• শুক্রবার , ২৬ এপ্রিল ২০২৪

বিমানের এমডি কাইলের চাকরী আছে কোন খুঁটির জোরে?


প্রকাশিত: ৯:১৯ পিএম, ২৫ অক্টোবর ১৫ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৫১ বার

Kyle_Haywood-www.jatirkhantha.com.bdসাইফুর রহমান:        নানা কেলেংকারি-এক বছর ধরে ছুটিতে,হুন্ডিতে টাকা পাচার, তারপরও বিমানের এমডি কাইলের চাকরী আছে কোন খুঁটির জোরে?এ প্রশ্ন এখন দেশবাসীর।
বিমানের কাইল কেলেংকারি নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে হাজিদের লাগেজ বিড়ম্বনার মধ্যে  দিয়ে। বিমানকে লাভের মুখ দেখানোর প্রলোভন দিয়ে এমডি পদে যোগ দিয়ে লোকসান ছাড়া আর কিছুই দিতে পারেননি তিনি। অবস্থা বেগতিক দেখে নিজের বেতনের টাকা হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করে দিয়েছেন।এরপরও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি বিমান।প্রায় এক বছর ধরে তিনি ছুটিতে।নতুন করে তিনি বড় দিনের জন্যে ১২দিন ছুটির আবেদন করে ইমেইল করেছেন। তারপরও তার চাকরী থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে?

সূত্র জানায়,  বাংলাদেশ বিমানের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কাইল হেইউড এবার বাংলাদেশের হাজিদের মালামাল (লাগেজ) ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন সৌদি আরবে থাকা এক পাকিস্তানি নাগরিকের প্রতিষ্ঠানকে। বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট করতেই ওই প্রতিষ্ঠানটি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেনি। ফলে হজ শেষে দেশে ফেরার সময় মালামাল নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েন হাজিরা।বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে এমন তথ্য জানিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। কমিটি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

এদিকে এই ঘটনাসহ বেশ কয়েকটি কারণে বিমানের এমডি কাইল হেইউডের চাকরির মেয়াদ না বাড়ানোর সুপারিশ করেছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

সংসদীয় কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান জানান, কাইল হেইউড চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি বিমানের এমডি হিসেবে যোগ দেন। কাইলের সঙ্গে বিমানের চুক্তি এক বছরের। সে হিসেবে আগামী ৪ জানুয়ারি কাইলের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে।

কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, ‘বিমানের বর্তমান এমডির চুক্তির মেয়াদ নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ তাঁর পারফরম্যান্স ভালো না। এবার (হজের সময়) হাজিদের মালামাল ব্যবস্থাপনার  দায়িত্ব সৌদি আরবে এক পাকিস্তানিকে দিয়েছিলেন তিনি। যে কারণে মালামাল ব্যবস্থাপনায়  (লাগেজ হ্যান্ডেলিংয়ে) বিপত্তি ঘটেছিল। কমিটির পক্ষ থেকে আমরা জিজ্ঞেস করেছি এটা কে দিল? বিমান থেকে জানায়, কাইল হেইউড দিয়েছেন। এ বিষয়ে তদন্ত করার সুপারিশ করেছি।’

ফারুক খান বলেন, ‘সার্বিক বিষয় নজরে এনে কমিটিকে নতুন এমডি নিয়োগের প্রক্রিয়া এখন থেকেই শুরু করার সুপারিশ করা হয়েছে।’ তবে এবারের এমডি নিয়োগে বাংলাদেশ থেকে কাউকে প্রাধান্য দেওয়া হবে বলেও জানান ফারুক খান।

কাইল হেইউড এর আগে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজে কাজ করেছেন।  ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ ছাড়াও ইতিহাদ, গালফ এয়ার, এয়ার অ্যারাবিয়া, নাস এয়ারসহ বেশ কয়েকটি এয়ারলাইনসে কাজ করেন তিনি।

সংসদের স্থায়ী কমিটি সূত্রে জানা যায়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস থেকে কমিটিকে জানানো হয়েছে, কাইলের একক সিদ্ধান্তে সৌদিভিত্তিক এক পাকিস্তানি নাগরিকের প্রতিষ্ঠানকে হাজিদের লাগেজ বা মালামাল ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত ‘গ্রাউন্ড হেন্ডেলিংয়ের’ কাজ দেওয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট করতেই সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেনি ওই প্রতিষ্ঠান। ফলে চলতি হজ কার্যক্রমে মালামাল নিয়ে হাজিরা বিড়ম্বনায় পড়েছিলেন।

হাজিদের সুবিধার জন্য মক্কা ও মদিনায় তিনটি লাগেজ সেন্টার করে বিমান। এই সেন্টারগুলোর জন্য সৌদি আরবের এজেন্ট নিয়োগ করা হয়। কিন্তু হজ ফেরত অধিকাংশ হাজি সাংবাদিকদের জানান, মালামাল আনা-নেওয়া কীভাবে হচ্ছে, তা দেখার জন্য বিমানের কোনো প্রতিনিধি সেখানে ছিল না। এ সুযোগে এজেন্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা অবৈধ অর্থের বিনিময়ে বেশি ওজনের মালামালও পার করে দিচ্ছে। তারা ১০ রিয়ালের বিনিময়ে ১০টি ৩০, ৪০ ‍ও ৫০ কেজি ওজনের ব্যাগ পার করে দিয়েছে।

বিমানের এমডি কাইল প্রসঙ্গে কমিটির সভাপতি ফারুক খান জানান, তিনি সাত দিনের বদলে ১৪ দিন ছুটি কাটিয়েও চিঠি দেন না। তাঁর ছুটি এক বছরে দুই মাসেরও অধিক হয়েছে। কিন্তু কাইলের ছুটি বছরে এক মাস। কাইলের জন্য বিমানের মাসে খরচ হয় ২০ লাখ টাকা। বর্তমানে তিনি নিজ দেশে অবস্থান করছেন এবং সেখান থেকে ইমেইলের মাধ্যমে বিমান পর্ষদকে জানিয়েছেন, তিনি অসুস্থ এবং বাংলাদেশে ফিরতে পারছেন না। আর এরই মধ্যে তিনি জানিয়েছেন আগামী বড়দিনে তাঁর ১২ দিনের ছুটি প্রয়োজন।

বিমানের এমডি কাইল হুন্ডির মাধ্যমে নিজ দেশে বেতনের টাকা পাঠান এমন অভিযোগও উঠেছে। এ বিষয়টি নিয়েও কমিটিতে আলোচনা হয়েছে।