• সোমবার , ১৩ মে ২০২৪

সমস্যা হবে না ছিটমহলগুলি বিনিময় করা যেতে পারে-মমতা


প্রকাশিত: ৭:৪৭ পিএম, ৩ জুন ১৪ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৬৪ বার

 
 কলকাতা প্রতিনিধি:  জুন ০৩, ২০১৪:
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়  পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘বাংলাদেশে ও ভারতের ভূখন্ডে থাকা যে ছিটমহলগুলি বিনিময় করলে সমস্যা হবে না, তা নিয়ে আলোচনা হবে।  আলোচনার পর সেই ছিটমহলগুলি বিনিময় করা যেতে পারে।’ গতকাল সোমবার পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ি শহরে অবস্থিত রাজ্য সচিবালয় ‘উত্তর কন্যা’য় বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের ভূখন্ডে থাকা ১৬২ ছিটমহল বিনিময় প্রশ্নে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যে ছিটমহলবাসীর মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে।
যদিও গত বছরে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে কুচবিহারে গিয়ে মমতা বলেছিলেন, এক ছটাক জমিও হস্তান্তর করা হবে না। শুধু তাই নয়, কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের আমলে ছিটমহল বিনিময় নিয়ে সংসদে বিল উত্থাপন করতে চাইলেও বাঁধা দিয়েছিলেন মমতা।
পরে অবশ্য এ বছরের এপ্রিলে লোকসভার নির্বাচনের প্রচারের সময় কুচবিহারের দিনহাটায় এসে, মমতা সুর অনেকটা বদলিয়ে বলেন ছিটমহলের বাসিন্দাদের ওপর জোর করে তিনি কিছু চাপিয়ে দেবেন না। বাসিন্দাদের যেভাবে সুবিধা হয়, আলোচনার মাধ্যমে তা করা হবে। কিন্তু এবার সুর আরও অনেকটা নরম করলেন মমতা।
এদিকে কুচবিহারে ভারতের ভূখন্ডে থাকা বাংলাদেশের ছিটমহলের বাসিন্দারা বলেছেন, এবার হয়তো ভারত-বাংলাদেশের ছিটমহল বিনিময় ত্বরান্বিত হবে। দিনহাটার কোয়াতুর কুঠি ছিটমহলের বাসিন্দা সাহেব আলি এবং রাকিবুল মিয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতার মন্তব্যকে স্বাগত জানান।মঙ্গলবার দুপুরে তারা  বলেন, আমরা চাই অবিলম্বে ছিটমহল বিনিময় হোক। এই নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছি। এবার হয়তো সেই আন্দোলনের ফসল ঘরে তুলতে পারব।

প্রসঙ্গত, ১৬২ ছিটমহলের মধ্যে বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল ভারতের ভুখন্ডে আর ১১১টি ভারতীয় ছিটমহল আছে বাংলাদেশের ভূখন্ডে।  ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সহ সম্পাদক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত  বলেন, ‘ছিটমহল বিনিময় নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়য়ের মন্তব্যে আমরা খুশি। আমরা দীর্ঘদিন ধরে  ছিটমহল বিনিময়ের জন্য আন্দোলন করে আসছি। এবার হয়তো আমাদের দাবি পূরণ হবে। ছিটমহলবাসী ফিরে পাবে মৌলিক অধিকার। একটা দেশে বাস করার ছাড়পত্র, ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড ইত্যাদি পাবে।’

মমতার এই মন্তব্যের পর রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, মোদি সরকার মুখে যাই বলুক না কেন, বাংলাদেশের সঙ্গে এখনই তারা বিতর্কে যাবে না। সংসদে বিজেপির রয়েছে একক সংখ্যাগরিষ্টতা। আর বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএর রয়েছে ৩৩৫ আসন। সংবিধান সংশোধনের জন্য প্রয়োজন দুই-তৃতীয়াংশ সাংসদের অর্থ্যাত্ ৩৬২ সাংসদের সমর্থন প্রয়োজন।

জয়ললিতার ৩৭ সাংসদের সমর্থন পেলে এনডিএ সংবিধান সংশোধন করে ছিটমহল বিনিময় চুক্তি সম্পাদন করতে পারবে। যদিও কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন সাবেক ইউপিএ সরকারের সংবিধান সংশোধন করার মত শক্তি ছিল না। ফলে ২০১১ সালে ইউপিএ সরকারের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় মমতার আপত্তিতে তিস্তার পানিবন্টন চুক্তি এবং ছিটমহল বিনিময় চুক্তি সম্পাদন করতে পারেননি। এবার হয়তো আর সেই সমস্যা থাকবে না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। তিনি ইচ্ছে করলে তিস্তা বা ছিটমহল বিনিময়  চুক্তি সম্পাদনের জন্য সংসদে পাশ করিয়ে নিতে পারবেন সংবিধান সংশোধনী বিল। তবে প্রধানমন্ত্রী সেটি করবেন কি না সে প্রশ্নটি রয়েছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মধ্যে।