• শুক্রবার , ৩ মে ২০২৪

শরীফুলের আগুন বোলিংয়ে ফাঁস- টাইগার দল নির্বাচনের রাজনীতি!


প্রকাশিত: ১০:৫১ পিএম, ১১ জুলাই ২৩ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৪০ বার

স্পোর্টস রিপোর্টার : যে শরীফুল কে আগের ম্যাচে নেয়া হয়নি সেই শরীফুলের আগুন বোলিংয়ে মঙ্গলবার পুরে মরল আফগানরা।
যার ফলে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ।আফগানদের বিপক্ষে শরীফুল যে অনেকের চেয়ে বেশী কার্যকর তা আগেই জানা ছিল। অথচ তাকে নেয়া হয়নি। তাহলে টাইগারদের দল নির্বাচনেও কি রাজনীতি চলে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জনমনে। তা না

হলে শরীফুলের তাক লাগানো বোলিংয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে সিংহভাগ উইকেট নিয়েছিল বাংলাদেশ দল। সেই টেস্টে খেলেছিলেন শরীফুল ইসলাম। দুই ইনিংসেই নতুন বলে দারুণ বোলিং করেছিলেন। এরপর আফগানদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুটি ম্যাচ খেলা হয়নি এই বাঁহাতি পেসারের। আজ সিরিজের শেষ ম্যাচে দুই পেসারে সাজানো বাংলাদেশ দলের বোলিং আক্রমণে সুযোগ হয় শরীফুলের।

ক্যারিয়ার–সেরা ২১ রানে ৪ উইকেট নিয়ে শরীফুল সে সুযোগটা দুই হাতে লুফে নেন। এ নিয়ে ওয়ানডেতে তৃতীয়বার ৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি। শরীফুলের প্রথম স্পেলেই ১৫ রানে ৪ উইকেট হারায় আফগানরা। দ্রুতই তা ৫ উইকেটে ৩২ রানে পরিণত হয়। শেষ পর্যন্ত আজতমউল্লাহ ওমরজাইয়ের ফিফটিতে ৪৫.২ ওভারে আফগানরা থামে ১২৬ রানে।এতে লজ্জাজনক হোয়াইটওয়াশ থেকে বাঁচল বাংলাদেশ। তবে প্রথম দুই ওয়ানডে জিতে আগেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে আফগানিস্তান।

মঙ্গলবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ১২৬ রানে অলআউট হয়ে যায় সফরকারীরা। জবাব দিতে নেমে ২৩ ওভার ৩ বলে জয় পায় স্বাগতিকরা।ফিল্ডিংয়ে নেমে শুরুতেই সাফল্য পায় বাংলাদেশ। নিজের প্রথম ওভারে এক রান দেওয়া শরিফুল উইকেটের দেখা পান দ্বিতীয় ওভারে।

প্রথম বলেই তার বল খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দেন ইবরাহিম জাদরান। এক রানে বিদায় নেন তিনি। ওই ওভারের পঞ্চম বলে একই কাজ করেন ব্যাট করতে নামা রহমত শাহ। বল তালুবন্দি করতে ভুল করেননি মুশফিকুর রহিম। শূন্য রানেই বিদায় নেন আফগান ব্যাটার।

৩ রানেই ২ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যাওয়া আফগানরা বড় ধাক্কা খায় ষষ্ঠ ওভারেই। এরপর তাসকিনের শিকার হয়ে ফেরেন আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে সফরকারীদের ম্যাচ জেতানো গুরবাজ। তাসকিনের লাফিয়ে ওঠা বল তার ব্যাটের কানায় লেগে জমা হয় উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে। আউট হওয়ার আগে ২২ বলে ৬ রান করেছেন গুরবাজ।

অষ্টম ওভারে আবার আঘাত হানেন শরিফুল। এবার এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবিকে। তার গুড লেংথের বল শাফল করতে গিয়ে ব্যাটে লাগাতে পারেননি নবি। বল সোজা গিয়ে আঘাত হানে তার প্যাডে। ফলে ১ রানেই ফিরতে হয় তাকে।

মাত্র ১৫ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলা আফগানরা লজ্জার এক রেকর্ডও গড়ে। নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে এতো কম রানে কখনোই চার উইকেট হারায়নি তারা।১০ ওভারের পর দুই প্রান্ত দিয়েই স্পিন আক্রমণ করে বাংলাদেশ। ১৬তম ওভারে গিয়ে উইকেটের দেখা পান সাকিব আল হাসান। তার লেংথ বলে এলবিডব্লিউর শিকার হন ১০ রান করা নাজিবউল্লাহ জাদরান। এরপর তাইজুলের বলে ২২ রানে ফেরেন শহীদি।

দ্বিতীয় স্পেলে এসে আবার উইকেটের দেখা পান শরিফুল। এছাড়া জিয়াকে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন তাইজুল। পরে আফগানদের শতরান পার করান ওমরজাই। দারুণ খেলতে থাকা এই ব্যাটার শেষ পর্যন্ত কাটা পড়েন তাসকিনের বোলিংয়ে। ইনিংসের শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হন তিনি। ৭১ বলে ১ চার ও ৩ ছক্কায় সর্বোচ্চ ৫৬ রান করেন ওমরজাই। এটাই তার ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি।

বাংলাদেশের হয়ে ৯ ওভারে ২১ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন শরিফুল। দুটি করে উইকেট পান তাসকিন ও তাইজুল। এছাড়া একটি করে উইকেট পেয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাকিব।জবাব দিতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশেরও। উদ্বোধনী ব্যাটার নাঈম শেখ ৮ বল খেলেও কোনো রান করতে পারেননি। এরপর বোল্ড হন ফজল হক ফারুকীর বলে। এরপর ১৫ বলে ১১ রান করা নাজমুল হোসেন শান্তও তার বলে আউট হলে চাপে পড়ে স্বাগতিকরা।

পরে লিটন দাসের সাথে ম্যাচের গতিপথ পাল্টে দেন সাকিব আল হাসান। লিটন দাসের সঙ্গে গড়েন ৬১ রানের জুটি। ৩৯ বলে ৩৯ রান করার পর মোহাম্মদ নবীর বলে ক্যাচ দেন সাকিব। জয়ে অবশ্য সেটি বাধা হয়নি। তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে বাকি পথটা পাড়ি দেন লিটন। বাংলাদেশের সহ অধিনায়ক ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৬০ বলে ৫৩ রান করে অপরাজিত থাকেন। আর ১৯ বলে ২২ রানে অপরাজিত থাকেন হৃদয়।