• শনিবার , ২৭ এপ্রিল ২০২৪

মতিঝিলে গভীর রাতে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই যুবক নিহত


প্রকাশিত: ১:৫০ এএম, ৩০ জুন ১৪ , সোমবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৭২ বার

 

 

রাজধানীর মতিঝিলে গত শনিবার গভীর রাতে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই যুবক নিহত হয়েছেন। তাঁরা হলেন মো. জাকির হোসেন ওরফে আকমল (৩০) ও রমজান আলী ওরফে শাহীন ওরফে জাবেদ (৩১)।
ডিবির দাবি, নিহত দুজন পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তবে রমজানের স্ত্রীর অভিযোগ, তাঁর স্বামীকে প্রতিপক্ষ ফোন করে ডেকে নিয়ে ডিবিকে দিয়ে হত্যা করিয়েছে। আর জাকিরের স্ত্রী বলেছেন, তাঁর স্বামীকে ভুল করে মেরে ফেলা হয়েছে। দুজনই শ্রমিক লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন বলে পরিবার দাবি করেছে।banduk-1

 
ডিবি সূত্র জানায়, শনিবার রাতে ডিবির সহকারী কমিশনার আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি দল মতিঝিল এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিল। রাত পৌনে তিনটার দিকে টিঅ্যান্ডটি স্কুল অ্যান্ড কলেজের পূর্ব পাশে মোটরসাইকেলসহ ছয়-সাতজন যুবককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ডিবির দলটি এগিয়ে যায়। ডিবি পরিচয় পেয়ে দাঁড়িয়ে থাকা যুবকেরা গুলি করতে থাকেন। ডিবির দলটিও পাল্টা গুলি করে। এই বন্দুকযুদ্ধের একপর্যায়ে দুটি মোটরসাইকেল ফেলে যুবকেরা পালিয়ে যান। এ সময় ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুজনকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। ওই দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থল থেকে দুটি মোটরসাইকেল, দুটি পিস্তল ও কয়েকটি ছোরা উদ্ধার করা হয়েছে। ওই ঘটনায় গতকাল রোববার মতিঝিল থানায় দুটি মামলা হয়েছে।
এজিবি কলোনির নৈশপ্রহরী জফুর উদ্দিন জানান, ভোররাতের দিকে তিনি বেশ কিছুক্ষণ গুলির শব্দ পেয়ে আতঙ্কে ভেতরে চলে যান। পরে পুলিশ তাঁকে ডেকে নিয়ে সাক্ষী হিসেবে কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছে।
গতকাল সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে গিয়ে দেখা যায়, এক তরুণী বুক চাপড়ে কাঁদছেন। জানা গেল, তিনি নিহত রমজানের স্ত্রী নুসরাত জাহান। পরিচয় দেওয়ার পর তিনি বলেন, শনিবার রাতে মুঠোফোনে কল পেয়ে তাঁর স্বামী বাসা থেকে বের হন। গতকাল সকালে তাঁরা জানতে পারেন, রমজান ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। মর্গে এসে তিনি লাশ শনাক্ত করেন।
নুসরাতের দাবি, তাঁর স্বামী সায়েদাবাদ-হোমনা বাস রুট শ্রমিক লীগের যুগ্ম সম্পাদক, তাঁর আসবাবের একটি দোকানও আছে। সংগঠনের এক শীর্ষস্থানীয় নেতার সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব ছিল। তাঁরাই ডিবিকে টাকা দিয়ে রমজানকে হত্যা করিয়েছেন।
জাকিরের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, রমজানের সঙ্গে তাঁর স্বামীও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে শ্রমিক লীগ করতেন। ডেমরায় তাঁর কাপড়ের দোকান আছে। তাঁর বিরুদ্ধে কোথাও কোনো মামলা ছিল না। পুলিশ ভুল করে তাঁর স্বামীকে হত্যা করেছে। জাকিরের ছয় বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে।
তবে ডিবির উপকমিশনার জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর বলেন, নিহত দুজন পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তাঁদের বিরুদ্ধে হত্যাসহ অনেক মামলা রয়েছে। শনিবার রাতেও মতিঝিল এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে তাঁদের সঙ্গে পুলিশের বন্দুকযুদ্ধ হয়।
পুলিশ জানায়, ২০০৫ সাল থেকে এ দুজনের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর ও কয়েকটি জেলার বিভিন্ন থানায় বেশ

কিছু মামলা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত একাধিক হত্যাসহ ৩৩টি মামলার তথ্য জানা গেছে। এগুলোর বেশির ভাগই ছিনতাই ও ডাকাতির মামলা। ২০১১ সালের ১ জানুয়ারি মিরপুরে অন্ধ সংস্থার মহাসচিব খলিলুর রহমান হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি রমজান।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান বলেন, নিহত দুজনের মধ্যে রমজান পুলিশের তালিকায় ‘রমজান ডাকাত’ হিসেবে পরিচিত। তাঁর বিরুদ্ধে অনেক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। নিহত জাকিরের বিরুদ্ধে চলতি বছরেই ছয়টি মামলা হয়েছে।