র্যাব ক্যাম্পে ‘আত্মঘাতী’র পর সব বিমানবন্দর কারাগারে সতর্কতা
বিশেষ প্রতিনিধি : ঢাকার আশকোনায় র্যাব ক্যাম্পে ‘আত্মঘাতী’ বিস্ফোরণের পর দেশের সব বিমানবন্দর ও কারাগারে সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার বেলা ১টার পর জুমার নামাজের ঠিক আগে আগে ওই বিস্ফোরণে একজন নিহত হন। আত্মঘাতী ওই ব্যক্তি কোনো জঙ্গি দলের সদস্য বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন র্যাব কর্মকর্তারা।
এর ঘণ্টা দুই পর দেশের সব কারাগারে সতর্কতা জারির ঘোষণা আসে। অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক ইকবাল হাসান বলেন, উত্তরার ঘটনার পর সব দেশের কারাগারগুলোতে অধিকতর সতর্কতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি ‘রেড অ্যালার্ট’ নয়, তবে সবাইকে ‘অধিকতর সতর্কতা’ অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির বলেন, আমরা সব সময়ই সতর্ক। যেহেতু একটি ঘটনা ঘটেছে, তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
সারাদেশে মোট ৬৮ কারাগারে ৭০ হাজারের বেশি বন্দি রয়েছে বলে কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।এদিকে দেশের বিমাবন্দরগুলোতেও বাড়তি সতর্কতার নির্দেশনা দিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে দেশের সব বিমানবন্দরে অধিকতর সতর্কতার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০১৫ সালের শুরু থেকে ২০১৬ সালের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত সময়ে একের পর এক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী লেখক, ব্লগার, প্রকাশকরা। তল্লাশি চৌকিতে হামলা চালিয়ে পুলিশ হত্যা এবং চট্টগ্রামের নৌ বাহিনীর মসজিদে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাও সে সময় ঘটে।
গতবছর জুলাই মাসে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি ও শোলাকিয়ায় ঈদের দিন জঙ্গি হামলার পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক অভিযানের মধ্যে বেশ কিছুদিন পরিস্থিতি শান্ত থাকে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, জঙ্গিদের অনেকটাই দুর্বল করে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
কিন্তু গত ৭ মার্চ কুমিল্লায় একটি বাসে তল্লাশির সময় দুই জঙ্গি পুলিশের দিকে বোমা ছুড়লে তাদের তৎপরতা বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে। তাদের মধ্যে একজনকে সঙ্গে নিয়ে ওই রাতেই মিরসরাইয়ের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ও বোমা উদ্ধার করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।
এরপর গত বুধবার বিকালে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে এক বাড়ি থেকে বিস্ফোরকসহ এক জঙ্গি দম্পতিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পাশের ওয়ার্ডে আরেক বাড়িতে দীর্ঘ ১৯ ঘণ্টা অভিযান চালায় পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ও সোয়াট।
আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ও গুলিতে এক নারীসহ চার জঙ্গি নিহত হওয়ার মধ্যে দিয়ে সীতাকুণ্ড অভিযানের সমাপিপ্ত ঘটে। নিহত নারী জঙ্গির পাশে পরে এক শিশুর বোমায় বিক্ষত লাশ পাওয়া যায়।