• শনিবার , ১৮ মে ২০২৪

সিটি নির্বাচনে ৪২ জন প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত


প্রকাশিত: ১০:২৯ পিএম, ২৯ এপ্রিল ১৫ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩৭ বার

19183_1---------------স্টাফ রিপোর্টার.ঢাকা: সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী প্রদত্ত ভোটের এক অষ্টমাংশ অপেক্ষা কম ভোট পেলে জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার বিধান রয়েছে। সদ্য সমাপ্ত তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মাঠে অনেকেই ঝড় তুললেও তাদের জামানত রক্ষা হয়নি। মূলত: প্রধান দু’দলের বাইরে অন্য কোন প্রার্থীর জামানত রক্ষা হয়নি। ফলে তিন সিটি করপোরেশনের ৬জন প্রার্থীর বাইরে বাকি সকলের জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে। এ হিসেবে তিন সিটি করপোরেশনের প্রার্থীদের ২৬ লাখ টাকা জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে।

নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী, কোনো সিটি করপোরেশনে ভোটার সংখ্যা ২০ লাখের কম হলে মেয়র প্রার্থীদের ৫০ হাজার টাকা এবং ২০ লাখের বেশি ভোটার হলে ১ লাখ টাকা জামানত দিতে হয়। কাম্য সংখ্যক ভোট না পাওয়ায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৪ প্রার্থীর ১ লাখ টাকা করে, দক্ষিণের ১৮ প্রার্থীর ৫০ হাজার টাকা করে এবং চট্টগ্রামের ১০ প্রার্থীর ৫০ হাজার টাকা করে মোট ২৬ লাখ টাকা বাজেয়াপ্ত হচ্ছে।

নির্বাচন কমিশনের উপ-সচিব শামসুল আলম জানিয়েছেন, কাম্য সংখ্যক ভোট না পাওয়ায় সর্বমোট ৪২ জন প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। তার দেয়া তথ্য মতে, নিকট অতীতের কোন নির্বাচনে এতো বেশি সংখ্যক প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার রেকর্ড নেই। তিনি জানান, এ নির্বাচনে মাত্র ৬ জন প্রার্থীকে তাদের জামানত ফেরত দিতে হবে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনে মোট প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ৮ লাখ ৭৪ হাজার ৫৮টি। জামানত রক্ষা করতে হলে ভোট পেতে হবে ১ লাখ ৯ হাজার ২৫৭টি ভোট। বিজয়ী আনিসুল হক ও প্রতিদ্বন্দ্বী তাবিথ আউয়াল ছাড়া আর কেউ এমন সংখ্যক ভোট পাননি। ফলে উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে অংশ নেয়া ১৬ প্রার্থীর মধ্যে ১৪ প্রার্থীই তাদের জামানত হারিয়েছেন। যার মাঝে বহুল আলোচিত বিকল্পধারার মাহী বি চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকী, জাসদের নাদের চৌধুরী এমনকি জাতীয় পার্টির বাহাউদ্দিন আহমেদ বাবলুও রয়েছেন।

উত্তরে আরও যাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে তারা হলেন- আবদুল্লাহ আল ক্বাফী, এ ওয়াই এম কামরুল ইসলাম, কাজী মো. শহীদুল্লাহ, চৌধুরী ইরাদ আসাদ সিদ্দিকী, নাদের চৌধুরী, মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিশ, মো. আনিসুজ্জামান খোকন, মো. জামান ভূঁইয়া, মো. শামসুল আলম চৌধুরী, ফজলে বারী মাসউদ ও শেখ শহিদুজ্জামান। এদের মধ্যে মাহী বি. চৌধুরী পেয়েছেন ১৩৪০৭, জোনায়েদ সাকি ৭৩৭০, ক্বাফি রতন ২৪৭৫, বাহাউদ্দিন আহমেদ বাবুল ২৯৫০ ভোট। অন্যদের মধ্যে অনেকেই চার অংকের ভোট পাননি।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ৯ লাখ ৫ হাজার ৪৮৪টি। জামানত রক্ষার জন্য ভোট পাওয়ার প্রয়োজন ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ১৮৫ ভোট। বিএনপির মির্জা আব্বাস ও আওয়ামী লীগের সাঈদ খোকন ছাড়া কোনো প্রার্থীই লাখের ঘর অতিক্রম করতে পারেননি। ফলে ২০ প্রার্থীর মধ্যে ১৮জনই জামানত হারিয়েছেন। যার মধ্যে জাতীয় পার্টির সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন পেয়েছেন মাত্র ৪৫১৯ ভোট। বহুল আলোচিত সংসদ সদস্য গোলাম মওলা রণি পেয়েছেন ১৮৮৭ ভোট, বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত আসাদুজ্জামান রিপন পেয়েছেন ৯২৮ভোট।

