• শনিবার , ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

ধর্ষককে সহায়তায় মন্ত্রীকে ডিম’থেরাপি


প্রকাশিত: ১১:৩৪ পিএম, ১৪ নভেম্বর ২৪ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২৫ বার

 

খুলনা প্রতিনিধি : খুলনায় আদালত চত্বরে সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের ওপর ডিম নিক্ষেপ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী ও ক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় তারা পতিত স্বৈরাচারের দোসর আখ্যায়িত করে নারায়ণ চন্দ্র চন্দের শাস্তি দাবি করে করে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এ শুনানি শেষে পুলিশ নারায়ণ চন্দ্র চন্দকে কারাগারের উদ্দেশে প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় এ ঘটনা ঘটে।

দুপুর পৌনে ১টার দিকে ধর্ষণ ও অপহরণ মামলায় সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ণচন্দ্র চন্দকে ঐ আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মো. রাকিবুল ইসলাম উক্ত মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। নারায়ণ চন্দ্র চন্দকে কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মো. মোমিনুল ইসলাম।

আদালত সূত্র জানায়, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক নারীকে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ করে আসছিলেন ডুমুরিয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহম্মেদ। গত ২৭ জানুয়ারি রাতে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে ঐ নারী খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরদিন হাসপাতালের ওসিসির (ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার) সামনে থেকে কয়েকজন লোক জোরপূর্বক ভুক্তভোগীকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। অভিযুক্তরা সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের ঘনিষ্ঠ সহচর ও অনুসারী। তাদের বাঁচাতে তৎকালীন মন্ত্রী অবৈধ প্রভাব বিস্তার করায় চিকিৎসা শেষ হওয়ার পূর্বে তাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হয়।

এরপর তাকে বিভিন্ন স্থানে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে মিথ্যা বক্তব্য দিতে বাধ্য করা হয়। উক্ত ঘটনায় ধর্ষণ ও অপহরণের শিকার ঐ নারীর খালাতো ভাই পরিচয়দানকারী গোলাম রসুল বাদী হয়ে গত ৯ অক্টোবর আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-৩ এ ধর্ষণ ও অপহরণের অভিযোগ করে। পরে আদালত ঘটনাটি তদন্ত করে নগরীর সোনাডাঙ্গা থানাকে মামলা রুজু করার নির্দেশ দিলে গত ১৭ অক্টোবর ডুমুরিয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহম্মেদসহ আট জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়। সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র চন্দ্র ঐ মামলার দুই নম্বর আসামি।

এ প্রসঙ্গে, মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী মোমিনুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১টার দিকে মামলার দুই নম্বর আসামি নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ও আট নম্বর আসামি ইমরান গাজীকে খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এ হাজির করা হয়। শুনানি শেষে পুলিশ তাদের কারাগারে নেওয়ার জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শতাধিক নেতাকর্মী ও ক্ষুব্ধ জনতা নারায়ণ চন্দ্র চন্দের ওপর ডিম নিক্ষেপ করে। কয়েকটি ডিম তার গায়ে লেগে শরীরের জামা নষ্ট হয়ে যায়। এ সময় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে তাকে প্রিজন ভ্যানে তুলে আদালত চত্বর ত্যাগ করে।

তিনি আরও বলেন, আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় বাদী এতদিন বিচার পায়নি। তবে দেশে বর্তমানে আইনের শাসন কায়েম হওয়ায় নির্যাতিত নারী সঠিক বিচার পাবে বলে আশা করছি।