• বুধবার , ৪ ডিসেম্বর ২০২৪

ইলিশের পূর্ণাঙ্গ জীবনরহস্য আবিস্কার


প্রকাশিত: ২:৫০ পিএম, ৮ সেপ্টেম্বর ১৮ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩৭ বার

বাকৃবি প্রতিনিধি : বিশ্বে প্রথমবারের মতো ইলিশের পূর্ণাঙ্গ জীবনরহস্য উন্মোচন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক। আজ শনিবার সকাল ৯টার দিকে বাকৃবি সাংবাদিক সমিতিতে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে গবেষকরা একথা জানান।ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর দেশীয় ইলিশের জীবন রহস্য প্রস্তুতকরণ, জিনোমিক ডাটাবেজ স্থাপনে প্রায় দুই বছরের গবেষণায় সাফল্য পেয়েছেন বলে দাবি জানিয়েছেন বাকৃবি ফিশারিজ বায়োলজি এন্ড জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সামছুল আলম ও তার সহযোগী গবেষকরা।

গবেষকরা জানান, প্রায় দুই বছরের গবেষণায় তারা দেশের বঙ্গোপসাগর ও মেঘনা থেকে পূর্ণবয়স্ক ইলিশ মাছ সংগ্রহ করেন। এর পর বাকৃবি ফিস জেনেটিক্স অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি এবং পোল্ট্রি বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জিনোমি ল্যাররেটরি থেকে সংগৃহীত ইলিশের উচ্চ গুণগতমানের জিনোমিক ডিএনএ প্রস্তুত করা হয়। পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের (জিনউইজ) নামে জিনোম সিকোয়েন্সিং সেন্টার থেকে সংগৃহীত ইলিশের পৃথকভাবে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

এর পর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সার্ভার কম্পিউটারে বিভিন্ন বায়োইনফরম্যাটিক্স প্রোগ্রাম ব্যবহার করে সংগৃহীত প্রাথমিক তথ্য থেকে ইলিশের পূর্ণাঙ্গ ডি-নোভো জিনোম সিকুয়েন্স বা জীবন রহস্য আবিষ্কার করা হয়। তবে পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্স বিশ্লেষণ করে ইলিশ জিনোমে জিনের সংখ্যা জানার কাজ অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বায়োলজি অ্যান্ড জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সামছুল আলমের নেতৃত্বে গবেষণা দলের অন্যান্যরা হলেন- পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. বজলুর রহমান মোল্যা, বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল ইসলাম ও ফিশারিজ বায়োলজি অ্যান্ড জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ গোলাম কাদের খান।

ইলিশ মাছের পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের প্রয়োজনীতা সম্পর্কে প্রধান গবেষক প্রফেসর ড. মো. সামছুল আলম বলেন, ‘ইলিশ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ। দেশে এর চাহিদার পাশাপাশি বিদেশেও চাহিদা রয়েছে প্রচুর। যেহেতু পৃথিবীর মোট ইলিশ উৎপাদনের প্রায় ৬০% উৎপন্ন হয় বাংলাদেশে তাই ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে পারলে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হবে দেশ। আর ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে আমাদের জানতে হবে এর জন্ম , বৃদ্ধি, প্রজননসহ বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইলিশ একটি পরিযায়ী মাছ। এরা ডিম ছাড়ার জন্য সাগর থেকে নদীতে আসে। আর এই পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকুয়েন্স থেকেই জানা যাবে এরা কখন, কোথায় ডিম দেবে। কারণ জিনোমই জীবের সকল জৈবিক বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণ করে। আর এসব জানা গেলে সরকার খুব সহজেই বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে ইলিশের টেকসই আহরণ এবং উৎপাদন নিশ্চিত করতে পারবে।’

ওই গবেষক বলেন, জাতীয় মাছ ইলিশের পূর্ণাঙ্গ ডি-নোভো জিনোম সিকোয়েন্সিং এর গবেষণা কাজটি গবেষকদের নিজস্ব উদ্যোগ, স্বেচ্ছাশ্রম এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পারষ্পারিক সহযোগিতার ভিত্তিতে সম্পন্ন করা হয়েছে। এ গবেষণার মাধ্যমে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলদেশের মৎস্য সেক্টর পূর্ণাঙ্গ জিনোম গবেষণার যুগে প্রবেশ করল।