• রোববার , ১৯ মে ২০২৪

বিএনপি মেজরের নাশকতার ছক ভন্ডুল


প্রকাশিত: ৪:২৩ পিএম, ২৬ জুন ১৮ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৬৬ বার

বিশেষ প্রতিনিধি :  গাজীপুরে বিএনপি নেতা মেজর মিজানের নাশকতার ছক ভন্ডুল করে দিয়েছে গোয়েন্দারা।এ ঘটনায় গত gcc-nbp nasokota-www.jatirkhantha.com.bdরাতেই তাকে পাকরাও বিএনপি গোপন ফন্দি ধূলিস্যাত করে দিয়েছে গোয়েন্দারা।গুলশান থানা পুলিশ জাতিরকন্ঠকে জানায়, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) মিজানুর রহমান মিজানকে তার গুলশানের বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি গাজীপুর নির্বাচনে নাশকতার ষড়যন্ত্র করেছিলেন। এ সংক্রান্ত দুটি অডিও ক্লিপ জব্দ করা হয়েছে।

সোমবার (২৫ জুন) দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে গুলশান ১ নম্বরের  ৮ নম্বর সড়কের ১০  নম্বর বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে রাত ১টা থেকে তার বাসা সাদা পোশাকে ও ইউনিফর্ম পোশাকে থাকা পুলিশ ঘিরে রাখে। বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক জাতিরকন্ঠকে বলেন, ‘থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেনি। ডিবি পুলিশের একটি অভিযান ছিল। তারা গ্রেফতার করতে পারে।’ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তর বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান বলেন, ‘মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় একাধিক মামলা হয়েছে।’

গাজীপুরে নির্বাচনকেন্দ্রিক নাশকতার ষড়যন্ত্রে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে আইসিটি অ্যাক্টে মামলা হচ্ছে।’রাতে যখন ডিবি পুলিশের  সদস্যরা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মিজানকে আটক করতে তার বাসায় যান, তখন বিএনপি’র এই নেতাকে ফেসবুকে লাইভে দেখা গেছে।

মিজানের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে এ বিষয়ে  তার পরিবারের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কন্সপেরেসি লিক নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে মেজর (অব.) মিজানের কথপোকথনের একটি অডিও প্রকাশ করা হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রে ওই অডিও ক্লিপটি যে মেজর অব. মিজানের তা নিশ্চিত হওয়া গেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ফোনের অন্য প্রাপ্তে যে ব্যক্তি ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তার নাম সাইফুল ইসলাম। তিনি  আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের যুবদলের স্থানীয় নেতা।

এবার শুনন সেই অডিও-

– স্লামালাইকুম।

মেজর অব.  মিজানুর রহমান: ওয়ালাইকুম সালাম। কেমন আছো?

– আছি মোটামুটি।

মেজর মিজান:  আচ্ছা,  তোমাদের এখান থেকে যে কাশিমপুর ইউনিয়নের যে ভোটকেন্দ্র, কতটুক দূর?

–  মানে আমাদের পাশেরডা  হইলো এক নম্বর ওয়ার্ড।

মেজর মিজান:  হ্যাঁ, এটা তোমাদের এখান থেকে কতটুকু দূর, ভোটকেন্দ্রটা?

–  এই ১৮ কিলো হইবো। এক নম্বর ওয়ার্ডে কেন্দ্র হইলো তিনটা।

মেজর মিজান:  আচ্ছা, ওখানে তোমাদের ক্লোজ বন্ধু-বান্ধব আছে?

–  হ্যাঁ।

মেজর মিজান:  আচ্ছা, এখানে আমাকে একটা ছেলে, পারলে দু্টই ছেলে দাও। যারা আওয়ামী লীগের ব্যাচ লাগিয়ে ঘুরতে পারবে। এরকম কিছু ছেলে ম্যানেজ করতে পারবা?

– হ্যাঁ, এরকম আছে।

মেজর মিজান:  আছে?  প্রয়োজনে আওয়ামী লীগের লোক নাও, যারা মনে মনে বিএনপি। আছে এমন?

