• সোমবার , ৬ মে ২০২৪

বাংলাদেশকে ভালবাসেন নিউজিল্যান্ডের ভাবী


প্রকাশিত: ১০:০৩ পিএম, ২০ ফেব্রুয়ারি ১৯ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২০৪ বার

 

ডেস্ক রিপোর্টার : বাংলাদেশকে ভালবাসেন নিউজিল্যান্ডের ভাবী! কথাটি দারুণ সত্য। ক্রাইস্টচার্চে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ওয়ানডে’তে কথা হয় তার সঙ্গে। দায়িত্বরত কিউই নারী পুলিশ অফিসার বাংলাদেশী সাংবাদিকদের দেখে বললেন,‘কেমন আছ? আমি বাংলাদেশকে ভালোবাসি?’ নাদনী ভিকারস নামের সেই অফিসার জানায় তার ভালাবাসা’র কাহিনী।

শুরুটা ২০১৩ সালে। সেবার রথ দেখা আর কলা বেচার মতো ঘটনা ঘটে তার জীবনে। টাঙাইলের মধুপরে একটা হেলথ কেয়ারের প্রজেক্টের কাজে এসেছিলেন। শখ ছিল ফাঁকে কিছুটা ঘুরেও বেড়াবেন বাংলাদেশ। তা করতে গিয়ে পরিচয় হয়ে যায় স্থানীয় তরুণ রতন বর্মণের সঙ্গে। মায়ায় বাধা পড়ে যান তখনই। পরে বিয়েও করেন তারা।

নাদনী বললেন, ২০১৩ সালে আরও তিনজন কিউইর সঙ্গে ছুটিতে বাংলাদেশে গিয়েছিলাম। একই সময়ে কৈলাকুরি হেলথ কেয়ার প্রজেক্টের কাজও ছিল। একজন কিউই চিকিৎসক ১৯৮০ সালে ওখানকার দরিদ্রদের জন্য একটি হাসপাতাল চালু করেছিলেন। আমি এই হাসপাতালের চিকিৎসকদের সহায়তা করতে এসেছিলাম, বিশেষ করে নিউজিল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে দাতাদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ ছিল মূল কাজ। আমার স্বামী রতন সেখানে দোভাষী হিসেবে কাজ করছিল। সেই আমাকে বাংলা শেখায়। প্রথম পরিচয়ের বছর চারেক পরে ২০১৭ সালে নাদনী রতনকে বিয়ে করেন। ওই বছর তারা নিউজিল্যান্ডেও চলে আসেন। নাদনী যোগ দেন সেখানকার পুলিশ বিভাগে, রতন ক্রাইস্টচার্চেই পেয়ে চান চাকরি।

ইংরেজির চেয়ে এখন ঝরঝরে বাংলায় কথা বলতেই বেশ স্বচ্ছন্দ নাদনী। তবে সেই শেখার শুরুটা খুব সহজ ছিল না বলেও জানান তিনি, ‘শুরুতে বাংলা শেখাটা কঠিন ছিল, ডাক্তার ভাই আমাকে সাহায্য করেন, স্থানীয়দের কাছ থেকেও সহায়তা পাই। শুরুতে ধুঁকলেও ছয় থেকে আট মাসে বাংলা বলাটা পুরোপুরি আয়ত্তে এসে গেছে। বাংলাদেশে ভ্রমণের আগে এখানকার ভাষা, সংস্কৃতি, সমাজ, রাজনীতি সম্পর্কে কোন ধারণা ছিল না এই কিউই নারী পুলিশ অফিসারের।

আলাদা দেশ, আলাদা ধর্ম, আলাদা ভাষা-সংস্কৃতির মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পরিণতের পথটা যে একদম সহজ ছিল না নয়। নাদনী ও রতন দুই পরিবারের কিছু উদ্বেগ ছিল। কিন্তু তারা দুজনেই পরিবারকে রাজী করিয়ে হাতে হাত রাখতে পেরেছেন। ২০১৩ সালের ক্রিসমাসে আমার পরিবার ও কিছু বন্ধুবান্ধব বাংলাদেশে যান এবং রতনের সঙ্গে দেখা করেন। কিছু ব্যাপার অবশ্য সংশয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল কিন্তু পরে তারা সব মেনে নেন। সে (রতন) ভীষণ ভদ্র আর বন্ধুত্বপরায়ণ। তার সঙ্গে সময় কাটাতে আমার ভালো লাগে। সেও ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করে। আমরা একসঙ্গে বাংলাদেশের অনেক জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছি।’

১৯৫২ সালে একুশে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা বাংলার দাবিতে তৎকালীন পাকিস্তানের শাসকদের বিরুদ্ধে বাঙালির সংগ্রামের ইতিহাস সবারই জানা। ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক ভাষা শহীদ দিবস পেয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো নিউজিল্যান্ডেও পালিত হয় দিবসটি।