• সোমবার , ৬ মে ২০২৪

বৃষ্ঠিতে ঢাকা অচল-ভোগান্তি’র নেপথ্যে-


প্রকাশিত: ৮:৫৬ পিএম, ১ অক্টোবর ১৯ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৫২ বার

 

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীতে মঙ্গলবার এক ঘণ্টার কিছু বেশি সময় ধরে ঝুম বৃষ্টিতে পুরো নগরীর প্রধান প্রধান রাস্তা পানিতে তলিয়ে অচল হয়ে পড়ে নগরবাসির জীবনযাত্রা। নগরীর প্রধান সড়কসহ অলিগলিতে হাঁটুপানি জমে যানজটের সৃষ্টি হয়। চরম ভোগান্তিতে পড়েন ঢাকাবাসী।সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রধান সড়কগুলোর দুই পাশে কিছুদিন আগে যেসব ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছিল সেগুলোতে পানি ভরে তা রাস্তায় উপছে পড়ছে। এই ড্রেনগুলো নিয়ে কাজে অবহেলার অভিযোগ থাকলেও সিটি কর্পোরেশনগুলোর কর্মকর্তারা তা যথাযথ মূল্যায়ন করেনি। ফলে যেনতেন ভাবে কাজ সেরে বিল উঠিয়ে নেয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন ঢাকাবাসী।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) দুপুর ১২.৩০ মিনিটের পর আকাশ মেঘে ঢেকে গিয়ে শুরু হয় প্রবল বৃষ্টি। সেই বৃষ্টি ঝরে টানা এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে। বৃষ্টি শেষে বিকালে ঘুরে দেখা গেছে, পুরো নগরীতে থৈ থৈ পানি। পা ফেলার মতো কোনো শুকনো স্থান অবশিষ্ট নেই। সামান্য এ বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় নগরবাসী চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তাদের মতে, সামান্য এ বৃষ্টিতেই এমন জলাবদ্ধতা হলে টানা দুই-তিন দিন বৃষ্টি হলে হয়তো নগরীতে বসবাস করা যাবে না। তবে নগরবাসী এর জন্য ঢাকা সিটি করপোরেশন ও এর সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠাগুলোকেই দায়ী করেছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, এক ঘণ্টার এ বৃষ্টিতে হাইকোর্টের সামনের সড়ক, তোপখানা সড়ক, শান্তিনগর, কাকরাইল, মতিঝিলসহ অধিকাংশ সড়কে হাঁটুর ওপরে পানি।

এদিকে ঝুম বৃষ্ঠিতে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে ভায়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এতে করে মন্ত্রী-সচিব-সরকারি কর্মকর্তা এবং দর্শনার্থীরা আটকা পড়েন। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের পানি সেচের কাজ করতে দেখা গেছে। এ সময় মন্ত্রী-সচিবসহ সরকারি কর্মকর্তারা পূর্বনির্ধারিত কাজে সচিবালয়ের বাইরে যেতে পারেননি। তারা লিফট থেকে নিচে নেমে এসেও তাদের গাড়িতে উঠতে পারেননি।ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) জানায়, ওয়াসা বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের নালা সংস্কার করতে গিয়ে পুরান ঢাকার কিছু এলাকা, গোপীবাগ, মালিবাগ, বেগুনবাড়ী, মগবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে ডিএসসিসির নিষ্কাশন নর্দমাগুলো ভেঙ্গে ফেলেছে। এতে অনেক নর্দমা ভরাট হয়ে বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এ বিষয়ে ওয়াসাকে পদক্ষেপ নিতে হবে।

এদিকে, গতকালের এক ঘণ্টার বৃষ্টির পানি সরেনি ৫ ঘণ্টায়ও। এতে পানিতে বিভিন্ন সড়ক ডুবে যাওয়ায় থেমে থেমে চলে বিভিন্ন যানবাহন। নগরীর জিরো পয়েন্ট, পল্টন, বিজয়নগর এবং অন্যদিকে হাইকোর্ট এলাকা হয়ে শাহবাগের দিকে তীব্র যানজট তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে, পানিতে রাস্তা ডুবে যাওয়ায় কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে নটরডেম কলেজ পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে বেশ কিছু সিএনজি চালিত অটোরিকশা, মটরসাইকেল ও গাড়ি আটকা পড়ে।

মতিঝিল থেকে রিকশা করে সেগুনবাগিচায় আসা জামিউল জানান, এত অল্প সময়ের বৃষ্টিতে মনে হয় পুরো নগরীই ডুবে গেছে। সড়কের অধিকাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।বৃষ্টির পর শাহবাগ এলাকায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়, যা ছড়িয়ে পড়ে কারওয়ানবাজার হয়ে ফার্মগেইটের রাস্তায়। শুধু প্রধান সড়কগুলোই নয়, ফকিরাপুল, আরামবাগ, কালভার্ট রোড এলাকার অলিগলি এবং বিভিন্ন দোকানপাট ও বাসা-বাড়িতেও পানি উঠেছে।একইভাবে শান্তিনগর বাজারের সামনের সড়কও পানিতে তলিয়ে গেছে। মগবাজার, রেডক্রিসেন্ট ও পেয়ারাবাগ এলাকার গলিতেও পানি জমে বাসা-বাড়িতে ঢুকেছে। জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে নিউ মার্কেট ও এলিফ্যান্ট রোড এলাকাতেও। এভাবে সামান্য এ বৃষ্টিতে তীব্র জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় নগরবাসীকে।