• শনিবার , ২৭ এপ্রিল ২০২৪

দিনাজপুরে হার কাঁপানো শীত-৫.১


প্রকাশিত: ১২:৩২ পিএম, ৭ জানুয়ারী ১৮ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৫৪ বার

দিনাজপুর থেকে খলিল চৌধুরী : দিনাজপুরে হার কাঁপানো শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত। সেখানে তাপমাত্রা ৫.১।  দিনাজপুরে আজ রোববার সর্বনিন্ম তাপমাতত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৫ Winter-dinajpur-www.jatirkhantha.com.bdদশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ বছরের সর্বনিম্ম তাপমাত্রা আজ এবং যা গত দু’বছরের চেয়ে সর্বোচ্চ কম। শৈত্যপ্রবাহে ঘন কুয়াশা ও প্রচণ্ড ঠান্ডায় নাকাল হয়ে পড়েছে জনজীবন।  গত ৫ দিন থেকে শৈত্যপ্রবাহে ক্রমেই নেমে আসছে তাপমাত্রা। বাড়ছে শীতের তীব্রতা। শীত জনিত বিভিন্ন রোগ-বালাই দেখা দিয়েছে । ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বোরো’র বীজতলা, আলুসহ বিভিন্ন ফসলের।

দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন জাতিরকন্ঠকে জানান, দিনাজপুরে আজ রোববার সর্বনিন্ম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ বছরের সর্বনিম্ম তাপমাত্রা আজ এবং যা গত দু’বছরের চেয়ে সর্বোচ্চ কম। ২০১৩ সালে একবার সর্ব নিন্ম তাপমাত্রা হয়েছিলো ৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।শনিবার বিকেলে দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ পর্যন্ত এটিই এই মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

জেলায় গত শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সর্বনিম্ন ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, গত বৃহস্পতিবার ছিলো (৪ জানুয়ারি) ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।একদিকে শৈত্যপ্রবাহ আর হিমেল হাওয়ায় দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলে অনুভূত হচ্ছে কনকনে শীত। তীব্র শীতে হতদরিদ্র, ছিন্নমূল ও অসহায় মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে চরমে। তীব্র শীত অনুভূত হওয়ায় ব্যহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। বিশেষ করে চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিন অতিবাহিত করছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। প্রচণ্ড শীতের কারণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হওয়ায় সন্ধ্যে হলেই দিনাজপুর শহরসহ গ্রামাঞ্চলের রাস্তা-ঘাট ফাঁকা হয়ে পড়ছে।

Winter-dinajpur-www.jatirkhantha.com.bd-1জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না মানুষ।গরম কাপড়ের অভাবে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষ। এ অবস্থায় কাজে বের হতে না পারায় পরিবার পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। অবর্ণনীয় কষ্ট ভোগ করছে তারা। খড়-কটো জ্বালিয়ে একটু তাপ নিতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। এমন দৃশ্য প্রায় চোখে পড়ছে দিনাজপুরে। বিশেষ করে বিপাকে পড়েছে বৃদ্ধ ও শিশুরা।

এদিকে শিশু ও বৃদ্ধরা শীত জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছে। নিউমোনিয়া, আমাশয়, ডায়রিয়া ও শ্বাস কষ্টসহ শীত জনিত রোগির সংখ্যা বাড়ছে।কন কনে ঠান্ডা উপেক্ষা করে কাজের সন্ধানে বের হলেও কাজ জোটাতে পারছেন না দিনমজুর শ্রেণির মানুষরা। সকালে প্রচণ্ড কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে চারদিক। দিনের মাঝামাঝি সময় সূর্যের দেখা মিললেও কমছে না শীতের তীব্রতা।

cold-www.jatirkhantha.com.bd.1সেই সাথে ৫ দিন ধরে বইছে শৈত্যপ্রবাহ।ঘন কুয়াশার কারণে সকালে ১০ গজ দূরেও কোন কিছু দেখা যাচ্ছেনা। সড়কে যানবাহন হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে।এর পরেও বাড়ছে দুর্ঘটনা। ঘন কুয়াশা ও শীতে বোরো বীজতলা, আলুসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। দিনাজপুরের সদর উপজেলা উলিপুর এলাকার কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, শীতের কারণে তার বোরো বীজতলা ও আলু ক্ষেতে ছত্রাক জাতীয় রোগ দেখা দিয়েছে। এতে বাড়তি অর্থ ব্যয় করে ফসলে ছত্রাক জাতীয় ওষুধ স্প্রে ছেঁটানো হচ্ছে।

এদিকে শীতবস্ত্রের আশায় হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষ চেয়ে আছে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল। দিনাজপুরসহ অন্যান্য এলাকার ধনাঢ্য ব্যক্তিবর্গ ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে শীতবস্ত্র নিয়ে এগিয়ে আসলে এসব ছিন্নমূল ও অসহায় মানুষের দুর্ভোগ অনেকটাই লাঘব হবে বলে মনে করেন দিনাজপুরবাসী।