প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন আমজাদ হোসেনের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুল।আমরা জানতে পেরেছি প্রধানমন্ত্রী খবরের কাগজে পড়ে বাবার অসুস্থতার খবর জানতে পেরে তাৎক্ষণিক তার বোন শেখ রেহানাকে খবরটি জানান এভাবে-‘আমজাদ ভাই তো অসুস্থ’। তারপরই তিনি তার সহকারীকে বলে খোঁজখবর নিতে বলেন ও আমাদের ডেকে পাঠান।নির্বাচনের আগে ব্যস্ততায় মধ্যেও প্রায় এক ঘণ্টা আমজাদ হোসেনের দুই ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুল ও সোহেল আরমানকে সময় দেন শেখ হাসিনা।
দোদুল বলেন, ওনার প্রয়োজন ছিল না আমাদেরকে এত সময় দেওয়ার, কিন্তু তিনি আমাদের সান্ত্বনা দিয়েছেন। আমরা অবাক হয়ে লক্ষ্য করেছি, কথায় কথায় এমন কিছু স্মৃতিচারণ তিনি করেছেন, যাতে আমরা দেখেছি আমাদের চেয়েও তিনি আমজাদ হোসেন সম্পর্কে বেশি জানেন।আমি যখন কাঁদছিলাম, নিজেই উঠে দাঁড়িয়ে আমার দিকে টিস্যু এগিয়ে দিলেন। আমরা মুগ্ধ। মনেই হয়নি প্রধানমন্ত্রীর সামনে বসে ছিলাম। মনে হয়েছে একজন মমতাময়ী মায়ের সামনে বসে আছি। একজন বড় নেতার এমনই হওয়া উচিৎ।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর আগেও বহু শিল্পীর চিকিৎসায় সহায়তা করেছেন। আমজাদ হোসেনের পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে তিনি মতাদর্শিক অবস্থান বিচার করেননি।
ঢাকার ইমপালস হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসক শহীদুল্লাহ সবুজের সার্বিক তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছে আমজাদ হোসেনের।হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার মহিউদ্দিন মাজেদ চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এর আগে জানিয়েছিলেন, আমজাদ হোসেনের স্ট্রোক হয়েছে।
লাইফ সাপোর্টে থাকা আমজাদ হোসেনকে দেখতে বুধবার বিকালে হাসপাতালে যাচ্ছেন স্বাস্থমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।দোদুল বলেন, তার বাবার অবস্থা অপরিবর্তিত আছে। মন্ত্রীর যাওয়ার পর চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর অথবা ব্যাংককে নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে।মাস ছয়েক আগেও থাইল্যান্ডের সুকুমভিত হাসপাতালে আমজাদ হোসেনের অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল।চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আগে থেকেই বার্ধক্যজনিত কিছু জটিলতায় ভুগছিলেন আমজাদ হোসেন। কিডনি ও হার্টে সমস্যা রয়েছে তার।১৯৪২ সালের ১৪ অগাস্ট জামালপুরে জন্ম নেওয়া আমজাদ হোসেন চিত্র পরিচালনার বাইরে লেখক, গীতিকার, অভিনেতা হিসেবেও পরিচিত।
১৯৬১ সালে ‘হারানো দিন’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে রুপালি পর্দায় তার আগমন। পরে অবশ্য চিত্রনাট্য রচনা ও পরিচালনায় বেশি সময় দেন।১৯৬৭ সালে মুক্তি পায় তার নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘খেলা’। সাড়া জাগানো চলচ্চিত্র ‘জীবন থেকে নেয়া’র চিত্রনাট্য লেখায় জহির রায়হানের সঙ্গে আমজাদ হোসেনও ছিলেন।
তার ‘নয়নমনি’, ‘ভাত দে’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরী’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘দুই পয়সার আলদা’, ‘কসাই’সহ বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রও দর্শক ও বোদ্ধামহলের প্রশংসা পেয়েছে। তার লেখা ও নির্মিত টিভি নাটকও জনপ্রিয়তা পায়।গান লেখায়, চিত্রনাট্যে ও পরিচালনায় চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এছাড়া একুশে পদকেও ভূষিত হয়েছেন।