• শুক্রবার , ৩ মে ২০২৪

হাসিনাই পারলেন স্বপ্নের টানেল করতে


প্রকাশিত: ৫:১৮ পিএম, ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৯ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৩১ বার

শফিক রহমান : সাবাস শেখ হাসিনা; আপনিই পারলেন দূর্মুখোদের মুখে ছাই দিয়ে বাংলাদেশকে বদলে দিতে । এ বিশ্ব অবাক তাকিয়ে রয় একি করছে বাংলাদেশের নেত্রী শেখ হাসিনা। নদীর তলদেশ দিয়ে যোগাযোগ! জি হাঁ স্বপ্নের টানেল নির্মাণে বাংলাদেশ হয়ে উঠবে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা শেখ হাসিনার প্রাচ্যের অক্সফোর্ড! আর এতে বদলে যাবে চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের চিত্র।আজ চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের বোরিং কার্যক্রমের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার বেলা ১১টার পর এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন তিনি।

সরেজমিনে জানা গেছে, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে স্বপ্নের টানেল নির্মাণে বদলে যাবে চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের চিত্র। আমূল পরিবর্তন আসবে অর্থনৈতিক আঙিনায়। প্রতিষ্ঠিত হবে বহুমুখী যোগাযোগব্যবস্থা। বিস্তৃত হবে চট্টগ্রাম নগর। চাপ কমবে নগরের ওপর। কমবে শহরকেন্দ্রিক নির্ভরতা। বৃদ্ধি পাবে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা।এরপর বন্দরনগরী লালখানবাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পিলার পাইলিং প্রকল্পের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।এর আগে বেলা ১১টার দিকে একটি বিশেষ বিমানে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পৌঁছান শেখ হাসিনা।

জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণে ব্যয় হবে ৯ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা, যার মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের অর্থ সহায়তা তিন হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা এবং চীন সরকারের অর্থ সহায়তা পাঁচ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা।দুই টিউবের মূল টানেলটির দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার। এর সঙ্গে টানেলের পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক এবং ৭২৭ মিটার ওভারব্রিজ নির্মাণ করা হবে।

কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে বহুলেন সড়ক টানেল নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী ইফতেখার কবির জাতিরকন্ঠকে বলেন,
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বদলে যাবে চট্টগ্রামের চিত্র। গড়ে উঠবে চট্টগ্রাম শহরের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন ও যুগোপযোগী সড়ক যোগাযোগ, আধুনিকায়ন হবে বিদ্যমান সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা, সংযোগ স্থাপিত হবে এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে, যুক্ত করা হবে কর্ণফুলী নদীর পূর্ব তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা শহরের সঙ্গে ডাউন টাউনকে, ত্বরান্বিত হবে বিভিন্ন উন্নয়নকাজ, বৃদ্ধি পাবে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা ও সুযোগ-সুবিধা, গতি পাবে প্রস্তাবিত গভীর সমুদ্রবন্দরের নির্মাণকাজ, নতুন যোগাযোগব্যবস্থা সৃষ্টি হবে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের মধ্যে।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, কর্ণফুলী টানেলের সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা শেষ হয় ২০১৩ সালে। চার বছর মেয়াদকালের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি (সিসিসিসি)। ২০১৪ সালের ১০ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বেইজিংয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়। পরে ২০১৪ সালের ২২ ডিসেম্বর সিসিসিসির সঙ্গে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের চুক্তি হয়। ২০১৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সিসিসিসি বাণিজ্যিক প্রস্তাব দাখিল করে।

বাণিজ্যিক প্রস্তাবের পর কারিগরি দিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দুজন বিদেশি ও একজন দেশি ব্যক্তিভিত্তিক পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১৫ সালের ৩০ জুন সিসিসিসির সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও অনুমোদিত অ্যালাইনমেন্ট অনুযায়ী ‘ল্যান্ড অ্যাকুইজিশন প্ল্যান (এলএপি)’, ‘রিসেটেলমেন্ট অ্যাকশন প্ল্যান’ (আরএপি) এবং ‘এনভায়রনমেন্টাল ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান’ (ইএমপি)-এর প্রণীত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় অনুমোদন করে বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ওয়ান সিটি টু টাউন মডেলে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন ও এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্কে সংযুক্তির উদ্দেশে এ টানেল নির্মাণ করা হচ্ছে।প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম শহরকে বাইপাস করে সরাসরি কক্সবাজারের সঙ্গে সহজ যোগাযোগ স্থাপিত হবে। ফলে চট্টগ্রাম শহরের যানজট কমে আসবে। প্রকল্পটির সার্বিক অগ্রগতি ৩২ শতাংশ এবং ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।অন্যদিকে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ লেনের ১৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মাণ করা হচ্ছে।