• রোববার , ৫ মে ২০২৪

মিথ্যাচার অপপ্রচারে বিভ্রান্ত নয়-নির্বাচনে কোন ষড়যন্ত্র হতে দেবনা-জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী


প্রকাশিত: ৯:৪৯ পিএম, ৬ জানুয়ারী ২৩ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৪৫ বার

বিশেষ প্রতিনিধি : সরকারের বর্তমান মেয়াদ শেষে একটি প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের প্রত্যাশা জানিয়ে কোনো ধরনের ‘মিথ্যাচার আর অপপ্রচারে’ বিভ্রান্ত না হতে দেশবাসীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, নির্বাচন সমানে রেখে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি আবারও মাঠে নেমেছে। নির্বাচনের এক বছর বাকি থাকতেই ‘স্বাধীনতাবিরোধী’ গোষ্ঠীর সরব তৎপরতা শুরু হয়েছে, যাদের লক্ষ্য ঘোলাটে পরিস্থিতি সৃষ্টি করে পিছনের দরজা দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করা।তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জণগণের শক্তিতে বিশ্বাসী। নির্বাচনে জিতলে সরকার গঠন করবে, আর না জিতলে জনগণের কাতারে গিয়ে দায়িত্ব পালন করবে। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে কোন ষড়যন্ত্র হতে দেবে না।

শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সরকার গঠনের চার বছরপূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি আহবান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সাল থেকে টানা ক্ষমতায় আছে বর্তমান সরকার। ভাষণে তার সরকারের উন্নয়নের সাফল্যের কথা উল্লেখ করে বলেন, স্বাধীনতা থেকে শুরু করে দেশের মহৎ ও বৃহৎ অর্জনগুলো আওয়ামী লীগ সরকারের হাত ধরেই অর্জিত হয়েছে।

পুর্ববর্তী সরকারগুলোর তুলনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,দেশ আজ খাদ্যে সয়ংসম্পুর্ণ। ঘরে ঘরে পৌঁছেছে বিদ্যুৎ, বেড়েছে বিনিয়োগ। স্বপ্লোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীর দেশের কাতার আজ দেশ। এখন আর কেউ বাংলাদেশকে দুর্যোগের দেশ বলেনা। বলে উদীয়মান অর্থনীতির দেশ। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন পুরণের পর এখন লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। সে জন্য তরণদের গড়ে তোলা হচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর আমাদের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার সুফল আজ জনগণ পেতে শুরু করেছে। গত ১৪ বছরে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হয়েছে। বাংলাদেশকে আজ আর কেউ বন্যা, খরা, দুর্যোগের দেশ হিসেবে দেখেন না। বাংলাদেশ এখন উদীয়মান অর্থনীতির দেশ। উন্নয়নের রোল মডেল।

তিনি বলেন, ২০০৯ সালে আমরা যখন সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখনও বিশ্বব্যাপী মন্দা অবস্থা চলছিল। চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম ছিল আকাশচুম্বী। অন্যদিকে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ছিল নিম্নমুখী। বিদ্যুতের অভাবে দিনের পর দিন লোডশেডিং চলতো। গ্যাসের অভাবে শিল্পকারখানার মালিকেরা যেমন হাহাকার করতো, তেমনি চুলা জ্বলত না মানুষের বাড়িতে। এমন এক অর্থনৈতিক দুরবস্থার মধ্যে আমরা সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিই। নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে আমরা রূপকল্প-২০২১ প্রণয়ন করি এবং জনগণের সামনে তুলে ধরি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রূপকল্প ২০২১-এর পর আমরা রূপকল্প ২০৪১ এবং বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ প্রণয়ন করেছি। রূপকল্প ২০২১-এ আমরা অন্যান্য লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পাশাপাশি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলাম। আজকে সন্তুষ্টচিত্তে বলতে পারি, আমরা সে প্রতিশ্রুতি পূরণে সক্ষম হয়েছি।

তিনি বলেন, আমরা নানা প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ সম্পন্ন করেছি। এই সেতু দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলাকে সড়ক পথে ঢাকা এবং অন্যান্য জেলার সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত করেছে। গত ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে আমরা যোগাযোগের ক্ষেত্রে আরেকটি মাইলফলক স্পর্শ করেছি। কিছুদিনের মধ্যেই শুধু বাংলাদেশে নয়, চট্টগ্রামে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম পাতাল সড়ক- বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনের মাধ্যমে আরেকটি মাইলফলক স্থাপিত হবে। পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। আমরা ২০১৮ সালের মে মাসে মহাকাশে নিজস্ব স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করেছি।
শেষে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে সবার মুখে হাসি ফোটাতে কাজ করার আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।