এছাড়া আরও যাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে তারা হলেন, ফ্লাস্ক প্রতীকে আব্দুর রহমান ১৪,৭৮৪ ভোট, চরকা প্রতীকে আবু নাছের মোহাম্মদ মাসুদ হোসাইন ২,১৯৭ ভোট, টেবিল ঘড়ি প্রতীকে রেজাউল করিম চৌধুরী ২,১৭৩ ভোট, জাহাজ প্রতীকে শাহীন খান ২,০৭৪ ভোট, বাস প্রতীকে শহীদুল ইসলাম ১,২৩৯ ভোট ও টেবিল প্রতীকে সিপিবি-বাসদের বজলুর রশীদ ফিরোজ ১,০২৯ ভোট পেয়েছেন। ল্যাপটপ প্রতীকে জাহিদুর রহমান ৯৮৮ ভোট, ক্রিকেট ব্যাট প্রতীকে এ এস এম আকরাম ৬৮২ ভোট, হাতি প্রতীকে দিলীপ ভদ্র ৬৬৯ ভোট, কেক প্রতীকে আব্দুল খালেক ৫৫০ ভোট, ময়ূর প্রতীকে শফিউল্লাহ চৌধুরী ৫১২ ভোট, চিতা বাঘ প্রতীকে মশিউর রহমান ৫০৮, লাউ প্রতীকে মো. আকতারুজ্জামান ওরফে আয়াতুল্লাহ ৩৬২ ভোট, ঈগল প্রতীকে আয়ুব হোসেন ৩৫৪ ভোট এবং শার্ট প্রতীকে বাহরানে সুলতান বাহার ৩১৩ ভোট পেয়েছেন।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ৮ লাখ ৬৮ হাজার ৬৬৩টি। জামানত রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ভোট ছিল ১ লাখ ৮ হাজার ৫৮৩ ভোট। আ. জ. ম. নাছির উদ্দিন ও মোহাম্মদ মনজুর আলম ছাড়া বাকি ১০ প্রার্থীর কোনো প্রার্থী প্রদত্ত ভোটের এক অষ্টমাংশ ভোট পাননি। যারা জামানত হারাচ্ছেন তারা হলেন, চরকা প্রতীকে ইসলামী ফ্রন্টের এম এ মতিন ১১,৬৫৫ ভোট, টেবিল ঘড়ি প্রতীকে ওয়ায়েজ হোসেন ভূঁইয়া ৯,৬৬৮ ভোট, ডিশ অ্যান্টেনা প্রতীকে জাতীয় পার্টি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী সোলায়মান আলম শেঠ ৬,১৩১ ভোট, ময়ূর প্রতীকে ইসলামিক ফ্রন্টের হোসাইন মোহাম্মদ মুজিবুল হক শুক্কুর ৪,২১৫ ভোট, ফ্লাক্স প্রতীকে সাইফুদ্দিন আহমেদ রবি ২,৬৬১ ভোট এবং টেলিস্কোপ প্রতীকে গাজী মো. আলাউদ্দিন ২,১৪৯ ভোট পেয়েছেন। বাস প্রতীকে বিএনএফের আরিফ মঈনুদ্দিন ১,৭৭৪ ভোট, দিয়াশলাই প্রতীকে আবুল কালাম আজাদ ১,৩৮৫ ভোট, ক্রিকেট ব্যাট প্রতীকে সৈয়দ সাজ্জাদ জোহা ৮৪৫ এবং মাছ প্রতীকে শফিউল আলম ইলিশ ৬৮০ ভোট পেয়েছেন।