• মঙ্গলবার , ৭ মে ২০২৪

মার্কিন চাপের বরফ গলছে!


প্রকাশিত: ১২:০৯ এএম, ১৪ আগস্ট ২৩ , সোমবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩২ বার

শফিক রহমান  :  আমরা চীনের ঋণের ফাঁদে যাচ্ছি না-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন খোলামেলা বক্তব্যে বাংলাদেশে মার্কিন চাপের বরফ গলছে বলে ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাঁরা বলছেন, চীনের নানা আগ্রাসনে বেজায় নাখোশ মার্কিনিরা। বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে চীন নিয়ে সরকারের মনোভাব জানতে তারা নানামুখি তৎপরতা চালাচ্ছিল। সেক্ষেত্রে সরকারের খোদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সরাসরি ‘আমরা চীনের ঋণের ফাঁদে যাচ্ছি না’ বলায় মার্কিনিদের আশা পূর্ণ হওয়ারই কথা। আর সেক্ষেত্রেই মার্কিন চাপের বরফ গলা শুরু এমন অবস্থা প্রতিয়মান হচ্ছে।

এমন যখন অবস্থা তখন রবিবার বাংলাদেশ চায়নার দিকে ঝুঁকে যাচ্ছে কি না- তা সরসারি জানতে চেয়েছিলেন মার্কিন কংগ্রেসম্যান এড কেইস ও রিচার্ড ম্যাকরমিক।এর জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আমরা চীনের ঋণের ফাঁদে যাচ্ছি না। রোববার (১৩ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকায় সফররত মার্কিন দুই কংগ্রেসম্যান। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন মন্ত্রী।

পরে সাংবাদিকরা জানতে চান-ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ইন্দো-প্যাসিফিক সমস্যা নিয়ে কী আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় চীনের প্রসঙ্গ এসেছে কি না? জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওদের কাছে বিভিন্ন লোকজন বলেছে, বাংলাদেশ একটা ভংয়কর জায়গা। এরা চায়নার খপ্পরে পড়ে গেছে। চায়নার গোলাম হয়ে গেছে। মন্ত্রী বলেন, আর বলেছে এখানে (বাংলাদেশ) একটা ভয়ংকর জায়গা, এখানে অশান্তি! পুলিশ সব মানুষকে ধরে মেরে ফেলছে। যখন-তখন রাস্তা-ঘাটে লোক মরছে। এ ধরনের একটা ধারণা হয়ে গেছে। ওই ভয় আরকি।

ড. মোমেন আরও বলেন, চীন নিয়ে ওরা (কংগ্রেসমস্যানরা) বলেছে, তোমরা চীনের ভেতরে চলে যাচ্ছ। আমরা বলেছি, চীনের ঋণের ফাঁদে যাচ্ছি না। আমরা চীন থেকে ঋণ নিয়েছি, সেটা এক পার্সেন্টের মতো। এটা কোনো বড় ইস্যু না। বলেছি, মনস্তাত্ত্বিকভাবে আমরা অবাধ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে আলোচনার বিষয়ে মোমেন বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে যে আউটলুক তৈরি করেছি, সেটা বলেছি। আমরা চাই, ফ্রি, ফেয়ার, ইনক্লুসিভ ও সিকিউর ইন্দো-প্যাসিফিক। ফ্রি নেভিগেশন চাই। সবাই সমৃদ্ধ হবে, এমন ইন্দো-প্যাসিফিক আমরা চাই। আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মধ্য থেকে গত বছর ৬২ জন রোহিঙ্গাকে পুনর্বাসন করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে নতুন করে আর কোনো রোহিঙ্গা শরণার্থীকে নেওয়ার বিষয়ে দেশটির আগ্রহ নেই বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের সঙ্গে হওয়া বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে বলে জানান মোমেন। তিনি বলেন, তারা বলেছে, রোহিঙ্গাদের কাজ-কর্ম নেই। তোমরা এদের (রোহিঙ্গাদের) তোমাদের দেশে কাজ-কর্ম দিয়ে দাও। ট্রেনিং দাও। আমি বললাম, দুনিয়াতে আমরা সবচেয়ে বেশি ঘনবসতির দেশ। আমাদের লোকেদের কর্মসংস্থানের জন্য দেশের বাইরে পাঠাতে হচ্ছে। ওরা (রোহিঙ্গারা) দেশে ফেরত যাক। আমাদের অগ্রাধিকার প্রত্যাবাসন।পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তোমরা (যুক্তরাষ্ট্র) বলেছ, রোহিঙ্গাদের কিছু লোক নিয়ে যাবা, ৬২ জন নিয়েছ। তোমরা চিন্তা করতে পার আরও লোক নেওয়ার। ওরা (কংগ্রেসম্যানরা) বলেছে, তারা (যুক্তরাষ্ট্র) এটা নিয়ে আগ্রহী নয়।উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ থেকে ৬২ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে পুনর্বাসন করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।