• বৃহস্পতিবার , ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

সেক্সি মামির খলনায়ক ভাগ্নেকে ধরতে ফাঁদ পেতেছে পুলিশ


প্রকাশিত: ৬:৩১ এএম, ২৩ এপ্রিল ১৭ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৬১৯ বার

দিনা করিম  :   কাফরুলে নিহত সেক্সি মামির খলনায়ক ভাগ্নে এখনও ধরা পড়েনি। তবে তাকে ধরতে kafrul mutu-www.jatirkhantha.com.bdফাঁদ পেতেছে পুলিশ। খুব শিগগির খলনায়ক ভাগ্নে শাকিল ধরা পড়তে পারে বলে আশা করছেন তদন্ত কর্মকর্তা। তদন্ত সূত্র জাতিরকন্ঠকে জানায়, সাত বছরের শিশুর মুখে তার মায়ের খুনের বর্ণনা শুনে খুনিকে খুঁজছে রাজধানীর কাফরুল থানা পুলিশ। ঘটনার পাঁচ দিন পরও খুনি গ্রেফতার হয়নি।

গত ১৮ এপ্রিল রাজধানীর কাফরুল থানার বাজারের ৮৩৯ নম্বর চারতলা ভবনের নিচতলায় গলাকেটে হত্যা করা হয় সৌদি আরব প্রবাসী রফিকুল আলম বিপ্লব চৌধুরীর স্ত্রী রোজিনা আক্তার মিতুকে (২৭)। পুলিশ ও নিহতের স্বজনদের প্রাথমিক সন্দেহ, হত্যার সঙ্গে জড়িত রফিকুল আলমের ভাগ্নে আহম্মেদ  শরীফ শাকিল। এ ঘটনায় নিহতের ভাই ফিরোজ আলম ভূঁইয়া বাদী হয়ে কাফরুল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

পুলিশ জানায়, রোজিনা ইসলাম মিতুর স্বামী সৌদি প্রবাসী রফিকুল আলম বিপ্লব চৌধুরী। দুই মেয়েকে নিয়ে মিতু কাফরুলের ওই বাসায় ভাড়া থাকতেন। রফিকুলের বড় বোন রত্নার ছেলে শাকিল ওই বাসায় এসে পড়াতেন মিতু-রফিকুল দম্পতির বড় মেয়ে ফয়ালাকে। পরিবারটির দেখাশোনার দায়িত্বও ছিল তার ওপর।

রফিকুলের ভাবি নাজমা আলম জানান, সৌদি প্রবাসী রফিকুলের সঙ্গে মিতুর বিয়ে হয় ২০০৯ সালে। পরে একাধিকবার দেশে আসেন রফিকুল। এর মধ্যে রফিকুল-মিতু দম্পতির দুই মেয়ের জন্ম হয়। মিতু দুই মেয়েকে নিয়ে কাফরুলের ইব্রাহিমপুরের ৮৩৯ নম্বর বাড়ির নিচতলার ভাড়া থাকতেন। পরিবারটির দেখাশোনা করতেন রফিকুলের বড় বোন রত্নার ছেলে শাকিল।

বিদেশ থেকে মামা রফিকুলের পাঠানো টাকাও কখনও কখনও তুলে দিতেন শাকিল। মামী মিতুর কাছ থেকে প্রয়োজনে টাকাও নিতেন তিনি। এই টাকা লেনদেন নিয়েই দু’জনের মধ্যে বিবাদ তৈরি হয়। এ কারণেই খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে নিহতের ভাই মামলার এজাহারে অভিযোগ করেছেন।

এজাহারে ফিরোজ আলম ভূঁইয়া উল্লেখ করেছেন, তার ভগ্নিপতি রফিকুল সৌদি আরব থেকে নিয়মিত টাকা পাঠাতেন। কিছু টাকা মিতুর মোবাইলের বিকাশ অ্যাকাউন্টে থাকত। ভাগ্নে শাকিল মাঝে মধ্যে বিকাশ থেকে টাকা তুলে দিতেন মিতুকে। এ কারণে ওই বিকাশ অ্যাকাউন্টের পিন নম্বরও জানতেন তিনি। নিজের প্রয়োজনেও টাকা তুলতেন শাকিল। মিতু এই টাকা ফেরত চাওয়ার কারণেই শাকিল মিতুকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেন নিহতের ভাই ফিরোজ।

সাত বছরের ফয়ালার বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ঘটনার সময় মিতুর সঙ্গে তার দুই মেয়েই ছিল। ফয়ালা পুলিশকে জানায়, মঙ্গলবার সকালে শাকিল দরজায় নক করার পর সে-ই দরজা খুলে দিলে শাকিল ভেতরে আসে। তখন মিতুর সঙ্গে শাকিলের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে শাকিল রান্নাঘর থেকে ছুরি নিয়ে এসে মিতুকে বাথরুমে টেনে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করার পর পেছনের দরজা দিয়ে শাকিল পালিয়ে যায়।

কাফরুল থানার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেন, নিহত মিতুর বড় মেয়ে ফয়ালার বয়স সাত বছর, ছোট মেয়ে পল্লবীর আড়াই বছর। মিতুকে হত্যার পর তার বড় মেয়ের কাছ থেকে ঘটনার বর্ণনা শুনেছে কাফরুল পুলিশ। তার কাছ থেকেই পুলিশ শাকিলের কথা জানতে পারে।

কাফরুল পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে মিতুর লাশ উদ্ধার করা হয়। তার গলার সামনে থেকে পেছনে ঘাড় পর্যন্ত কাটা ছিল। এছাড়া, বাম কানের পেছনে, থুতনিতে, দুই  হাতের কব্জিতে ও দুই উরুতে গভীর কাটা দাগ ছিল। বাসা থেকে রক্তমাখা একটি চাকুও উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মিতুর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে মিতুকে দাফন করা হয় নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের গ্রামের বাড়িতে।