• শুক্রবার , ১৭ মে ২০২৪

রাষ্ট্রপতির দুঃখ


প্রকাশিত: ৯:০৮ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর ১৪ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৫৬ বার

 

আবদুল হামিদ তিন দিনের জন্য হাওর ভ্রমণে বের হয়েছেন। আজ সকালে অষ্টগ্রাম থেকে রওনা হয়ে জন্মভূমি মিঠামইনে পৌঁছান তিনি। সেখানে এলাকাবাসীর উদ্দেশে বক্তব্য দেন। ছবি: প্রথম আলো 

 

 

 

 

 

 

 

 

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) ও নিকলী প্রতিনিধি :

হাওরের সৌন্দর্য ও বিশালতা উপভোগ করতে আজ বৃহস্পতিবার সকাল আটটার দিকে নৌযানে করে বেরিয়ে পড়েন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

এ সময় তিনি অনেকটা স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন এবং রাষ্ট্রপতি হওয়ার কারণে মুক্তভাবে ঘুরতে না পারায় সফরসঙ্গীদের কাছে আক্ষেপ প্রকাশ করেন।

আবদুল হামিদ গতকাল বুধবার থেকে তিন দিনের হাওর ভ্রমণে বের হন। আজ সকালে অষ্টগ্রাম থেকে রওনা হয়ে জন্মভূমি মিঠামইনে পৌঁছান দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে। এ সময় তাঁকে স্বাগত জানান তাঁর ছেলে স্থানীয় সাংসদ রেজুয়ান আহমেদ, কিশোরগঞ্জ-৩ আসনের সাংসদ সোহরাব উদ্দিন, কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ আফজাল হোসেন, সেনাপ্রধান ইকবাল করিম ভূইয়া ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এরপর তিনি পুরাতন ডাকবাংলো মাঠে এলাকাবাসীর উদ্দেশে বক্তব্য দেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বর্ষায় হাওরের সৌন্দর্য অন্য রকম। আর এখন চাইলেও সেই সৌন্দর্য দেখতে আসতে পারি না। ডেপুটি স্পিকার ও সংসদ উপনেতা থাকাকালেও আসতে পেরেছি। স্পিকার হবার পর কিছুটা কমে গেছে। আর রাষ্ট্রপতি হয়ে আসার সুযোগ হারিয়েছি।

অথচ এই হাওরের পানির স্পর্শ নিয়ে শিশুকাল থেকে শুরু করে আজকের এই পর্যায়ে এসেছি। সাঁতরে কত না হাওর পাড়ি দিয়েছি। সেদিনগুলোর কত না স্মৃতি, কত ঘটনা। আজ সবই ইতিহাস।’রাষ্ট্রপতি জানান, অষ্টগ্রাম থেকে মিঠামইন আসার পথে তিনি তাঁর সফর সঙ্গীদের সেসব স্মৃতির কথা জানিয়েছেন।

হাওরের সৌন্দর্য ও বিশালতা আঙুল দিয়ে দেখিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করেছেন। প্রাকৃতিকভাবে কত বৈরী পরিস্থিতি মোকাবিলা করে হাওরবাসীকে টিকে থাকতে হয়, তা-ও বলেছেন। হাওরের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন করতে না পারার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সারা জীবন হাওর উন্নয়নের চেষ্টা করেছি। সাধ থাকলেও সাধ্যের অভাবে মনের মতো সবকিছু করা হয়ে ওঠেনি।’

 

president-www.jatirkhantha.com.bdরাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আজ আমার অনেক বন্ধু-বান্ধব বেঁচে নেই। আমিও বৃদ্ধ হয়ে গেছি।’ চলার পথের ভুলগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, এবার তিনি হজে যাচ্ছেন। এই জন্য তিনি জন্মস্থানের মানুষের কাছে দোয়া কামনা করেন।

সামরিক-বেসামরিক সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমার আসাকে কেন্দ্র করে প্রায় ৮০০ সামরিক-বেসামরিক সদস্যকে হাওরে অবস্থান করতে হচ্ছে। থাকা, খাওয়ার কষ্ট হচ্ছে।’

এদিকে অষ্টগ্রাম থেকে মিঠামইনে আসার পথে রাষ্ট্রপতিকে একনজর দেখতে হাওরপাড়ে ভিড় করেন নারী-পুরুষেরা। রাষ্ট্রপতি হাত নেড়ে তাঁদের শুভেচ্ছা জানান।

 

বিকেলে তিনি মিঠামইন মুক্তিযোদ্ধা আ. হক কলেজ গিয়ে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে গল্প করে সময় কাটান। সন্ধ্যায় তিনি গ্রামের বাড়ি কামালপুরে যাবেন। পরদিন শুক্রবার সকালে বাড়ির পাশের ঘোড়াউত্তা নদীতে পোনামাছ অবমুক্ত করে ইটনার উদ্দেশে রওনা হবেন।

 

রাষ্ট্রপতি কিশোরগঞ্জ-৪ (অষ্টগ্রাম, ইটনা, মিঠামইন) আসন থেকে সাতবার সাংসদ নির্বাচিত হন। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তিনি এই নিয়ে চারবার হাওর উপজেলায় আসেন। ইটনা থেকে পরদিন শনিবার যাবেন কিশোরগঞ্জে। রোববার তিনি বঙ্গভবনে ফিরে যাবেন।