• শুক্রবার , ৬ ডিসেম্বর ২০২৪

পরকীয়া খুনী শাহনাজের ভালবাসায় তোলপাড়


প্রকাশিত: ১১:৩৬ পিএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২১ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২১৪ বার

বিশেষ প্রতিনিধি : পরকীয়া খুনী শাহনাজের ভালবাসায় তোলপাড় চলছে। প্রেমিককে পাঁচ টুকরা করে ধরা পড়ল পরকীয়া প্রেমিকা শাহনাজ। ধরা পড়ে পুৃলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকারও করেছে সব কিছু। খুলে বলেছে খুনের চাঞ্চল্যকর কাহিনী। শাহানাজ পারভিন (৫০) বলেছে, রাজধানীর ওয়ারী এলাকায় সজিব হাসান নামে সে তার পরকীয়া প্রেমিককে হত্যা করেছে। নিহত সজিবের সঙ্গে তার পাঁচ বছর ধরে অবৈধ সম্পর্ক চল‌ছিল বলেও জানিয়েছে সে।

বৃহস্পতিবার দুপু‌রে ওয়ারীর স্বামীবা‌গের কে এম দাস লেন এলাকার একটি চারতলা বাসায় এ ঘটনা ঘটে। লাশের তিন টুকরা ঘরের মেঝেতে এবং দুই টুকরা টয়লেটে পাওয়া যায়।নিহত স‌জিব হাসান শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টার মাষ্টার হি‌সে‌বে কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বা‌ড়ি ঝিনাইদহের শৈলকূপায়। বা‌ড়ি‌তে তার স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন ঢাকার পথে রওনা হয়েছেন ব‌লে জানা গে‌ছে।

ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার ইফতেখারুল ইসলাম জাতিরকন্ঠ কে বলেন, পারভিন তিন দিন ধরে নিখোঁজ জানিয়ে তার স্বামী ওয়ারী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পুলিশ তাকে (পারভিন) খুঁজতে গিয়ে এই (সজিবের) মৃতদেহ পায়।
পুলিশ জানায়, সজিবের সঙ্গে পারভিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সে কারণে পারভিন তার স্বামীর বাসা থেকে তিন দিন আগে টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে সজিবের বাসায় ওঠেন। জিডি হওয়ার পর মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে পারভিনের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে সজিবের বাসায় যায় পুলিশ। সেখানে পারভিনকে পাওয়ার পাশাপাশি সজিবের লাশও মেলে।

পারভিনকে সন্দেহের কারণ জানতে চাইলে উপ-কমিশনার ইফতেখার বলেন, সজিবের সঙ্গে থাকতে গিয়ে পারভিন বুঝতে পারে, সজিবের অন্য মেয়েদের সঙ্গেও সম্পর্ক রয়েছে এবং সজীবের মুখ্য উদ্দেশ্য পারভিনের টাকা ও স্বর্ণালংকার।পারভিনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ‍তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে ঝগড়া সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।

তিনি বলেছেন, সজিবের সঙ্গে তার প্রথমে ঝগড়া হয়, তখন সজিব তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। পরে ধস্তাধস্তির মধ্যে ছুরি পারভিনের হাতে চলে আসে। তখন তিনি সজিবকে ছুরি মারলে সে মারা যায়।এরপর পারভিন রান্না ঘরের বটি দিয়ে সজীবের মৃতদেহ পাঁচ টুকরা করার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।পারভিনের হাতেও কেটে যাওয়ার জখম থাকার কথা জানান তিনি।এক কক্ষের ওই বাসায় সজিব একাই থাকতেন। সজিব হস্তশিল্পের কাজ করতেন। তার বাড়ি ঝিনাইদহে।পারভিন পুলিশকে বলেছেন, পাঁচ বছর ধরে তার সঙ্গে সজিবের সম্পর্ক। স্বামীবাগের বাসাটি তাকে স্ত্রী দেখিয়েই ভাড়া নিয়েছিলেন সজিব।

অনুসন্ধানের জানা গেছে, বৃহস্প‌তিবারও দুজ‌ন দেখা ক‌রে শারিরীক সম্পর্ক শে‌ষে টাকা ও সোনা গহনা পাওনা নি‌য়ে ঝগড়ায় লিপ্ত হন। বাক‌বিতণ্ডার এক পর্যা‌য়ে স‌জিব শাহনাজ‌কে চড় থাপ্পড় মার‌লে শাহনাজ ক্ষিপ্ত হ‌য়ে চু‌রিকাঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থ‌লেই স‌জি‌বের মৃত্যু হয়। মৃতদেহ লুকাতে শাহানাজ মরদেহ ৫টি খণ্ড ক‌রেন।

এর ২ দিন আগে হত্যাকারী শাহানাজ পারভিন তার প্রকৃত স্বামীর ঘর সংসার ছেলে মেয়ে রেখে স্বর্ণাংলকার কাপড়চোপড় ও টাকা-পয়সা এবং লাগেজ নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে সজিব হাসানের সঙ্গে দেখা করেন। তার স্ত্রী পরিচয় দিয়ে সজিবের বাসায় অবস্থান করা শুরু করেন।ওই নারী পুলিশের কাছে বলেছেন, এমন পরিস্থিতিতে সজিব হাসান তার টাকাপয়সা ও স্বর্ণাংলকার নিয়ে বিক্রি করতে চাইলে কথা কাটাকাটি হয়। এরই জেরেই সজিব হাসান তাকে ছুরি দিয়ে হত্যা করতে চাইলে ওই ছুরি কেড়ে নিয়ে উল্টো সজিব হাসানের বুকের নিচে আঘাত করেন।