• সোমবার , ২৯ এপ্রিল ২০২৪

৩৫ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট ব্যবসা দালাল ফরিয়া-স্বত্ত্বভোগীদের


প্রকাশিত: ৪:৩৩ এএম, ২৮ জুন ১৬ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৪৫ বার

 
সাইফুল বারী মাসুম : ৩৫ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট ছেড়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে ১৫ Note-www.jatirkhantha.com.bdহাজার কোটি টাকা বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে এবং ২০ হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা থেকে দেওয়া হচ্ছে।প্রতিদিন নতুন নোট নেয়ার জন্যে ভিড় হচ্ছে। মানুষজন ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাড়িয়ে নতুন নোট নিচ্ছেন। ১৬ জুন থেকে শুরু হয়ে ৩০ জুন পর্যন্ত বিতরণ চলবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নয়টি অফিসসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের নির্ধারিত শাখায় এই নতুন টাকা পাওয়া যাচ্ছে।

ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে আপনজনকে সালামি বা উপহার হিসেবে নতুন নোট দেওয়া বহুদিন থেকে প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এ জন্যই প্রতি বছর ঈদকে সামনে রেখে নতুন টাকা বাজারে ছাড়ে বাংলাদেশ ব্যাংক। সাধারণ মানুষ মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়সহ অন্যান্য অনুমোদিত বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে নতুন টাকা সংগ্রহ করেন।

কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নতুন টাকা সংগ্রহকে ঘিরে দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করছে একটি দালাল চক্র। যারা কাউন্টার থেকে টাকা সংগ্রহ করে বাইরে এসে বাড়তি দামে বিক্রি করে।গত বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যংকে দেখা যায়, নতুন টাকার ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট গ্রুপগুলো নিজেদের অসংখ্য লোক লাইনে দাঁড়িয়ে রেখেছে নতুন টাকা সংগ্রহ করছে।

এতে করে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ গ্রাহকদের। অনেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও পাচ্ছেন না কাঙ্খিত নতুন নোট।কিন্তু কাউন্টারে দেখা গেছে কম বয়েসী ছেলেদের ভাড়া করে লাইনে দাঁড় করিয়ে টাকা সংগ্রহ করছে দালালরা।

যাত্রাবাড়ি থেকে এসে প্রায় ঘন্টা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাউন্টারে লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা সংগ্রহ করেছেন বেসরকারি কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, কিছু দালালরা বাংলাদেশ ব্যাংকের ভিতরে প্রকাশ্যে নতুন টাকা বিক্রি করছে। তাছাড়া লাইনেও তাদের অসংখ্য লোক দাঁড়িয়ে। ফলে সাধারণ গ্রাহকদের দীর্ঘ সময় ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।

বিষয়টি জেনেও অনেকটা নির্বিকার বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে কোনো দায় নিতে নারাজ তারা। অভিযোগ আছে, দালাল চক্রের সাথে যোগসাজশ থাকতে পারে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের। আর কারণেই তারা দেখেও না দেখার ভান করেন।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের কারেন্সি বিভাগে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক কর্মকর্তা বলেন, কাউকে দেখে তো আর চেনার উপায় নেই কে দালাল আর কে সাধারণ মানুষ। সুতরাং আমদের করার কিছুই নেই। আমাদের দায়িত্ব টাকা দেওয়া। আমরা দিচ্ছি।

গত দুই বছর ধরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন টাকা প্রদান করা হচ্ছে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে আঙ্গুলের ছাপ সংরক্ষণের মাধ্যমে। এ পদ্ধতি চালুর ফলে দালালদের দৌরাত্মা কিছুটা হলেও কমেছে।তবে নতুন পন্থা হিসেবে কম বয়েসী ছেলেদের ভাড়া করে লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা সংগ্রহ করছে দালালরা।

বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে টাকা প্রদানে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানে যুক্ত এক কর্মকর্তা জানান, ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী একজন গ্রাহক বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাতের ছাপ দিয়ে টাকা নেওয়ার পরবর্তী সাত কর্মদিবস পরে প্রয়োজনে আবার টাকা তুলতে পারেন। সাধারণত দালাল চক্র এই সুযোগও নিচ্ছে।

ঢাকায় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান ফটকের পাশে সেনাকল্যাণ সংস্থা ভবনের সামনের ফুটপাত, গুলিস্তানের ফুটপাত এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পুরান ঢাকা শাখা সংলগ্ন ফুটপাতে নতুন টাকার সবচেয়ে বেশি কেনা-বেচা হয়।

সেনাকল্যাণ সংস্থা ভবনের সামনের ফুটপাত টাকা বেচা-কেনার সবচেয়ে বড় বাজার। এখানে ২০ থেকে ৩০ জন মহিলা দাঁড়িয়ে টাকা বিক্রি করেন। এ পথে কাউকে আসতে দেখলেই ঘিরে ধরেন তারা। ১ হাজার টাকার যে কোনো মূল্যমানের নতুন টাকায় ১০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা পর্যন্ত বেশি নিচ্ছে বিক্রেতারা।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, এবছর ঈদকে সামনে রেখে ৩৫ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট ছেড়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে ১৫ হাজার কোটি টাকা বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে এবং ২০ হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা থেকে দেওয়া হয়েছে।

১৬ জুন থেকে শুরু হয়ে ৩০ জুন পর্যন্ত বিতরণ চলবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নয়টি অফিসসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের নির্ধারিত শাখায় এই নতুন টাকা পাওয়া যাচ্ছে।

এবছর ব্যাংক থেকে একজন সাধারণ গ্রাহক ৫০ টাকা, ২০ টাকা, ১০ টাকা, ৫ টাকা ও ২ টাকা মূল্যমানের ১ প্যাকেট করে মোট ৮ হাজার ৭শ টাকা পর্যন্ত নতুন টাকা সংগ্রহ করতে পারবেন।