• মঙ্গলবার , ৩০ এপ্রিল ২০২৪

কোটি টাকার জমি নদী গর্ভে বিলীন, গাজীপুরে বালি সন্ত্রাস, ইজারা নীতি অমান্য


প্রকাশিত: ৩:৩৪ এএম, ১০ এপ্রিল ১৪ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১২০ বার

মোস্তফা কামাল প্রধান, গাজীপুর:

গাজীপুরের শ্রীপুর ও কাপাসিয়া উপজেলার মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া শীতলক্ষ্যার শাখা বানার নদী থেকে ইজারা নীতিমালা অমান্য করে অপরিকল্পিত ভাবে বালি উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাছাড়া গাজীপুর জেলার বালু মহাল ইজারা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত মৌজায় বালি উত্তোলনের জায়গার পরিমাণ ১১৩ একর উল্লেখ থাকলেও গাজীপুরের পার্শ্ববর্তী ময়মনসিংহের সাথে সীমানা নির্ধারণ না থাকায় উক্ত মৌজার মাত্র ৪ একর বালি মহাল থেকে গাজীপুর জেলার ইজারাদারকে বালি উত্তোলন করতে হয় বলে বরমী ইউপি চেয়ারম্যান রাজ্জাক বেপারী দাবী করেন। নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থরা জানান, অপরিকল্পিত ও বালি মহাল নীতিমালা বহির্ভূত বালি উত্তোলনের ফলে বিগত ২ বছরে নদী পাড়ের বাসিন্দাদের প্রায় ১০ কোটি টাকার জায়গা-জমি, ঘর-বাড়ী নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এদিকে বরামা সিংহশ্রী খেয়া ঘাটে নির্মানাধীন বীর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী সেতু অপর দিকে কাপাসিয়ার ফকির মজনু শাহ সেতু প্রচন্ড হুমকির মুখে এবং প্রাচীনতম বন্দরখ্যাত বরমী বাজারটিও নদী ভাঙ্গনে পড়তে পারে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা দাবী করেন। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুর রাজ্জাক বেপারী এক লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, গাজীপুর জেলার বানার নদীর বালি ইজারার ইসলামপুর, টোক নগর, উলুসারা, সিংহশ্রী মৌজার মধ্যে ২২৩ একর বালি মহাল ইজারার জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। যাহার মধ্যে ইসলামপুর, টোকনগর, উলুসারার উল্টোদিকে ময়মনসিংহ জেলার চাকুয়া, পাতলাশী, নিগুয়ারী মৌজা অবস্থিত হওয়ায় ময়মনসিংহ জেলা উক্ত মৌজাগুলিকে বালুমহাল ইজারা নীতিমালা অনুযায়ী ইজারা প্রদান করিয়া ইজারাদারকে বালি মহাল হস্তান্তর করিলে ইজারাদার বিধি মোতাবেক বালির ব্যবসা করে আসতে থাকে। গাজীপুর জেলার সাথে ময়মনসিংহ জেলার সীমানা নির্ধারণ না থাকায় উক্ত মৌজাগুলি থেকে গাজীপুর জেলা কর্তৃক নিয়োগকৃত ইজারাদার কর্তৃক বালি উত্তোলন করা সম্ভব হয় না। ইজারা বিজ্ঞপ্তিতে সিংহশ্রী মৌজার মাত্র ০৪ একর নদী মহাল হইতে গাজীপুর জেলার ইজারাদারকে বালি উত্তোলন করতে হয়। ইজারা বিজ্ঞপ্তিতে সিংহশ্রী মৌজার ১১৩ একর বালি মহাল তথ্যটি ভূল এবং এটি একটি অনৈতিক বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। সিংহশ্রী মৌজার ওই ৪ একর বালী মহাল হইতে বালি উত্তোলনের ফলে সিংহশ্রীর উল্টো দিকে অবস্থিত শ্রীপুর উপজেলার নদীর পারে আমাদের বাড়ীঘর সহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নদীর ব্যাপক ভাঙ্গনের সম্মুখীন হয়েছে। শুধুমাত্র আমার একাই প্রায় ১০ কোটি টাকার জমি নদী গর্ভে বিগত ২ বৎসরে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে অপরিকল্পিত ভাবে ইজারা নীতিমালা অমান্য করে বালি উত্তোলনের ফলে আমার বাড়ীটি ও হুমকির মুখে পড়েছে। আমার মত এমন অনেকেরই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং বসতবাড়ী ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে বিগত ৩ বৎসর আগে বানার নদীর বালি মহালটি সর্বোচ্চ ডাককারী হিসাবে ইজারা গ্রহন করলে ময়মনসিংহ জেলার সাথে গাজীপুর জেলার সীমানা নির্ধারন না থাকায় ইসলামপুর, টোকনগর, উলুসারা মৌজা হতে বালি উত্তোলন করতে না পারায় আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। বর্তমানে আমি শ্রীপুর উপজেলাধীন বরমী ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। বরমী বাজারটি একটি নদী বন্দর। নীতিমালা বহির্ভূত ইজারা প্রদানের ফলে বরমী বাজারটি ভাঙ্গনের হুমকির মুখে রয়েছে। বালি নীতিমালা বহির্ভূত ইজারা প্রদানের ফলে বরামা সিংহশ্রী সেতু ও কাপাসিয়ার ফকির মজনু শাহ সেতু দুটিই হুমকির মুখে পড়বে। কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী কর্তৃক অ-ইজারাকৃত মৌজা হইতে বালি উত্তোলনের ফলে নদীর দুইপাড়ের জনসাধারনের ক্ষতি সাধন হইতেছে। যার ফলে তহসিলদার বাদী হয়ে কাপাসিয়া থানার মামলা নং ২৫ তাং ২৮/০২/২০১৪ ইং দায়ের করেন এবং সেই সাথে বালি উত্তোলনের মেশিনপত্র জব্দ করে মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। এমতাবস্থায় যে সকল মৌজা হইতে বালি উত্তোলন করলে জনসাধারনের ক্ষতি হবে সে সমস্ত মৌজা ইজারার বাহিরে রেখে মৌজা ও বালিমহালের পরিমাণ ভূল দিয়ে ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। যাহা গাজীপুর কালেক্টরীতে রেকর্ড রুমে যাচাই করলেই প্রমানিত হবে। তাই বাস্তব উপলদ্ধি করে ভূল ও ক্ষতিকর ইজারা বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে পূনরায় সঠিক তথ্য প্রদান পূর্বক বিজ্ঞপ্তি প্রদান করা যাইতে পারে। অন্যথায় গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে জারীকৃত বালি মহাল ইজারা বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের মাধ্যমে আইনের আশ্রয় নিবেন বলে তিনি লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন।