• শুক্রবার , ২৬ এপ্রিল ২০২৪

জিনিয়াস রনিদের প্রশ্ন কেরামতি গুবলেট দশা!


প্রকাশিত: ২:২৩ পিএম, ২২ অক্টোবর ১৭ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১০৭ বার

 
এস রহমান : লাখ লাখ টাকায় গুবলেট অবস্থা ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা।কিন্তু প্রশ্ন ফাঁস হয়নি বলে দাবি করছে ঢাবি প্রশাসন। অন্যদিকে ঢাকা Chatroleage Rana-www.jatirkhantha.com.bdবিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসম্পাদক মহিউদ্দিন রানাসহ তিনজনকে চারদিনের রিমান্ডে নিয়ে তাদের রাখা হয়েছে রাজার হালে। ভর্তি জালিয়াত এই জিনিয়াসরাই জানে লাখ লাখ টাকায় ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা কিভাবে গুবলেট হয়েছে।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির কমিউনিকেশন ডিভাইস (মাস্টারকার্ড সদৃশ), কানে ব্যবহার করে অতিক্ষুদ্র তারবিহীন যন্ত্র ইয়ারপিস কানে লাগিয়ে মানিব্যাগে ওই মাস্টারকার্ড রেখে দিলেই অপর প্রান্ত থেকে যোগাযোগ করা সম্ভব। এর সাহায্যে প্রশ্নের সেট কোড জেনে নিয়ে পরীক্ষার্থীদের উত্তর বলে দেওয়া হতো। প্রতি পরীক্ষার্থীর সঙ্গে তাঁদের চুক্তি ছিল দুই থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত।

এসব কেরামতির নায়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ডিজিটাল জালিয়াতির অভিযোগ আটক ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক মহিউদ্দিন রানাসহ সংশ্লিষ্ঠ সিন্ডিকেট। ইতিমধ্যে এই ভর্তি জালিয়াতদের মহিউদ্দিন রানাসহ তিনজনকে চারদিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
ঢাকার অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপকমিশনার আনিসুর রহমান জানান, রিমান্ডে নেওয়া অপর দুজন হলেন ফলিত রসায়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের আবদুল্লাহ আল মামুন এবং পরীক্ষার্থী ইশরাক হোসেন রাফি। এরমধ্যে ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দিন রানা ঢাবির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির ছাত্র।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া) শারমিন জাহান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের একটি দল অমর একুশে হল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আবদুল্লাহ আল মামুন ও শহীদুল্লাহ হল থেকে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রানাকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ইলেকট্রনিক ডিভাইস গ্রহণ করে অসদুপায় অবলম্বনকারী ইশরাক আহমেদ রাফীকে ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটের পরীক্ষা চলাকালে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনজনের কাছ থেকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির কমিউনিকেশন ডিভাইস (মাস্টারকার্ড সদৃশ), কানে ব্যবহারের জন্য অতিক্ষুদ্র তারবিহীন যন্ত্র ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। এই ক্ষুদ্র ইয়ারপিস কানে লাগিয়ে মানিব্যাগে ওই মাস্টারকার্ড রেখে দিলেই অপর প্রান্ত থেকে যোগাযোগ করা সম্ভব। এর সাহায্যে প্রশ্নের সেট কোড জেনে নিয়ে পরীক্ষার্থীদের উত্তর বলে দেওয়া হতো। প্রতি পরীক্ষার্থীর সঙ্গে তাঁদের চুক্তি ছিল দুই থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত।

পরে ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দিন রানা এবং ঢাবির শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মামুন ও পরীক্ষার্থী ইশরাক আহমেদ রাফীর নামে শাহবাগ থানায় মামলা করে সিআইডি। অন্য ১২ জনকে এক মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন ঢাকা জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এদিকে বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য এবং ঘ ইউনিটের পরীক্ষার সমন্বয়কারী বলছেন, প্রশ্ন ফাঁসের দাবি অসত্য ও বিশ্বাসযোগ্য নয়। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট করার জন্য ‘অশুভ মহলের ষড়যন্ত্র’।শনিবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত সংবাদের প্রতিবাদও পাঠিয়য়েছেন ঘ ইউনিটের মূল সমন্বয়ক এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম। আর পরীক্ষা বাতিল করে আবার পরীক্ষা নেওয়ার সম্ভাবনা নাকচ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যা অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান।

জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণত পাঁচটি ইউনিটের অধীনে পরীক্ষা নেওয়া হয়। এগুলো হচ্ছে বিজ্ঞান অনুষদের অধীন ক ইউনিট, কলা অনুষদের অধীন খ ইউনিট, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধীন গ ইউনিট, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধীন ঘ ইউনিট এবং চারুকলা অনুষদের অধীন চ ইউনিট। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি অনুষদের ভর্তি পরীক্ষার প্রধান সমন্বয়কারী থাকেন সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিন। তার নেতৃত্বেই প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, পরীক্ষা গ্রহণ এবং ফলাফল প্রস্তুত করা হয়ে থাকে। যুগ্ম সমন্বয়ক থাকেন অন্তত তিনটি অনুষদের ডিন।

ভর্তি পরীক্ষার প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এমন একাধিক ডিন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন প্রণয়ন, মডারেশন এবং পদ্ধতি সম্পর্কে। তারা জানান, ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঠিক হয়ে যাওয়ার পর প্রধান সমন্বয়কারী প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য সমন্বয়ক কমিটির সভা আহ্বান করেন। যুগ্ম সমন্বয়কারীদের উপস্থিতিতে প্রশ্ন আহ্বান, মডারেশন ও চূড়ান্তকরণসহ সার্বিক বিষয়ে আলোচনা করা হয় সে সভায়।

এরপর ডিন প্রশ্নপত্রের প্রতিটি অংশের জন্য (যেমন বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ জ্ঞান বা বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন) একাধিক শিক্ষকের কাছ থেকে প্রশ্ন আহ্বান করেন। ডিন চাইলে একটি অংশের জন্য ২০ জন শিক্ষকের কাছ থেকেও প্রশ্ন নিতে পারেন। প্রশ্ন যে সংশ্লিষ অনুষদের শিক্ষকরাই করবেন এমন কোন নিয়ম নেই। বিশেষায়িত বিভাগ যেমন বাংলা, ইংরেজি অংশের প্রশ্ন ওই বিভাগের শিক্ষকরাও করতে পারেন।

নির্ধার্তিত সময়ের মধ্যে প্রশ্ন জমা পড়ার পর তা মডারেশনের জন্য কোর কমিটির মিটিং হয়। কোর কমিটিই ঠিক করে কোন কোন প্রশ্ন চুড়ান্ত প্রশ্নপত্রে থাকবে। কমিটি চাইলে এক শিক্ষকের পুরো প্রশ্নই চূড়ান্ত করতে পারেন। অথবা কয়েকজন শিক্ষকের প্রশ্ন থেকে এক বা একাধিক প্রশ্ন নিয়ে নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রশ্ন চূড়ান্ত করতে পারেন। তবে ডিন চাইলে কোর কমিটির বাইরে গিয়েও নিজের মত করে প্রশ্ন চূড়ান্ত করতে পারেন।

প্রশ্ন চূড়ান্ত হয়ে যাওয়ার পর তা টাইপ করা শুরু করে প্রেসে ছাপা হওয়ার পর নির্দিষ্ট প্যাকেট সিলগালা হয়ে কেন্দ্রে যাওয়া পর্যন্ত সবকিছুই হয় ডিনের সরাসরি তদারকিতে।সাবেক একজন ডিন বলেন প্রেসেও ডিনকে উপস্থিত থাকতে হয়। তার সঙ্গে আরও শিক্ষকরা থাকেন নজরদারির জন্য। সাধারণত প্রশ্নপত্রের ওপরের পৃষ্ঠায় কোন প্রশ্ন থাকে না বলে যারা প্রশ্ন প্যাকেট করে তাদের দেখার সুযোগ থাকে না। কিন্তু কেউ যাতে পাতা উল্টিয়ে ভেতর থেকে প্রশ্ন দেখতে না পারে সে জন্য শিক্ষকরা উপস্থিত থেকে নজরদারি করেন।

যেখানে প্রশ্ন প্যাকেট করা হয় সেখানে সিসি ক্যামেরা থাকা এবং মোবাইল ফোন সঙ্গে না নিয়ে যাওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকে এবং প্রেসে সিলগালা করা প্রশ্ন পরীক্ষার হল ছাড়া আর খোলা হয় না বলেও জানান তিনি।শুক্রবার অনুষ্ঠিত ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার মূল সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পালন করেন নবনিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম। যুগ্ম সমন্বয়কারী ছিলেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইতুল ইসলাম এবং আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ রহমত উল্লাহ। ডিনের নেতৃত্বে কোর কমিটিতে ছিলেন ‍লোক প্রশাসন বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক আখতার হুসাইন এবং অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক নাজমা বেগম।

ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার পর ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার মূল সমন্বয়কারীর দায়িত্বে ছিলেন সাবেক ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক এ জেএম শফিউল আলম ভূঁইয়া। পরে ডিন পরিবর্তন হলে মূল সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পান অধ্যাপক সাদেকা হালিম। ঘ ইউনিটের পরীক্ষা হয়েছে চারটি বিষয়ের মোট ১০০টি প্রশ্নে। প্রতিটি প্রশ্নে ১.২০ নম্বর করে মোট নম্বর ছিল ১২০। এই প্রশ্নে বাংলা ইংরেজি, সাধারণ জ্ঞান (বাংলাদেশ) ও সাধারণ জ্ঞান(আন্তর্জাতিক) এই চারটি বিষয় থেকে সমমানের সমান সংখ্যক প্রশ্ন করা হয়।

নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার আগে সমন্বয় কমিটির এক বা একাধিক সভা হওয়ার কথা থাকলেও নতুন ডিন প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব নেওয়ার পরে এ কমিটির কোন সভা হয়নি। প্রশ্নপত্র মডারেশন, চূড়ান্তকরণসহ কোন পর্যায়েই যুগ্ম সমন্বয়কারীদের কাউকে ডাকা হয়নি বলে দায়িত্বশীল সূত্রে নিশ্চিত করেছে জাতিরকন্ঠকে।অন্যতম যুগ্ম সমন্বয়কারী আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ রহমত উল্ল্যাহ বলেন: আমাদের কোন সভায় ডাকা হয়নি। প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, মডারেশন, চূড়ান্তকরণ কোন পর্যায়েই আমাদের ডাকা হয়নি।

প্রশ্ন ফাঁসের নমুনা–

পরীক্ষার অন্তত আট ঘণ্টা আগেই প্রশ্ন ফাঁস হয়ে যায় বলে প্রমাণসহ একাধিক সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করে। শুক্রবার সকালে অনুষ্ঠেয় পরীক্ষার আগের রাত দুইটা থেকে সাংবাদিকসহ কয়েকজনের কাছে ইমেইলে প্রশ্নপত্রের ইংরেজি অংশের প্রশ্ন আসে। পরীক্ষার পর মূল প্রশ্নের সঙ্গে আগে রাতে পাওয়া প্রশ্নের হুবহু মিল পাওয়া যায়।

এর ফলে কেই কেই ৩০ মিনিটেই উত্তর শেষ করে ফেলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জুনিয়র শিক্ষক বলেন, আমার যে কেন্দ্রে দায়িত্ব পড়েছিল ৩০ মিনিট না যেতেই দেখি এক শিক্ষার্থী বসে আছে। আমি ভাবলাম হয়তো পারছে না বলে বসে আছে। কাছে গিয়ে তার খাতা উল্টে দেখি সে পুরো ১০০টা বৃত্ত ভরাট করে ফেলেছে। আমি যতগুলো দেখেছি তার সবগুলোই সে সঠিক উত্তর দিয়েছে।

