• মঙ্গলবার , ৩০ এপ্রিল ২০২৪

কাল ‘আকাশবীণা’ উদ্বোধন করবেন হাসিনা


প্রকাশিত: ৮:৪৬ পিএম, ৪ সেপ্টেম্বর ১৮ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১১১ বার

 

বিশেষ প্রতিনিধি :  বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে যুক্ত হওয়া বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার ‘আকাশবীণা’ আগামীকাল বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আড়ম্বর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পরপরই ড্রিমলাইনারের প্রথম বাণিজ্যিক ফ্লাইট ঢাকা থেকে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। তার পছন্দেই এর নামকরণ হয়েছে ‘আকাশবীণা’।

বিমান পরিচালনা পর্যদের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল ইনামুল বারী (অব.) বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করার পর ড্রিমলাইনার আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করবে। বিমান বহরে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সংবলিত সম্পূর্ণ নতুন বোয়িং ৭৮৭ বিমান যুক্ত হয়েছে, এটি আমাদের জন্য গৌরবের। দিনে দিনে আমাদের বহরে বিমানের সংখ্যা বাড়ছে। একই সঙ্গে দেশের এভিয়েশন খাতও সমৃদ্ধ হচ্ছে। আমাদের পরিধি যেমন বাড়ছে, তেমনি সেবার মানও বেড়েছে।’

আকাশবীণায় আসন সংখ্যা ২৭১টি। এর মধ্যে বিজনেস ক্লাস ২৪টি আর ২৪৭টি ইকোনমি ক্লাস। বিজনেস ক্লাসে ২৪টি আসন ১৮০ ডিগ্রি পর্যন্ত সম্পূর্ণ ফ্ল্যাটবেড হওয়ায় যাত্রীরা আরামদায়কভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন। দু’পাশের প্রত্যেক আসনের পাশে রয়েছে বড় আকারের জানালা। একইসঙ্গে জানালার বোতাম টিপে আলো নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। জানালা ছাড়াও কেবিনেও রয়েছে মুড লাইট সিস্টেম।

প্রতিটি আসনের সামনে প্যানাসনিকের এলইডি এস-মনিটর রয়েছে। যাত্রা পথে সরাসরি ৯টি টিভি চ্যানেল দেখা যাবে। একইসঙ্গে ইন-ফ্লাইট এন্টারটেইনমেন্ট সিস্টেমে (আইএফই) থাকবে ১০০টির বেশি ক্ল্যাসিক থেকে ব্লকব্লাস্টার চলচ্চিত্র। অত্যাধুনিক বোয়িং ৭৮৭-৮ বিমানে যাত্রীদের ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য রয়েছে ওয়াইফাই সুবিধা। এছাড়া আকাশে উড্ডয়নের সময় ফোন কল করতে পারবেন যাত্রীরা।

টানা ১৬ ঘণ্টা উড়তে সক্ষম এই ড্রিমলাইনার চালাতে অন্যান্য বিমানের তুলনায় ২০ শতাংশ কম জ্বালানি লাগে। এটি ঘণ্টায় ৬৫০ মাইল বেগে উড়তে সক্ষম। বিমানটির ইঞ্জিন প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান জেনারেল ইলেক্ট্রিক (জিই)। বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হবে ইলেক্ট্রিক ফ্লাইট সিস্টেমে। কম্পোজিট ম্যাটেরিয়াল দিয়ে তৈরি হওয়ায় এই বিমান ওজনে হালকা। ভূমি থেকে বিমানটির উচ্চতা ৫৬ ফুট। দুটি পাখার আয়তন ১৯৭ ফুট। এর ককপিট থেকে টেল (লেজ) পর্যন্ত ২৩ লাখ যন্ত্রাংশ রয়েছে।

আকাশবীণা যুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৫টিতে। গত ১৯ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় আসে ড্রিমলাইনার। এই উড়োজাহাজ দিয়ে প্রাথমিকভাবে ঢাকা-সিঙ্গাপুর ও ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে বলে জানান বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও এ এম মোসাদ্দিক আহমেদ। তিনি বলেন, ‘যাত্রীদের ভ্রমণ নিরাপদ, স্বাচ্ছন্দ্য ও আনন্দময় করতে ড্রিমলাইনার নতুন মাত্রা যোগ করবে। বহরে নতুন বিমান যুক্ত হওয়ার ফলে আমাদের চলমান বিভিন্ন রুটে ফ্লাইট বৃদ্ধি ও নতুন রুটে ফ্লাইট শুরু করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সহজ হবে। এ বিমান জ্বালানি সাশ্রয়ী হওয়ায় খরচ কমবে, একইসঙ্গে মুনাফা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। সব মিলিয়ে আকাশবীণা বহরে যুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে বিমান নতুন মাইলফলক স্পর্শ করলো।’

বিমানের এমডি ও সিইও’র ভাষ্য, ‘বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ২০০৮ সালে মার্কিন বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং কোম্পানির সঙ্গে ১০টি নতুন বিমান ক্রয়ের জন্য ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ইউএস ডলারের চুক্তি করে। এর আওতায় ইতোমধ্যে বহরে যুক্ত হয়েছে ছয়টি বিমান। বাকি চারটি বিমান হলো বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার। এর প্রথমটি বিমান বহরে যুক্ত হলো। বাকি তিনটির একটি এ বছরের নভেম্বরে ও পরের দুটি আসবে আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে। এছাড়া ২০২০ সালে বোম্বারডিয়ারের তৈরি তিনটি নতুন ড্যাশ৮কিউ৪০০ উড়োজাহাজ যুক্ত হবে বিমান বহরে।