মেলানিয়া ট্রাম্প ‘সাহসী নারী’র পুরস্কার দিলেন বাংলাদেশী শারমিনকে
ডেস্ক রিপোর্টার : বাল্যবিবাহ ও জোরপূর্বক বিবাহের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার স্বীকৃতি হিসেবে সাহসী নারীর স্বীকৃতি পেলেন বাংলাদেশি কিশোরী শারমিন আক্তার। বুধবার (২৯ মার্চ) মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প শারমিনকে ‘ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করেন। এদিন শারমিন ছাড়াও বিশ্বের আরও বেশ কয়েকজন নারীকে এ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগের সদর দফতর ‘ফগি বটমে’ মেলানিয়ার বিরল উপস্থিতি দেখা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি টম শ্যাননের উপস্থাপনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে শুরুতেই শারমিনের হাতে অ্যাওয়ার্ড তুলে দেন মেলানিয়া। এরপর একে একে আরও ১২ জন নারীকে এ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
শারমিনের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়ার আগে টম শ্যানন বলেন ‘বাল্য ও জোরপূর্বক বিয়ের বিরুদ্ধে নীরবতা ভাঙার মতো অসাধারণ সাহস ও উদ্যম দেখানোয় এবং এ ধরনের ঘটনার শিকার অন্য নারীদের পথিকৃৎ হওয়ার স্বীকৃতি হিসেবে শারমিনকে এ পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে’।
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে ১৭ বছর বয়সী শারমিনের বয়স যখন ১৫ ছিল তখন তাকে তার চেয়ে অনেক বেশি বয়সের এক ব্যক্তিকে বিয়ে করার জন্য পরিবার থেকে প্রচণ্ড চাপ দেওয়া হয়েছিল। অথচ বাংলাদেশে জোরপূর্বক বিয়ে আইনগতভাবে নিষিদ্ধ। সেসময় শারমিন নিজেকে শক্ত রেখে নিজের পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।
মামলা করার জন্য এক সাংবাদিক শারমিনকে সহযোগিতা করেছিলেন। আর তখন শারমিন তার পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার অধিকার ফিরে পায়। নিজের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হওয়ার মধ্য দিয়ে শারমিন অন্য নারীদের জন্যও দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন। অন্য নারী ও তাদের পরিবার তাদের মেয়েদের ভবিষ্যত গড়তে তাদের জন্য অর্থব্যয়ে আগ্রহী হবেন।’
ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পও শারমিনের সাহসিকতার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক নারীর বিজয়ের দিকে আলোকপাত করা আমাদের দায়িত্ব। যখন নারীদের অধিকার খর্ব হয় তখন গোটা বিশ্বের উন্নয়নই বাধাগ্রস্ত হয়। নেতা হিসেবে নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে আমাদের অবশ্যই কাজ করে যেতে হবে এবং জন্মপরিচয়, শ্রেণি, জাতিসত্ত্বা নির্বিশেষে সব ধরনের মানুষকে শ্রদ্ধা করতে হবে। সবসময় মনে রাখতে হবে যে আমরা একটি বর্ণেরই মানুষ। আর তাহলো মানুষের বর্ণ। আমরা প্রত্যেকেই অনন্যভাবে আলাদা।’
অসাধারণ সাহস ও নেতৃত্ব এবং সমাজের প্রতিকূলতাকে বদলে দেওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালনের জন্য ২০০৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নারীকে উইমেন অব কারেজ সম্মানে ভূষিত করে আসছে। ওই বছর থেকে এ পর্যন্ত ৬০টি দেশের ১০০’রও বেশি নারীকে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছে।
যেসব নারী ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, লৈঙ্গিক সমতা প্রতিষ্ঠার পক্ষে সোচ্চার থাকেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেন, সহিংস উগ্রপন্থাকে প্রতিরোধ করেন এবং আইনের শাসন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার থাকেন তাদেরকেই উইমেন অব কারেজ পুরস্কার দেওয়া হয়।