–  জি আছে।

মেজর মিজান:  তিনটা ছেলে সিলেক্ট করো। তিনটা ছেলে সিলেক্ট করো, হ্যাঁ? ওরা নৌকার ব্যানার নিয়ে ঘুরবে । ওদের আমি বলে দেবো। ওদের টাকা-পয়সা দিয়ে দেবোনে। আমি ইলেকশনের দিন যন্ত্রপাতি দিয়ে দেবোনে। তুমি ছেলে তিনটা আগে সিলেক্ট করো। তিন সেন্টারের জন্য তিনজন। ওকে?

-ওকে?

মেজর মিজান:  ওকে। শোনও, শোনও শোনও শোনও। যে পোলিং সেন্টারটা, মানে যেকোনও তিনটা পোলিং সেন্টারের যেকোনও একটা সেন্টারের পাশে আমাদের লোকের বাড়ি থাকতে হবে। যে বাড়ির জানালার পাশে বসে… দোতলা কিংবা তিনতলা বাড়ি থাকলে ভালো হয়।

– আমি রেডি করবোনে ।

মেজর মিজান:  হ হ রেডি করো, আর তিনটা ছেলেকে রাখবা, অন্য কাজে। ওই তিনটা ছেলে আওয়ামী লীগের ব্যাচ লাগিয়ে ঘুরবে।

– আচ্ছা, ঠিক আছে।

মেজর মিজান:  আচ্ছা, ঠিক আছে।

অডিও- দুই

–  স্লামালাইকুম।

মেজর (অব.) মিজানুর রহমান মিজান: ওয়ালাইকুম সালাম। আচ্ছা, তোমার খবরের বার্তা কী? কদ্দুর কী করতে পারতেছো?

– ওই লোক ঠিক করছি। বাসাডা ঠিক করতে পারি নাই এখনও।

মেজর মিজান: একটা বাসা ঠিক করো। ২/৪/৫ হাজার যদি দিতেও হয়, দিয়ে দাও।

–   মানে একটা বাসা ঠিক করে দেবো?

মেজর মিজান: মানে সেন্টারের পাশে। কথাটা বুঝছো?

–   হ্যাঁ।

মেজর মিজান: এই লোকগুলিকে তোমাকে আনতে হবে…এই… তুমি রেডি থাকো।  কয়জন লোক দিবা? একজন নাকি দুইজন?

–   চারজন দেওয়া যাবে, চার কেন্দ্রে চারজন। এক নম্বর ওয়ার্ডে  চার-পাঁচ জন দেওয়া যাবে।

মেজর মিজান: আচ্ছা, তোমার কথাটাই থাক। চার কেন্দ্রে চারজন। সাহসী ছেলে রেডি রাইখো। সাহসী যেন হয়। হাত- পা যেন না কাঁপে।

-এটা কোনও সমস্যা না।

মেজর মিজান: হ্যাঁ। এগুলারে একটা গাড়ি নিয়া ঢাকায় চলে আসবা। ওদের আমি শিখাইয়া, ট্রেনিং দিয়ে ছেড়ে দিবো। বুঝতে পারছো?

–   হ্যাঁ।

মেজর মিজান: নাকি বুঝো নাই?

– না বুঝছি।

মেজর মিজান: ওদের নিয়া ওইখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে আসবা। ওদের আলাদা টাকা দিয়ে দিবো। কোনও সমস্যা নাই।

-হ্যাঁ।
মেজর মিজান: ওদের শিখাইয়া দিতে হবে। একবার শিখাইয়া ওদের একবার- দুইবার ট্রেনিং দিতে হবে। বুঝতে পারছো?

– আচ্ছা।

মেজর মিজান: তুমি চারটা লোক রেডি করো। খাবার দাবার খাও। আমি আমার জিনিসপত্র রেডি করি। তুমি নিয়া আসবা। আমি বলবোনে কোথায় আসবা। গুলশানে, উত্তরায়, যেকোনও জায়গায়, বুঝ নাই?

–   হ্যাঁ ।

মেজর মিজান: তুমি ওদের নাম্বার-টাম্বার নিয়া রেডি করো। হাত খরচ দিয়া দিবনে। একবার-দুইবার ট্রেনিং দিয়া দিলে ঠিক হয়ে যাবে।

– ওকে।

মেজর মিজান: ওকে।