মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আবুল হোসেনকে পুনরায় মন্ত্রিত্ব ফিরিয়ে আনুন:এরশাদ
এস রহমান : জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আজ বুধবার এক বিবৃতিতে আবুল হোসেনকে পুনরায় মন্ত্রিত্ব ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। এরশাদ বলেন, বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলার পর যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন সৈয়দ আবুল হোসেন।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ নাকচ হওয়ায় এ কারণে মন্ত্রিত্ব হারানো সৈয়দ আবুল হোসেনকে ফের মন্ত্রিসভায় আনা জরুরী হয়ে পড়েছে। কারণ তিনি নির্দোষ। একজন দক্ষ মন্ত্রী হিসেবে তাঁর ক্যারিয়ার নষ্ঠ হয়েছে। তাছাড়া বিশ্ব ব্যাংকের আনা দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের ওই অভিযোগ কানাডার আদালতে খারিজ হওয়ায় এখন আবুল হোসেনের মর্যাদা ফিরিয়ে দেয়া উচিত।
এরশাদ আরো বলেন, বিশ্ব ব্যাংক কর্তৃক পদ্মা সেতুর এ অভিযোগ ঘিরে সর্বোচ্চ সমালোচনা ও বিতর্কের মুখে পড়তে হয়েছে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে। তাঁকে রাজনীতি ও মন্ত্রিত্ব থেকে সরে যেতে হয়েছে। তাঁর সেই হারানো মর্যাদা ফিরিয়ে আনতেই আবুল হোসেনকে পুনরায় মন্ত্রীত্বে ফিরিয়ে আসা জরুরী।
কানাডার পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসএনসি লাভালিনের কর্মীরা ঘুষের বিনিময়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ পেতে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে রফা করেছিলেন অভিযোগ তুলে অর্থায়ন স্থগিত করেছিল বিশ্ব ব্যাংক। তাদের শর্ত অনুযায়ী তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন ব্যবসায়ী সৈয়দ আবুল হোসেন। তাকে তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হলেও পরে আর মন্ত্রিসভায় থাকা হয়নি সাঁকো ইন্টারন্যাশনালের মালিক সৈয়দ আবুল হোসেনের।
দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের ওই অভিযোগ নিয়ে দীর্ঘ টানাপড়েন শেষে বিশ্ব ব্যাংককে বাদ দিয়েই পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ শুরু করে বাংলাদেশ সরকার। ওই অভিযোগ নাকচ করে কানাডার আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা ‘গালগল্প’ ছাড়া কিছু নয়।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জাতিরকন্ঠকে বলেন, বিশ্ব ব্যাংকের শর্ত অনুযায়ী দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বাংলাদেশে মামলা দায়েরের পর গ্রেপ্তার করা হয় সচিব মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়াসহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে। দুদকের তদন্তে ওই অভিযোগের প্রমাণ না মেলায় সরকারি কর্মকর্তারা মামলা থেকে অব্যাহতি পান। এখন শিল্প মন্ত্রণালয়ে জ্যেষ্ঠ সচিবের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন মোশাররফ।
এ কারণে আবুল হোসেনকেও মন্ত্রিসভায় আনার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন এরশাদ। এরশাদ বলেন, যেহেতু ভুল তথ্য ও মিথ্যা অপরাধে সৈয়দ আবুল হোসেনকে মন্ত্রিত্ব হারাতে হয়েছে, তার ব্যক্তিগত ইমেজ ক্ষুণ্ন হয়েছে, সেহেতু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবুল হোসেনের মন্ত্রিত্ব পুনর্বিবেচনায় নিয়ে তাকে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করবেন বলে আমার বিশ্বাস। একই ঘটনায় সরকারের তৎকালীন সচিবকে ইতোমধ্যে চাকুরিতে পুনর্বহাল করা হয়েছে।
একই সঙ্গে এরশাদ পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে ‘উদ্দেশ্যমূলক’ প্রতিবেদন প্রকাশকারী পত্রিকাগুলোর ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে মনে করেন। তিনি বলেন, যাদের মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্রে পদ্মা সেতু বিতর্কিত হয়েছে, যেসব পত্রিকা উদ্দেশ্যমূলকভাবে তৎকালীন মন্ত্রী, সরকারি কর্মকর্তা ও সরকারকে হেয় প্রতিপন্নের চেষ্টা করেছে, যাদের কারণে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত।