• বৃহস্পতিবার , ২ মে ২০২৪

রাজধানী ও নিউ রাজধানী সুপার মার্কেটে চাঁদাবাজীর নেপথ্য নায়ক রাজাকার বাবুলের মুখোশ উম্মোচন


প্রকাশিত: ৬:৪০ পিএম, ২ সেপ্টেম্বর ১৫ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১২৭ বার

বিশেষ প্রতিবেদক.ঢাকা:   এবার সংবাদ সম্মেলনে রাজধানী ও নিউ রাজধানী সুপার মার্কেটে চাঁদাবাজীর নেপথ্য নায়ক রাজাকার আজমল হোসেন বাবুলের মুখোশ উম্মোচন করলেন মার্কেট দুটির ব্যবসায়ীরা। তাঁরা অভিযোগ করেন স্বনামে বেনামে DSC02801নিজ পরিবারের নামে এই বাবুল কয়েক শত কোটি টাকার মালিক।টাকার বিনিময়ে সে ধরাকে সরা জ্ঞান করছে। মার্কেট দুটিতে তার দোকান রয়েছে দুই শতাধিক।এসব দোকানের ভাড়াটিয়াদের সে নানা কায়দায় বিপদে ফেলে লাখ লাখ টাকা চাঁদাবাজি করে।তার এসব দোকানের ভাড়াটিয়ারা সংবাদ সম্মেলনে জানালেন, একবার সে দোকান বরাদ্দ বাতিল করে এবং পুনরায় দোকান বরাদ্দ দিয়ে এবং রেজিস্টেশনের নামে চাঁদা হাতিয়ে নেয়। এই বাবুলই নতুন করে মার্কেটে ঢোকার পাঁয়তারা করে তার ভাড়াটিয়াদের দিয়ে একের পর এক জিডি করে মার্কেটটির সভাপতির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে।

বুধবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কেট দুটির ব্যবসায়ীরা সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।এসময় উপস্থিত ছিলেন মার্কেট কমিটির সভাপতি ময়নুল হক মঞ্জু, কোষাধক্ষ্য আব্দুল হক, দপ্তর সম্পাদক আহসান উল্লাহ,  সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোঃ আফজাল,  খান কসমেটিকের মালিক আব্দুল আজিজ প্রমুখ।

লিখিত বক্তব্যে  বলা হয়,  গত ১৭-০৫-২০১৫ ইং তারিখে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশ অনুযায়ী ও ট্রেড ইউনিয়নের প্রচলিত বিধি অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। রাজধানী ও নিউ রাজধানী সুপার মার্কেট পরিচালনা কমিটি নির্বাচনে একক প্যানেল জমা হওয়ায় নির্বাচন কমিশন গত ১৩-০৬-২০১৫ইং বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় আমার কমিটিকে বিজয়ী ঘোষণা করেন।

এই নব নির্বাচিত কমিটি যখন তাদের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা শুর“ করেন তখন থেকেই আমরা আগের কমিটির কুখ্যাত রাজাকার আজমল হোসেন বাবুল গংদের প্রতিহিংসার পাত্র ও ষড়যন্ত্রের কবলে পড়ি। বাবুল গংরা তাদের রাজত্ব ও প্রভাব প্রতিপত্তি ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে উঠে। গত ০৮-০৭-২০১৫ইং  রোজার মাসে  ঈদের বাজারে বাবুল গংরা ক্রেতা-বিক্রেতার পণ্য বিক্রীর দরদাম নিয়ে ঝগড়ার ঘটনাকে চাঁদাবাজীর ঘটনা সাজায়। ঐ সময় র‌্যাব-১০ সদস্যরা রাত ১১টায় আমার ৫জন কর্মকর্তাসহ ১০জনকে চাঁদাবাজীর কথা বলে গ্রেফতার করেন। পরবর্তীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মারামারি মামলা দেখিয়ে তাদেরকে সাজা দেওয়া হয় এবং অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়। পরবর্তীতে র‌্যাব এর উর্ধতন কর্মকর্তা ও পুলিশের এডিসি মেহেদী সাহেব দুই গ্র“পকে নিয়ে মধ্যস্থতা করতে  বসেন। সেখানে বাবুল রাজাকারগংরা চাঁদাবাজীর কথা না বলে কমিটি ভেঙ্গে দেওয়ার কথা বলে। পরবর্তীতে পুলিশের ডিসি সাহেব কোন চাঁদাবাজীর তথ্য না পেয়ে আমাকে চাবি হস্তান্তর করেন।

