• শুক্রবার , ৬ ডিসেম্বর ২০২৪

ঘাতক বাসচালক জামিরকে বাঁচাতে খুলনা অঞ্চলে ধর্মঘট


প্রকাশিত: ১১:২৪ এএম, ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৭ , সোমবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৭৮ বার

jamir

খুলনা প্রতিনিধি :  ঘাতক বাসচালক জামিরকে বাঁচাতে খুলনা অঞ্চলে পরিবহন ধর্মঘটের আজ দ্বিতীয় দিন। যশোরে শনিবার দুপুরে খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা দেন বিভাগীয় আঞ্চলিক সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আজিজুল আলম মিন্টু।

মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ, সাংবাদিক মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহত হওয়ার মামলায় বাসচালক জামির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়ার প্রতিবাদে গতকাল রোববার এই ধর্মঘট শুরু হয়।

আজ ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন জেলাগুলোতে চলাচলকারী ইজিবাইক, সিএনজি অটোরিকশা এই ধর্মঘটে যোগ দিয়েছে। গতকাল রাতে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে মাইকিং করে এই যানগুলো চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের আঞ্চলিক কমিটি।

tarek-misuk munir-www.jatirkhantha.com.bdধর্মঘটের ফলে খুলনা থেকে সড়কপথে ঢাকাসহ অভ্যন্তরীণ ১৮টি পথে পরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে ওই সব এলাকায় জনদুর্ভোগ চরমে উঠেছে। নগরীর মধ্যে ইজিবাইক ও অটোরিকশা বন্ধ করে দেওয়ায় সকালে অফিসগামী যাত্রীদের চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। এর আগে গত শনিবার দুপুরে যশোরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের খুলনা বিভাগীয় আঞ্চলিক কমিটির এক সভা থেকে এ অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ঘোষণা দেওয়া হয়।

গত ২২ ফেব্রুয়ারি চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্সের বাসচালক জামির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আল মাহমুদ ফায়জুল কবির। এ ঘটনার প্রতিবাদে ওই দিন থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট শুরু করে চুয়াডাঙ্গা জেলা বাস-ট্রাক সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন।

বাসচালক জামির হোসেনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়ার পর থেকে কয়েক দিন ধরে খুলনা বিভাগের ১০ জেলার শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতেই শনিবার দুপুরে যশোর শ্রমিক ভবনে জরুরি সভায় বসেন ফেডারেশনের নেতারা। সভায় খুলনা বিভাগের ৩৪টি শ্রমিক সংগঠনের নেতারা অংশ নেন। সভা শেষে খুলনা বিভাগীয় আঞ্চলিক সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আজিজুল হক মিন্টু পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা দেন।

এর আগে সভায় বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বাস-ট্রাক সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এম জেনারেল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রিপন মণ্ডল, জেলা ট্রাক ও ট্যাঙ্কলরি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইসলাম উদ্দীন, ঝিনাইদহের শ্রমিক নেতা সাগর হোসেন, সাতক্ষীরার শ্রমিক নেতা শাহীন উদ্দীন, যশোরের মোস্তফা কামাল, কালীগঞ্জের আনোয়ার হোসেন। উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতা সাদেক আহমেদ খান, রবিউল হোসেন রবি, মোর্তজা হোসেন।

সভায় বক্তারা বলেন, বাসচালক (চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স) জামির হোসেনের মামলা ৩০৪/খ ধারায় হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা না করে বিচার হয়েছে ৩০৪/ক ধারায়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ার পরও বিশেষ মহলের চাপে তাঁকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বক্তারা। বক্তারা আরো বলেন, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশের রায় মাথায় নিয়ে শ্রমিকরা গাড়ি চালাবে না।

সভা থেকে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার দাবিতে শ্রমিক নেতাদের চাপ দিতে থাকেন শ্রমিকরা। একপর্যায়ে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে চেয়ার ছোড়াছুড়ি শুরু করেন। এ সময় মঞ্চে থাকা নেতারা সভাস্থল ছেড়ে যেতে বাধ্য হন। প্রায় ২০ মিনিট পর নেতারা ফের সভাস্থলে এসে শ্রমিকদের শান্ত করেন এবং অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।