• শনিবার , ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

অটোরিকশা আন্দোলন ক্রমশ বাড়ছে-আড়াই ঘন্টা অবরোধ প্রেস ক্লাব যাত্রাবাড়ী


প্রকাশিত: ১১:৪৯ পিএম, ২৪ নভেম্বর ২৪ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২২ বার

স্টাফ রিপোর্টার : অবশেষে আড়াই ঘণ্টা অবরোধের পর প্রেস ক্লাব, যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে সরে গেছেন অটোরিকশা চালকরা। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিষিদ্ধের প্রতিবাদে রোববার ২৪ নভেম্বর দুই ঘণ্টারও বেশি সময় সড়ক অবরোধের পর রাজধানীর প্রেস ক্লাব ও যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে সরে গেছেন অটোরিকশা চালকরা। দুপুর দেড়টার দিকে বিক্ষোভকারীরা প্রেস ক্লাব থেকে সরে গিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে জড়ো হন।

অন্যদিকে একই সময়ে যাত্রাবাড়ী মোড় ও কাজলা এলাকা থেকেও সরে যান তারা। এতে করে সেখানকার সড়কগুলোতে যান চলাচাল স্বাভাবিক হয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ডেমরা জোনের উপকমিশনার (ট্রাফিক) মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, বিক্ষোভকারীরা সরে যাওয়ায় যাত্রাবাড়ী এলাকায় সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে।
এর আগে রবিবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে রাজধানীর শাহবাগ, সায়েন্সল্যাব, মোহাম্মদপুর ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় শতাধিক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক সড়কে নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন। এছাড়া ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে অটোরিকশা চালকরা ছোট ছোট গ্রুপে মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে জমায়েত হন। সেখানে সড়ক অবরোধ করে সমাবেশের প্রস্তুতি নেন।

চালকদের মিছিলে মৎস্য ভবন, হেয়ার রোড ও প্রেস ক্লাবের আশপাশের এলাকায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শাহবাগ জোনের সহকারী কমিশনার শাকিল।
প্রেসক্লাবের সামনে ট্রাকের ওপর অস্থায়ী মঞ্চ বানিয়েছে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক মালিক সমিতি। সেখান থেকে দাবি আদায়ে চলছে গান-কবিতা। মাঝে মাঝে দাবি-দাওয়া তুলে ধরে বক্তব্য দিচ্ছেন মালিক ও চালকরা।

এদিকে অটোরিকশা চালকদের আন্দোলনের কারণে মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, মিরপুর ও গাবতলী সড়কে তীব্র যানজট তৈরি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন বহু মানুষ।
মোহাম্মদপুরে কিছু ট্রাক ও যানবাহন ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে চালকদের বিরুদ্ধে।

যাত্রাবাড়ীতেও চালকরা লাঠিসোঁটা নিয়ে অন্যান্য যানবাহন আটকে দিচ্ছেন। তবে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছে না।
যাত্রাবাড়ী ট্রাফিক জোনের সহকারী কমিশনার আখতারুজ্জামান দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে জানান, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিষিদ্ধ করে হাইকোর্টের দেওয়া সাম্প্রতিক নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবিতে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে কয়েকশো অটোরিকশা চালক যাত্রাবাড়ী মোড় অবরোধ করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘অবরোধের কারণে ওই এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। তবে যানজট নিরসনে ফ্লাইওভার ব্যবহার করে নতুন ডাইভারশন চালু করা হয়েছে।’

স্থানীয়রা দাবি করেছেন, বিক্ষুব্ধ চালকরা অন্যান্য কিছু যানবাহনের চালক, পথচারী ও আশপাশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আক্রমণ করেছেন।গত কয়েকদিন ধরেই টানা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকরা। এর ধারাবাহিকতায় আজ সকাল থেকে মোহাম্মদপুর ও যাত্রাবাড়ীতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন তারা। মূল সড়কে অটোরিকশা চলাচল করতে দেওয়ার দাবি করেছেন তারা।

এর আগে গতকাল সুপ্রিম কোর্টের আদেশ বাস্তবায়ন ও নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনা করে সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করতে দেওয়ার দাবি জানায় রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদ। সেইসঙ্গে সাত দফা দাবি বাস্তবায়নসহ অতিবিলম্বে ব্যাটারিচালিত রিকশার জন্য নীতিমালা বাস্তাবায়ন করার দাবি জানায় সংগঠনটি।

গত মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) হাইকোর্ট তিন দিনের মধ্যে রাজধানীর রাস্তায় ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ দেন। সেদিন রাতেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আফসানা করিম একটি ব্যাটারিচালিত রিকশার ধাক্কায় নিহত হন। এ ঘটনা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করে।

এদিকে বুধবার (২০ নভেম্বর) সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা বিক্ষিপ্তভাবে বিক্ষোভ শুরু করেন। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) এই বিক্ষোভ মহাখালী, মিরপুরসহ শহরের প্রধান সড়কগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা মহাখালী লেভেল ক্রসিং অবরোধ করেন। ফলে ঢাকা ও দেশের অধিকাংশ এলাকার সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
পরে সেনাবাহিনীর সদস্য ও পুলিশ যৌথভাবে বিক্ষোভকারীদের রেলপথ থেকে সরিয়ে দিতে অভিযান চালায়। এ সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে এবং উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। বিক্ষোভকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং আশপাশের কিছু যানবাহন, ভবন ও স্থাপনা ভাঙচুর করেন।