• শনিবার , ১৮ মে ২০২৪

বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুর অকৃত্রিম বন্ধু ফিদেল ক্যাস্ত্রো চলে গেলেন


প্রকাশিত: ৭:৩৫ পিএম, ২৬ নভেম্বর ১৬ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২০৪ বার

ডেস্ক রিপোর্টার  :  আজ ২৬ নভেম্বর, বিদায় নিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই অকৃত্রিম বন্ধু ফিদেল ক্যাস্ত্রো। bangobandu-fidel-kastro-www-jatirkhantha-com-bdবিপ্লবী নেতা ফিদেল ক্যাস্ত্রো সারা বিশ্বের বিপ্লবী মানুষের সঙ্গী ছিলেন। যেখানেই অত্যাচার হয়েছে তার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করেছেন এই বিপ্লবী। বিপ্লবের জন্য বলিভিয়ায় জীবন দিয়েছিলেন চে গুয়েভারা। অন্যদিকে নিজ দেশের নাগরিকদের বিপ্লবের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ফিদেল ক্যাস্ত্রো।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে (তৎকালীন বিশ্বে গেরিলা যুদ্ধে) সমর্থন ছিল কিউবার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা ফিদেল ক্যাস্ত্রো’র। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আলজেরিয়ায় জোট বিরোধী সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যোগ দিলে বিষয়টি আরো স্পষ্ট করে জানান কিউবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা ক্যাস্ত্রো। fidel-kastro-www-jatirkhantha-com-bd

স্বাধীনতা আন্দোলনে সরাসরি নেতৃত্ব দেয়া দুই নেতার আলোচনার পর ফিদেল ক্যাস্ত্রো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হয়ে বলেন, আমি হিমালয় দেখেনি। কিন্তু আমি শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্যক্তিত্ব ও সাহসে তিনি হিমালয়। আমিও তাদের মধ্যে একজন, যে এই হিমালয়কে দেখেছি।

বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে এ সময় তার সখ্যতা গড়ে ওঠে। ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট যখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পরিবার সহ হত্যা করা হয়, তখন ফিদেল ক্যাস্ত্রো বেশ দুঃখ নিয়ে বলেন, ‘শেখ মুজিবের মৃত্যুতে বিশ্বের শোষিত মানুষ হারাল তাদের একজন মহান নেতাকে, আমি হারালাম একজন অকৃত্রিম বিশাল হৃদয়ের বন্ধুকে।
বিপ্লবী ফিদেল ক্যাস্ত্রোর অজানা অধ্যায়-
f
৯০ বছর বয়সে মারা গেলেন কিউবার বিপ্লবী নেতা ও সাবেক সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিদেল ক্যাস্ত্রো। ১৯২৬ সালের ১৩ আগস্ট উত্তর-পশ্চিম স্পেনে বাবার ফার্মে জন্ম গ্রহণ করেন তিনি। দীর্ঘ অর্ধশত বছরের বেশি নিজ দেশের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ফিদেল ক্যাস্ত্রো। বাংলাদেশের স্থানীয় সময়ে আজ শনিবার সকালে মারা গেছেন তিনি।

ফিদেল আলজেন্দ্রো ক্যাস্ত্রো রুস সকলের কাছে পরিচিত ফিদেল ক্যাস্ত্রো নামে। তার নেতৃত্বে ১৯৫৯ সালে কিউবার বিপ্লবীরা দেশটির যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত একনায়ককে ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করে। এরপর প্রায় অর্ধ-শতাব্দী ধরে কিউবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব থেকে কিউবাকে বের করে নিয়ে এসে বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করার কারণে দেশটির অনেকেই তাকে গভীর শ্রদ্ধা করেন। প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ফিদেল ক্যাস্ত্রো দেশের অর্থনীতিকে জাতীয়করণ করেছিলেন এবং প্রায় একাই দেশ শাসন করেছিলেন।

স্বাস্থ্যগত কারণে ২০০৮ সালে আরেক বিপ্লবী নেতা ছোটভাই রাউল ক্যাস্ত্রোর (৮৫) কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন তিনি।
fidel-kastro-www-jatirkhantha-com-bd-jpg
এক নজরে ফিদেল ক্যাস্ত্রো-

১৯২৬: এ বছর আগস্ট মাসের ১৩ তারিখে উত্তর-পশ্চিম স্পেনে বাবার ফার্মে জন্ম নেন ক্যাস্ত্রো।
১৯৫৩: বাতিস্তা সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে বিদ্রোহের জন্য তাকে জেলে প্রেরণ করা হয়।
১৯৫৫: শান্তি চুক্তির মাধ্যমে জেল থেকে ছাড়া পান ক্যাস্ত্রো।
১৯৫৬: চে গুয়েভারাকে সঙ্গে নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ শুরু করেন।
১৯৫৯: বাতিস্তা সরকারের পতন এবং কিউবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ।
১৯৬০: যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টেলিজেন্স সিআইএ-এর সহায়তায় কিউবার বিরুদ্ধে চলা ‘বে অব পিগস’ ষড়যন্ত্র মোকাবেলা।
১৯৬২: কিউবায় সোভিয়েত রাশিয়া মিসাইল স্থাপন করতে যাচ্ছে বলে ঘোষণা দিয়ে চমক সৃষ্টি করেন।
১৯৭৬: কিউবার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন।
১৯৯২: কিউবার রিফুজি বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে সঙ্গে সমঝোতা করেন।
২০০৮: স্বাস্থ্যগত কারণে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে দাড়ান।