• বৃহস্পতিবার , ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

খুলনায় শীতার্তদের কম্বল দিল বসুন্ধরা


প্রকাশিত: ১০:৪৯ পিএম, ২৪ ডিসেম্বর ২১ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৪৩ বার

খুলনা প্রতিনিধি : মহানগরী খুলনা থেকে কয়রা উপজেলার গাতিরঘেরী, হরিহরপুর বা আংটিহারা এ যেন দুর্গম সুদূর। সকাল সাড়ে ছ’টায় খুলনা শহর থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার যাত্রা করে সেখানে পৌঁছতে ঘড়ির কাটা বেলা দুটো পার হলো। প্রথমে ভাড়া করা মাইক্রো, তারপরে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় সেখানে পৌঁছান গেল। কালের কণ্ঠ শুভসংঘ খুলনা উপকূলের প্রত্যন্ত এ এলাকাটি বেছে নিয়েছিল শীতার্ত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে। এখানে শুক্রবারের সাপ্তাহিক ছুটির দিনের ছোঁয়া লাগে না। তাই নিত্য জোয়ার ভাটা আর নদী ভাঙনের সাথে লড়াই করা মানুষগুলো অপেক্ষায় ছিলেন। সাধারণত এ পথে সহসা কেউ হাটেন না। এ কারণে স্থানীয়দের চোখে ছিল বিস্ময়। কেউ তো বলেই ফেললেন, ‘আপনারা এখানে আসবেন; সেটা স্বপ্নেও ভাবিনি।’

দেশের শীর্ষ শিল্প গোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের সহযোগিতায় কালের কণ্ঠ শুভসংঘ এর উদ্যোগে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ এ চিত্র শুক্রবারের। খুলনায় কম্বল বিতরণের দ্বিতীয় দিনে উপকূলীয় কয়রায় তিনটিস্থানে ৬ শতাধিক মানুষের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ করা হয়। প্রথমে কাটকাটা ও পর্যায়ক্রমে গাতিরঘেরী, হরিহরপুর ও আংটিহারায় প্রকৃত অসহায় মানুষদের মাঝে কম্বল দেওয়া হয়। পদ্মপুকুর গ্রামের ফজলু গাজী (৬৪) আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘নদী ভাঙনে ডুইবে আছি। আয় রোজগার নেই। জমি-জমা নেই। খাস জমি ছিল তাও পানি ডোবা। কেউ খোঁজ নেয় না। তোমরা বাবারা এতদূর আইলা। কেউ তো এখানে আসে না।’হরিহরপুর গ্রামের তারাপদ মন্ডল (৭০) বলেন, ‘আমারা জোয়ার-ভাটার খ্যালায় আছি, বুড়ি আর জাগি। এই শীতে কম্বলডা কাজ করবে।’

কাঠমাছচর গ্রামের সুফিয়া বেগম বলেন, ‘কষ্ট কইরে আপানারা কম্বল দিছেন। শীতের হাতে থেইকে তো কিছুটা বাঁচবো। সবাই আমাদের জন্যি করলে আমাদের আর কষ্ট থাকতো না।’কম্বল বিতরণকালে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উত্তর বেদকাশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম কম্পানি, দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আছের আলী মোড়ল, প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম খান, কালের কণ্ঠ শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান, কালের কণ্ঠের খুলনা ব্যুরো প্রধান গৌরাঙ্গ নন্দী, নিজস্ব প্রতিবেদক কৌশিক দে, শুভসংঘের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাফি, জীবন, জেবিন, কালের কণ্ঠ শুভসংঘ খুলনা জেলা শাখার সভাপতি বিপুল কান্তি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো. আবু সাঈদ খান, সহ-সভাপতি দয়াল কৃষ্ণ সানা, কাজী মাহবুব রহমান, যুগ্ম-সাধারণ রাজীব সরকার রাহুল, সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক বিশ্বজিৎ বিশ্বাস প্রমুখ।

উত্তর বেদকাশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ অবহেলিত উপকূলের মানুষের কথা স্মরণ করেছে। এটা আমাদের জন্য আনন্দদায়ক। শুধু শীত নয়, আমাদের আপদে-বিপদে কালের কণ্ঠ শুভসংঘসহ সকলে কাছে চাই।দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আছের আলী মোড়ল প্রত্যন্ত এলাকায় অসহায় মানুষের সহায়তা প্রদানের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বেদকাশীর মানুষরা খুশী ও একই সাথে অবাক হয়েছে। আমাদের এ সহযোগিতা কিছুটা হলেও গরিব জনগোষ্ঠীর উপকারে আসবে।