অথচ এই ঘটনা রাজাকার বাবুলগংরা চাঁদাবাজী দেখিয়ে তাদের মনোনীত সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রচার করে আমার ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টা চালায়। অথচ এসব ঘটনার সূত্রপাত হতনা যদি আমি বাবুল গংদের অবৈধ কার্যকলাপে সায় দিতাম। এই বাবুলগংরা অবৈধ উপায়ে মসজিদ ও মন্দিরের ১৩টি দোকান হাতিয়ে নিয়েছে। এরা মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাষ্ট হইতে অবৈধ উপায়ে মসজিদ ও মন্দিরের নামের দোকানগুলো প্রতিটি ৩-৫ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে মসজিদ ও মন্দিরকে দিচ্ছে শুধু মাত্র ৫ শত টাকা।

মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাষ্টে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,  মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাষ্ট মসজিদের নামে ৮টি এবং মন্দিরের নামে ৫টি দোকান বরাদ্দ দিয়েছিল। সেই দোকানগুলো  বাবুল রাজাকারগংরা নিজেদের নামে করে নেয়।মার্কেটের সভাপতি জানান,  মসজিদ মন্দিরের দোকান ফেরত চাওয়ায় তারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় এবং আমাকে চাঁদাবাজ বানিয়ে দোকানগুলো ফেরত দেওয়া থেকে বাঁচতে চায়।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সম্প্রতি বাবুল রাজাকার গংরা একটি সাজানো সাংবাদিক সম্মেলন করেছে। সেখানে মিথ্যা ও অসত্য তথ্য দিয়ে তাদের মনোনীত সংবাদপত্রে অসত্য খবর পরিবেশন করে। সেই সাংবাদিক সম্মেলনে তারা বিদ্যুৎ দূর্নীতির কথা বলেছে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ২০১২ সালে তাদের বির“দ্ধে বিদ্যুৎ বিলের টাকা আত্মসাতের মামলা হয়েছে। সেই টাকা কোন মাসে ২ লাখ কোন মাসে ৩ লাখ টাকা করে পরিশোধ করছেন মার্কেট সভাপতি। এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিভাগ সমিতির কাছে ২২ লক্ষ টাকা পাওনা আছে। এই টাকা রাজাকার বাবুল গংরা আত্মসাৎ করে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রেখেছে। এই মার্কেটে সার্ভিস চার্জ ও বিদ্যুৎ বিল রশিদ দ্বারা উত্তোলন করা হয়। রশিদ ছাড়া কোন টাকা নেয়া হয় না। তাদের আরো অভিযোগ ছিল পুলিশের এক এসআইকে আমি রাইফেল দিয়ে মারধর করি। বলা বাহুল্য এটা বানোয়াট তথ্য কারন, এস আই’রা কোনদিন রাইফেল ব্যবহার করেনা।

লিখিত বক্তব্যে সভাপতি জানান, এর আগে ২০১১ সালে রাজাকার বাবুল বাহিনী গংদের চাঁদাবাজীতে অতিষ্ট হয়ে সাধারণ ব্যবসায়ীরা আমাকে দায়িত্ব নিতে বাধ্য করে। আমি মার্কেটের দায়িত্ব নিয়ে দেখি রাজাকার বাবুলগংরা লাখ লাখ  টাকার বিদ্যুৎ বিল আত্মসাত করেছে। পরে আমি তাদের বির“দ্ধে মামলা করি। ১/১১ এর সময় এই রাজাকার বাবুল মার্কেটের বিদ্যুৎ মিটার টেম্বারিং করে ১ কোটি ৭১ লাখ টাকা চুরির দায়ে গ্রেফতার হয়ে লজ্জায় মার্কেট থেকে পালিয়ে যায়। এছাড়াও রাজাকার বাবুল ও তার পরিবার মার্কেট দুটিতে ২০০ দোকানের মালিক। গুলিস্থান ট্রেড সেন্টার গুলিস্থান হকার্স মার্কেট ও বঙ্গবাজারের এনেক্সো বিল্ডিং এ  তার বহু সংখ্যক দোকান রয়েছে এবং তার বহুতল ভবন রয়েছে কম হলেও ৫টির মত। স্বাধীনতার পরে এই বাবুল গুলিস্থানে গামছা বিক্রি করত। কিন্তু তারপরও এই মার্কেটের প্রতি তার লোভ লালসা ও প্রতিহিংসা কমেনি। এ লক্ষ্যেইে রাজাকার বাবুলগংরা একের পর এক ষড়যন্ত্র করেই চলেছে।