ৩০ এপ্রিল ২০২৪

চিংড়ি রফতানিতে জিএসপি সনদ জালিয়াতি-ইসি’র তদন্ত শুরু আজ


প্রকাশিত: ১:৪১ পিএম, ২৪ নভেম্বর ১৫ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১০৭ বার

Srimp-www.jatirkhantha.com.bdএস রহমান:   দেশের বেশ কিছু চিংড়ি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জিএসপি সনদ জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়ার জন্য এসব প্রতিষ্ঠান এ সনদ জাল করেছে। ইপিবির দেওয়া এসব সনদে ঘষাঘষি ছাড়াও জাল সনদ তৈরির অভিযোগ করেছে ইউরোপিয়ান কমিশন। বিষয়টি তদন্তে কমিশনের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল আজ ঢাকায় আসছে।জানা গেছে, তদন্ত দলটি এ সব সনদ গ্রহণকারী বিভিন্ন কারখানার দেওয়া তথ্য খতিয়ে দেখবে। ১০ দিনের বাংলাদেশ সফরকালে চিংড়ি রফতানি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অধিদপ্তর ও বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তারা বৈঠক করবে।

সূত্র জানায়, ইউরোপীয় কমিশন (ইসি) ফ্রান্স ও বেলজিয়ামে চিংড়ি রফতানির ক্ষেত্রে বিভিন্ন রফতানিকারকের দেওয়া ৪৮টি সনদ জাল বলে অভিযোগ করে। এ অভিযোগ পাওয়ার পর ইপিবি গত আগস্টে ১১ চিংড়ি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৬৬ চালানের সনদের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সংস্থার খুলনা কার্যালয়কে নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে সংস্থাটি ইতিমধ্যে জিএসপি সনদ জাল ও ঘষামাজা করায় দোষী প্রতিষ্ঠানকে জরিমানাসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

অন্যদিকে হিমায়িত খাদ্যপণ্য রফতানিকারকদের সংগঠন বিএফএফইএ এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দোষীদের ১০ হাজার টাকা জরিমানার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভবিষ্যতে আবারও এমন কর্মকাণ্ডের প্রমাণ পেলে সংগঠনের সদস্যপদ বাতিলসহ মৎস্য অধিদপ্তরের লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।মৎস্য অধিদপ্তর ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ইউরোপিয়ান কমিশনের দুর্নীতি দমন কার্যালয়ের (ওলাফ) প্রতিনিধিরা এ বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ঢাকায় আসছে।মঙ্গলবার থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ করবে এ প্রতিনিধি দল।

বাংলাদেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে পণ্য রফতানিতে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা (জিএসপি) পায়। বেলজিয়ামের বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, ওলাফের প্রতিনিধি দল জিএসপি সনদ জালিয়াতির বিষয়ে তদন্ত করবে। এরপর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়। প্রতিনিধি দলের তদন্ত কাজে সহযোগিতা করবে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএফইএ)। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে রয়েছেন ওলাফের সিনিয়র কাস্টমস তদন্ত কর্মকর্তা মাইকেল ডিট্রিচ।

মৎস্য অধিদপ্তরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নিত্যরঞ্জন বিশ্বাস জাতিরকন্ঠকে বলেন, সনদ জাল করা ও ঘষাঘষির বিষয়ে রফতানিকারকদের কাছে তথ্য চেয়েছে অধিদপ্তর। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের মাছ উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণে মান অনেক ভালো রয়েছে। এ অবস্থায় এমন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে রফতানিতে নেতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি করা দুর্ভাগ্যজনক।
এর আগে ২০১৩ সালে ভুয়া জিএসপি সনদ দিয়ে অন্য দেশের পণ্য বাংলাদেশের নামে রফতানি করার অভিযোগ উঠেছিল।

জিএসপি সুবিধার জন্য এই ভুয়া সনদ দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল সরকারি প্রতিষ্ঠান ইপিবির নামে। তখন যুক্তরাষ্ট্রে জিএসপি সুবিধা স্থগিত ছিল। ইইউতে এ ধরনের ভুয়া সনদে পণ্য রফতানি এড়াতে অনলাইনে জিএসপি সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার।
ওই বছরে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ভুয়া সনদ দিয়ে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে (ইইউ) পণ্য রফতানিতে বাংলাদেশের ৫৮৩টি অবৈধ চালান আটক করা হয়েছিল। এ ছাড়া সন্দেহজনক চালান আটক করা হয়েছিল আরও ৭২১টি।