‘আগে থেকে প্রশ্ন না পেয়ে থাকলে এত অল্প সময়ে সবগুলো বৃত্ত ভরাট করা অসম্ভব। তাই আমি ওই শিক্ষার্থীর রোল নম্বরের ছবি তুলে নিয়ে এসেছি। শুধু সেই নয়, আমার কেন্দ্রে আরও ৫-৬ জনকে দেখেছি অল্প সময়ের মধ্যেই সবগুলো বৃত্ত ভরাট করে ফেলেছে।ওই শিক্ষককে আরও বলতে শোনা যায়, আমার ধারণা যারা প্রশ্ন পায়নি তাদের মধ্যে কেউ চান্স পাবে না। আর যারা পেয়েছে তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হবে কার স্কোর ভালো, ভর্তি পরীক্ষার নম্বরে নয়।

প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের পরেও –
ঘ ইউনিটের পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার পরে, এই ইউনিটসহ বিভিন্ন সরকারি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন জালিয়াতির অভিযোগ থাকায় মুনির হোসেন নামের এক সহকারী রেজিস্ট্রারকে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের দায়িত্ব থেকে বদলির জন্য নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের কাছে লিখিত সুপারিশ করেছিলেন তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত ডিন এবং ঘ ইউনিটের মূল সমন্বয়কারী অধ্যাপক ড. শফিউল আলম ভুঁইয়া।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের দায়িত্বে থাকা ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিমান বাহিনীর নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন জালিয়াতি , গত বছরে ঢাবির ‘ঘ’ ইউনিট এবং চলতি বছর জনতা ব্যাংকসহ কয়েকটি সরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল।কিন্তু ওই কর্মকর্তাকে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের দায়িত্ব থেকে এখনও বদলি করা হয়নি। এর কিছুদিন পর অবশ্য ডিন পরিবর্তন হয়ে শফিউল আলম ভুঁইয়ার জায়গায় দায়িত্ব পান অধ্যাপক সাদেকা হালিম। পদাধিকার বলে ঘ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষার মূর সমন্বয়কের দায়িত্বও পান তিনি।

এদিকে ব্যাপক হারে প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবর প্রমাণসহ গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর বিভিন্ন মহল থেকে দাবি ওঠে এই পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় গ্রহনের জন্য। কিন্তু পরীক্ষা বাতিলের সম্ভাবনা নাকচ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যা অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান। উপাচার্য বলেন, ‘ঘ’ ইউনিটের প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে সেটা আমিও জানি। তবে সেটা সকাল দশটার পর; আগের রাতে নয় কোনভাবেই।

তিনি বলেন, শুক্রবার বেলা দুইটার আগে এক সাংবাদিকের মাধ্যমে আমি প্রথম শুনি যে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। এর আগে আমার কাছে কেউ বলেনি, অভিযোগও করেনি। তাই আমরা মনে করছি এটা একটা অশুভ মহলের ষড়যন্ত্র। তাই পরীক্ষা বাতিল করে নতুন করে গ্রহণের কোন প্রশ্নই আসে না।

‘আমি তথ্য-প্রযুক্তিবিদদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা আমাকে বলেছে, প্রযুক্তির সাহায্যে সময়সহ এরকম আরও অনেক কিছু ম্যানিপুলেশন করা সম্ভব। তারপরও কারা এসব কাজ করছে বা গুজব ছড়াচ্ছে তাদের তাদের খুঁজে বের করা হবে।’ওদিকে পরীক্ষা চলাকালীন অসদুপায় অবলম্বনের জন্য বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে ১৩ জন এবং আগের রাতে দু’জনসহ মোট ১৫ জনকে আটক করা হয়। এর মধ্যে ১২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত।